শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

পরিবারে সচ্ছলতা আনলেন নারী কসাই লক্ষ্মী রানী

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

পরিবারে সচ্ছলতা আনলেন নারী কসাই লক্ষ্মী রানী

নারীরা আগের চেয়ে অনেক এগিয়ে। এমন কোনো পেশা নেই যেখানে নারীর পদচারণা নেই। সংসারের সচ্ছলতা আনতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অনেক কঠিন পেশা বেছে নিচ্ছেন। আর নিজের ইচ্ছায় মাংস বিক্রির পেশা বেছে নিলেন দিনাজপুরের লক্ষ্মী রানী শর্মা। পিছিয়ে পড়া নারীদের কাছে তিনি এখন মডেল। কাজ করে খাওয়াতে কোনো কাজই ছোট নয় বলে মনে করেন তিনি।

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার শহরগ্রাম ইউনিয়নের ফুলবাড়ী বাজারে লক্ষ্মী রানী শর্মার মাংসের দোকান। প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০টি খাসির মাংস বিক্রি করেন বলে জানান লক্ষ্মী রানী শর্মা। স্থানীয় লোকজন ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকেও সনাতন ধর্মের মানুষেরা মাংস কিনতে আসেন তাঁর দোকানে। চাহিদা এতই বেশি যে, অনুষ্ঠানের জন্য মাংস কিনতে চাইলে অর্ডার করতে হয় কয়েক দিন আগে।

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ফুলবাড়ী বাজারের একটি দোকান ভাড়া নিয়ে প্রায় আট বছর ধরে খাসির মাংস বিক্রি করে আসছেন লক্ষ্মী রানী শর্মা। শুধু বিক্রি নয়; চামড়া ছাড়ানো, মাংস কাটাসহ কসাইয়ের সব কাজ নিজেই তত্ত্বাবধান করেন। এ কাজে সহায়তায় স্বামী উষা দেব শর্মা বিভিন্ন হাটে ঘুরে খাসি সংগ্রহ করেন। প্রতিদিন ভোর থেকে কাজ শুরু করেন তারা। পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে স্বামীর উৎসাহে এমন কঠিন কাজ অনায়াসে করে যাচ্ছেন লক্ষ্মী রানী। দুই সন্তান ও পরিবার নিয়ে বর্তমানে সুখেই আছেন তারা।

বোচাগঞ্জ থেকে মাংস কিনতে আসা সুবির চন্দ্র বলেন, দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্মী রানীর দোকান থেকে মাংস কিনি। এখানে সঠিক ওজন এবং পানি ছাড়া মাংস পাওয়া যায়। যেভাবে চাই সেভাবেই তিনি মাংস দেন। এ জন্য আমি ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে সনাতন ধর্মের মানুষজন সকাল থেকেই মাংস কিনতে তার দোকানে ভিড় করেন। লক্ষ্মীর মাংসের দোকানের কর্মচারী প্রাণনাথ বলেন, আমরা দুজন কর্মচারী আছি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লক্ষ্মী রানীর সঙ্গে কাজ করি। বিভিন্ন উপজেলার লোক এসে এখানে মাংস কেনে। প্রতি সপ্তাহের শুক্র, সোম ও বুধবার প্রচুর ভিড় হয়। লক্ষ্মী রানীর সঙ্গে থেকে আমাদের সংসারও ভালো চলে। স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্মী রানী একজন সাধারণ নারী। প্রতিদিন বাজারে খাসির মাংস বিক্রি করেন। তাঁকে বহু দিন ধরে এ কাজে দেখছি।

সর্বশেষ খবর