শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

সুস্বাদু আপেল চাষে সাফল্য

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

সুস্বাদু আপেল চাষে সাফল্য

দিনাজপুরে শীতপ্রধান দেশের বিদেশি আপেল চাষে সফলতা পেয়েছেন বৃক্ষ গবেষক কৃষিবিদ ইমরুল আহসান। এখন তার গাছে গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে থোকা থোকা সুস্বাদু আপেল ঝুলছে। আপেলের খবর শুনে অনেকে ছুটে আসছেন বাগান পরিদর্শনে। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে এ আপেল পরিপক্ব হলেও ছোট অবস্থায় অনেকে এর স্বাদও নিচ্ছেন। আমদানিনির্ভরতা কমাতে এ অঞ্চলে বেশি বেশি আপেল চাষ করা গেলে একদিকে কৃষক যেমন লাভবান হবেন, তেমনি বিদেশি ফলের চাহিদাও মিটবে। আসবে বৈদেশিক মুদ্রাও। দীর্ঘ সময়ের পর আপেল চাষে সফলতা পেয়েছেন বীরগঞ্জের সুজালপুর ইউপির বর্ষা এলাকার মো. ইমরুল আহসান। তিনি দিনাজপুর হর্টিকালচারের সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা। বৃহত্তর দিনাজপুর এলাকায় সামার আপেল, গ্রিন আপেলের ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। দুই বছর বয়স থেকে এসব গাছে ফল আসা শুরু হয় বলে জানান তিনি। একটি পরিত্যক্ত জায়গা থেকে চাষ উপযোগী করে আপেলসহ বিভিন্ন ফলের চাষে এনেছেন সফলতা। গবেষণা, যত্ন ও তদারকিতে ভালো ফলনে তার সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে বেকার যুবকসহ অনেকে এই ফলের বাগান পরিদর্শন করছেন। নিজের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে শতাধিক জাতের দেশি-বিদেশি ফল গাছের ওপর গবেষণা চালাচ্ছেন তিনি। বিষমুক্ত ফল নিজে খাব এরপর বাণিজ্যিকভাবে এসব ফল কিংবা চারা বিক্রি করব এ প্রত্যয় নিয়ে এখানে কয়েক শ ফলের বাগান গড়েছেন। তার বাগানে সামার রাম্বু, কাশ্মীরি গ্রিন আপেল, অস্ট্রেলিয়ান গ্রিন আপেল, আন্না, ডরসেট, হরিমন ৯৯, গর্ডন, গালা, গ্লেন স্মিথ জাতের আপেল রয়েছে। ১২টি জাতের ৩০টির মতো গাছ আছে। বয়স আড়াই থেকে তিন বছর। তিনি এ অঞ্চলের জন্য উপযোগী তিনটি আপেলের জাত নির্বাচন করেন। তার গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ১২টি আপেল গাছ থাকলেও গত বছর দুটি গাছে মাত্র ৫০টির মতো আপেল আসে। সেই আপেল সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন এবং শুরু করেন গবেষণা ও পরিচর্যা। অবশেষে এবার ৮-১০ ফুটের কয়েকটি গাছে হাজারের অধিক আপেলের ফলন এসেছে। এ ব্যাপারে কৃষিবিদ ইমরুল আহসান জানান, দিনাজপুর অঞ্চলের মাটি সবুজ আপেল আবাদের জন্য বেশি উপযোগী। তবে শীতপ্রধান দেশের ফল হওয়ায় বেশি যত্ন নিতে হয়। বিশেষ করে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় এটিকে নিবিড় পরিচর্যায় রাখতে হয়। আমদানিনির্ভরতা কমাতে আপেলের বাগান এ অঞ্চলে বেশি বেশি হওয়া প্রয়োজন। এতে একদিকে কৃষক যেমন লাভবান হবেন তেমনি বিদেশি ফলের চাহিদাও মিটবে। যদি কেউ আপেল বাগান করতে আগ্রহী হন, তাহলে সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেন এই কৃষিবিদ।

তার বাগানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের ফল, সবজি, চারা ও কলম বিক্রির জন্য গড়ে তুলেছেন গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র। এসব ফলের বাগানে আগামীতে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

 

সর্বশেষ খবর