শিরোনাম
শনিবার, ২১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

পুকুরে মুক্তা চাষে সাফল্য

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

পুকুরে মুক্তা চাষে সাফল্য

মৎস্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার পাঁচুপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা জগদাস গ্রাম। সেই গ্রামের তরুণ উদ্যমী যুবক কবির হোসেন পুকুরে ঝিনুকে মুক্তা চাষ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন। পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি মুক্তা চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন পুরো এলাকাজুড়ে। এই  উদ্যোক্তাকে এলাকাবাসী প্রথমে পাগল হিসেবে আখ্যায়িত করলেও পরে তার এই সাফল্য দেখে ঝিনুকে মুক্তা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক বেকার যুবক। মুক্তা চাষে ঝুঁকি কম ও লাভজনক। মুক্তা চাষে আগ্রহী উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন মৎস্য কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, পুকুরের পানিতে তিন ফুট পর পর ভাসছে ফাঁকা প্লাস্টিকের বোতল। সেখানে পানির এক ফুট নিচে রয়েছে একটি করে প্লাস্টিকের ডালা। সেসব ডালার প্রতিটিতে রয়েছে ২০টি করে জীবন্ত ঝিনুক। এভাবে তিনি ওই পুকুরে প্রায় ৮ হাজার ঝিনুক বিশেষ প্রক্রিয়ায় চাষ করছেন। ওই ঝিনুকের মধ্যে প্রতিটিতে কমপক্ষে দুটি করে বিভিন্ন ডিজাইনের নিউক্লিয়াস প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে এসব ঝিনুক থেকেই উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের মুক্তা।

কবির হোসেন জানান, তরুণ উদ্যমী যুবক কবির হোসেন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তিনি কাজ হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন। বাড়িতে বসে অলস দিনযাপন করছিলেন। এ সময় ইউটিউবে ঝিনুকে মুক্তা চাষের একটা সাফল্যময় গল্প দেখে তিনি উৎসাহিত হন। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে জগদাস গ্রামেই একটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষের পাশাপাশি ঝিনুকে মুক্তা চাষের প্রকল্প হাতে নেন।

তিনি আরও জানান, তার চাষকৃত ৮ হাজার ঝিনুকের মধ্যে বিভিন্ন ডিজাইনের প্রায় ১৫ হাজার নিউক্লিয়াস প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। প্রায় এক বছরে এসব ঝিনুক থেকে পাওয়া যাবে কমপক্ষে ১৫ হাজার মুক্তা। পুকুর লিজ, ঝিনুক সংগ্রহ, পরিচর্যা, নিউক্লিয়াস ক্রয় ও সংস্থাপন ইত্যাদি বাবদ মোট খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এই এক বছরে ওই ঝিনুক থেকে উৎপাদিত মুক্তা ২২ থেকে ২৫ লাখ টাকায় বিক্রির প্রত্যাশা তার। ইতোমধ্যে ঝিনুক সংগ্রহের সময় হয়ে গেছে। এসব মুক্তার বাজার রয়েছে ভারতের কলকাতায় এবং বাংলাদেশে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে। এদিকে কবিরের সাফল্য দেখে তার সঙ্গে মুক্তা চাষে যোগ দেন আশপাশের গ্রামের আরও ২০ বেকার যুবক।  ইতোমধ্যেই গ্রামটি এখন মুক্তা চাষির গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

সর্বশেষ খবর