শনিবার, ৭ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
কৃষি

অসময়ে মিলছে নওগাঁর আম

বাবুল আখতার রানা

অসময়ে মিলছে নওগাঁর আম

সারা বছরই মিলছে আম, জ্যৈষ্ঠের ফল উৎসবে আম পাড়তে অপেক্ষা করতে হয় না আম চাষিদের। মৌসুমি ফল আগাম জাতের আম বাজারে আসতে এখনো এক মাস বাকি। এদিকে চলছে ঈদ-পরবর্তী তীব্র গরমের মৌসুম। যে গরম চলছে তাতে এসব ফল তৃপ্তি, তৃষ্ণা ও খাদ্যগুণ সবকটিই মেটাতে সক্ষম।

বিশেষ করে এই বৈশাখে পাকা আম পাওয়া যাচ্ছে। আমের রাজধানী-খ্যাত নওগাঁ। তবে দাম বেশ চড়া। প্রতি কেজি চড়া দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা।

আম চাষিরা জানান, মূলত মে থেকে সেপ্টেম্বর মোট পাঁচ মাস আমের মৌসুম থাকে। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জুনের মাঝামাঝি সময়ে পাকে আগাম জাতের আম। কাটিমন আম বারোমাসি হওয়ায় দাম ভালো পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে এই আম চাষ করে লাভবান হচ্ছে অনেকে। সাপাহার উপজেলার গোয়ালা ইউনিয়নের কোচকুড়লিয়া এলাকায় বকুল পাঁচ বিঘা ও একই ইউনিয়নের সারোকডাঙ্গা এলাকার হাফিজুরের ১৫ বিঘা জমিতে বারোমাসি আমবাগান রয়েছে। বরোমাসি আমের বাগান থেকে কাটিমন আম পেড়ে কার্টনে ভরে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠাচ্ছেন।

হাফিজুর ও বকুল বলেন, গত চার-পাঁচ বছর ধরে বারোমাসি আম চাষের সঙ্গে জড়িত। এর আগে ভালো লাভবান না হলেও এবার আমের দাম ভালো হওয়ায় আমরা গত তিন মাসে প্রায় ২০ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছি। আশা করছি, সামনের ছয় থেকে আট মাসে আরও প্রায় ৩০ লাখ টাকার আম বিক্রি করব। তারা আরও বলেন, ‘এখনো আমাদের বাগানে পাকা আম আছে। এই আমের সব কাস্টমার অনলাইনে অর্ডারের মাধ্যমে কুরিয়ারে পাঠানো হচ্ছে। গাছ থেকে নামানো আম ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আমাদের বাগানে এখন কাটিমন, বারি-১১, দুই ধরনের সুস্বাদু আম আছে।’

বকুলের বাগানের শ্রমিক তুহিন বলেন, ‘এ বাগানে সারা বছরই সুস্বাদু আম পাওয়া যায়। সেগুলো কার্টনে ভরে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুরিয়ার যোগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী রেদুয়ান মুন বলেন, এ গ্রামেই আমার বাড়ি। রোজার প্রথম দিকে জানতে পারি বকুল ভাইয়ের বাগানে সুস্বাদু আম পাওয়া যাচ্ছে। তাই খাওয়ার জন্য দুই কেজি পাকা আম কিনতে এসেছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ বলেন, কাটিমন মৌসুমি আম না হওয়ায় চাহিদা বেশি। তার ওপর স্বাদ ভালো। এক সময় আমের চাষ শুধু দেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের কয়েকটি জেলায় সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু আম রুপালি ও কাটিমন দুটি জাতের প্রবর্তনের ফলে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে সাপাহারের নাম। তিনি আরও বলেন, কাটিমন আম আমাদের দেশের আবহাওয়ায় উপযোগী। আম রুপালির মতো ছোট গাছে আম হয়। এই জাতে প্রচুর আম ধরে। একই গাছে একসঙ্গে মুকুল, ছোট, মাঝারি, বড়, পাকা আম থাকে। এই গাছে নতুন কুশি ছাড়লেই মুকুল আসে। এর কোনো সিজন আর অফ সিজন নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর