নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলগ্রহে একসময় নানা ধাপে পরিবর্তিত পানির অস্তিত্ব ছিল। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, মঙ্গলের জেজেরো ক্রেটার (একটি বিশাল গর্তাকৃতি এলাকা) এক সময় গরম ও অম্লীয় (অ্যাসিডিক) পানি থেকে ধীরে ধীরে ঠান্ডা ও ভারসাম্যপূর্ণ পানির পরিবেশে রূপ নেয়। এ পরিবর্তনগুলো জীবনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছিল বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
নাসার পারসিভিয়ারেন্স রোভার দীর্ঘদিন ধরে জেজেরো ক্রেটার এলাকায় খনিজ পরীক্ষা চালাচ্ছে। ‘জার্নাল অব জিওফিজিক্যাল রিসার্চ: প্ল্যানেটস’-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, সেখানে অন্তত ২৪ ধরনের খনিজ পাওয়া গেছে। এটা মঙ্গলের পানির ইতিহাস ও রাসায়নিক পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা দেখায়।
গবেষণায় বলা হয়, প্রথম দিকে মঙ্গলের পানি ছিল অত্যন্ত গরম ও অম্লীয়— যা জীবনের জন্য অনুপযোগী। এই সময়ের পানিতে গ্রিনালাইট ও হিসিঞ্জারাইট নামের খনিজ তৈরি হয়েছিল, যা আগ্নেয় শিলার সঙ্গে বিক্রিয়ার ফল।
পরবর্তী পর্যায়ে গ্রহটির বায়ুমণ্ডল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পানি ঠান্ডা ও কম অম্লীয় হতে শুরু করে। তখন মিনেসোটাইট ও ক্লিনোপটিলোলাইট নামের খনিজ গঠিত হয়, যা তুলনামূলক ভারসাম্যপূর্ণ পানির পরিবেশের ইঙ্গিত দেয়।
সবশেষ ধাপে, জেজেরো ক্রেটারের পানি হয়ে ওঠে ঠান্ডা ও ক্ষারীয় (অ্যালকালাইন)— যা পৃথিবীর বসবাসযোগ্য পরিবেশের মতো। এই সময় গঠিত হয় সেপিওলাইট নামের খনিজ, যা সাধারণত পৃথিবীর জীবনের উপযোগী অঞ্চলে পাওয়া যায়।
গবেষকরা বলছেন, এই পরিবর্তনগুলো প্রমাণ করে মঙ্গল একসময় এমন পরিবেশের মধ্য দিয়ে গেছে, যেখানে জীবনের অস্তিত্ব থাকার মতো অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল