শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
উদ্যোক্তা

নওগাঁর টুপির কদর মধ্যপ্রাচ্যে

সুঁই-সুতা দিয়ে তৈরি চমৎকার এসব টুপি ব্যয়বহুল হওয়ায় এবং দেশে কোনো পাইকার ও ক্রেতা না থাকায় এগুলো যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নওগাঁর টুপির কদর মধ্যপ্রাচ্যে

নওগাঁর নারীদের হাতে তৈরি বিশেষ টুপি যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে। সুঁই-সুতা দিয়ে তৈরি চমৎকার এসব টুপি ব্যয়বহুল হওয়ায় এবং দেশে কোনো পাইকার ও ক্রেতা না থাকায় এগুলো যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। বিশেষ করে ওমান, দুবাইসহ নানা দেশের জাতীয় টুপি এটি। সারা বছর এই টুপি তৈরি হলেও রমজানের ঈদকে সামনে রেখে ও করোনা ভাইরাসের ধকল কাটিয়ে আবারও ব্যস্ততা বেড়েছে টুপি তৈরির পল্লীগুলোতে। শুধু গৃহিণীরাই নয়; বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থীরাও অবসর সময়ে এই টুপি তৈরি করে বাড়তি অর্থ আয় করছে। সংসারের কাজের ফাঁকে এই টুপি তৈরি করে বাড়তি আয় করছেন মহিলারা।

জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে মহাদেবপুরের সুলতানপুর, শিবগঞ্জ, তাঁতারপুর, মধুবন, উত্তরগ্রাম, কুঞ্জবনসহ উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রামে এই টুপি তৈরি করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে এই টুপিগুলো তৈরি করে নেয়। একথান কাপড় থেকে প্রকারভেদে ৯০/১০০টি টুপি তৈরি হয়। একথান কাপড় থেকে মাপ মতো টুপি তৈরি করতে এক থেকে দুই দিন সময় লাগে। প্রতি কারিগর দিনে তিন-চারটি টুপি তৈরি করতে পারেন। প্রতিটি টুপি তৈরি করলে ৭০-৮০ টাকা মজুরি হিসেবে পান কারিগররা। সংসারের কাজের পাশাপাশি মহিলারা এই টুপি তৈরি করে ঈদে বাড়তি টাকা আয় করেন। আর সেই আয় দিয়ে অভাবের সংসারের অনেক চাহিদাই পূরণ হয়। গত দুই বছর করোনা ভাইরাসের কারণে এই টুপি তৈরির কাজ বন্ধ থাকলেও চলতি বছর আবার টুপি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কারিগররা। শুধু গৃহিণীরাই নয়; বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থীরাও অবসরে এই টুপি তৈরি করে বাড়তি অর্থ আয় করছে।

স্থানীয় টুপি ব্যবসায়ী মাজহারুল ইসলাম বলেন, শৈল্পিক আর উন্নত হওয়ায় টুপিগুলো নিয়ে যাওয়া হয় দেশের বাইরে মুসলিম দেশগুলোতে। মহাদেবপুরের চান্দাশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুন নবী বলেন, সরাসরি যদি সরকার এজেন্টের মাধ্যমে এই টুপিগুলো তৈরি করে বিদেশে চালান করত তাহলে কারিগররা আরও বেশি মজুরি পেত এবং এটি কুটিরশিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতো। মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, এই টুপি তৈরির সঙ্গে জড়িত কারিগরদের সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে এসব কারিগরদের বিশেষভাবে সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার নারী এই টুপি তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই শিল্পকে কুটিরশিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সর্বশেষ খবর