মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনা : দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে

র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, এমপি

শেখ হাসিনা : দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে

আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন। সহজ-সারল্যে ভরা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। পোশাকে-আশাকে, জীবনযাত্রায় কোথাও কোনো ধরনের বিলাসিতা বা কৃত্রিমতার ছাপ নেই। এ যেন পিতার মতোই বাংলার মাঠঘাট থেকে উঠে আসা বাংলার মেয়ে, অন্যভাবে বললে ’৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশে একক নেতা, যিনি সত্যিকার অর্থেই বাঙালির আমজনতার অতি আপনজন। তাঁর সংগ্রামমুখর জীবন বাংলাদেশেরও উত্থান-পতনের ধারাবাহিতার ইতিহাস। অথচ জননেত্রী শেখ হাসিনার এই কর্মময় জীবন কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না, ছিল কণ্টকাকীর্র্ণ। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস তিনি গৃহবন্দী থেকেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েকবার তাঁকে কারা নির্যাতন ভোগ ও গৃহবন্দী থাকতে হয়েছে। বারবার তাঁর জীবনের ঝুঁকি এসেছে। অন্তত ২০ বার তাঁকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তাঁর লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন অবিচল। মেধা-মনন, সততা, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য, দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে গড়ে উঠেছে তাঁর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব।

পিপলস অ্যান্ড পলিটিকসের তালিকায় বিশ্বের সবচেয়ে সৎ পাঁচজন সরকারপ্রধানের মধ্যে তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টাইম ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের প্রভাবশালী ১০ নারীনেত্রীর একজন। অন্যদিকে প্রভাবশালী দৈনিক খালিজ টাইমস মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তাকে ‘নিউ স্টার অব দ্য ইস্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ’৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি অনন্য। তাঁর নেতৃত্ব আমাদের জন্য গৌরব ও সম্মানের। মানবতার মা শেখ হাসিনা এ বছর পা রাখবেন ৭৫-এ। দীর্ঘ ও বন্ধুর পথপরিক্রমায় তাঁর সফল ও গতিশীল নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর এই বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে কটাক্ষ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এখন মার্কিন মদদপুষ্ট বিশ্বব্যাংকসহ মোড়লদের চ্যালেঞ্জ করছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার মাত্র ৫০ বছরে এই পরিবর্তন বাংলাদেশের। আমরা মনে করি, এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশের যে অগ্রগতি তা দেশরত্ন শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের জন্যই সম্ভব হয়েছে।

কোথায় নেই শেখ হাসিনা? বাংলার আনাচে-কানাচে থেকে শুরু করে বিশ্বসভায় আজ যে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, তার সর্বাগ্রে রয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তাঁর অবদান আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। নিখাদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ় মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলি তাঁকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। আজ তিনি বাঙালির জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং বাঙালি জাতির সব আশা-ভরসার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। মোটা দাগে ’৭৫-পরবর্তী বাঙালি জাতির যা কিছু মহৎ অর্জন তা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের যে অসামান্য অর্জন রয়েছে- তার মধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বও অন্যতম অর্জন। বঙ্গবন্ধুকন্যাকে নিয়ে কথা বললে অনায়াসেই বাঙালির সবচেয়ে করুণ ও ঘৃণ্যতম ইতিহাস ১৫ আগস্ট প্রসঙ্গ চলে আসে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ এবং বাঙালির নেতা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে ইতিহাসের পাতা থেকে চিরনির্বাসন দেওয়ার মানসে চরমতম ষড়যন্ত্রের এক ঘৃণ্য ইতিহাস রচনা হয়। তার পরের ইতিহাস বাঙালির ঘোর অন্ধকারের ইতিহাস। এ অন্ধকার থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মন্ত্রে দীক্ষিত ছাত্র-তরুণ-যুবাদের বিদ্রোহের পতাকা উড্ডীন হয়। আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাদের দোদুল্যমানতা আর ষড়যন্ত্রের পথচলা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তরুণ-যুবা-ছাত্রদের দৃঢ় ভূমিকার কারণে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত নানা ষড়যন্ত্রে ক্ষত-বিক্ষত আওয়ামী লীগ। কিন্তু দেশব্যাপী নেতা-কর্মীদের সুদৃঢ় মনোভাবের কারণে ১৯৮১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে জাতির জনকের জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচন করা হয় এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবদুর রাজ্জাক। শেখ হাসিনা তখন নির্বাসনে এবং একসময় ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত থাকলেও সুদীর্ঘ সময় রাজনীতি থেকে দূরে থেকেছেন। কিন্তু জাতির জনকের নেতৃত্বে বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রাম আর রাষ্ট্র পরিচালনা দেখেছেন তিনি কাছে থেকে। ’৭৫-পরবর্তী নির্বাসিত জীবনও তাঁকে রাজনীতির গভীর পর্যবেক্ষণের সুযোগ করে দেয়। অতএব তিনি রাজনীতিতে একেবারে আনকোরা ছিলেন না। তাই সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার পর পরই তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে এক বর্ষণমুখর দিনে তিনি স্বদেশের মাটিতে পা রাখেন। যেন দেশমাতৃকা তাঁর প্রিয় সন্তানকে কোলে ফিরে পেয়ে আনন্দাশ্রু বিসর্জন দিচ্ছেন এবং একই সঙ্গে প্রকৃতি যেন এই দুঃখী পিতৃমাতৃহীন কন্যার সমব্যথী হয়ে কান্নার জলে তাঁকে বরণ করে নিচ্ছে।

স্বদেশে ফিরে আসার পর শুরু হয় আওয়ামী লীগের এই নতুন নেতার সংগ্রামের নতুন বন্ধুর পথের অভিযাত্রা। একদিকে পিতার হন্তারক সামরিক স্বৈরতন্ত্রের দোসরদের পদচারণ অন্যদিকে দলের অভ্যন্তরের নেতৃত্বাভিলাষী নানা নেতা ও গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র চক্রান্ত। পিতৃমাতৃ স্বজনহারা শেখ হাসিনা পাড়ি দিচ্ছেন এক অজানার উদ্দেশে যার সঙ্গী-সাথীর অনেকেই বিশ্বস্ত নন। কঠিন কঠোর বন্ধুর এ পথযাত্রা। কিন্তু অবিচল দৃঢ়প্রত্যয়ী শেখ হাসিনা বিভ্রান্তির বেড়াজালে পা দেননি।

দেশে ফিরেই এক অভিনব পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হলো তাঁকে। ৩০ মে ১৯৮১ সালে স্বৈরশাসক জিয়া নিহত হলেন সেনা বিদ্রোহীদের হাতে। দেশের মাটিতে ফিরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার অবকাশ পাওয়ার আগেই এই অভিনব ঘটনা, যা তাঁর নেতৃত্বকে শুরুতেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করায়। এ সময়টা আমি তাঁকে খুবই কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাই। দৃঢ়চেতা, নির্ভীকচিত্ত তাঁকে পিতার মতোই সাহসী পায়ে দাঁড়াতে দেখতে পাই। পরিস্থিতি মোকাবিলা করলেন অবিচলিত থেকে। এ সময়টাই আমি তাঁর নেতৃত্বের সূচনাটা দেখলাম গভীর উৎকণ্ঠায়। সব দুশ্চিন্তাকে দূরে ঠেলে দিয়ে তিনি উতরে গেলেন এই কঠিন পরিস্থিতি।

১৯৮১, ১৯৮২ প্রথমে গণতান্ত্রিক শাসনের ছদ্মাবরণে বিচারপতি সাত্তারের নৈরাজ্যের শাসন এবং পরে নেপথ্যের কুশীলব জেনারেল এরশাদের স্বমূর্তিতে আবির্ভাব। পরিপূর্ণ স্বৈরতান্ত্রিক সামরিক শাসন। পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরে নানা মত ও পথের উপদলীয় কোন্দল। ক্ষত-বিক্ষত দল। ১৯৮৩ সালে এসে শেখ হাসিনা দলের অভ্যন্তরের চক্রান্তে একটি বড় ধরনের সাংগঠনিক ধাক্কা খেলেন। আবদুর রাজ্জাক ও মহিউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে দলের অভ্যন্তরের একটি বড় অংশ দল ছেড়ে চলে যান এবং বাকশাল নাম দিয়ে নতুন একটি দল গঠন করেন। তারও আগে এই উপদলের নেতৃবৃন্দ ছাত্রলীগকে দ্বিধাবিভক্ত করেন এবং জাতীয় ছাত্রলীগ নাম দিয়ে একটি ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলেন। রাজ্জাক-মহিউদ্দিনের এই ভাঙন দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বেশ দুর্বল করে দেয়। এ সময়টাতে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব সত্যিকারের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। শেখ হাসিনা অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেন। বলতে দ্বিধা নেই, দলের ভাঙন রোধে শেখ হাসিনা সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। এর সাক্ষী ওবায়দুল কাদের আর আমি। কিন্তু দলের অভ্যন্তরের কট্টর ডানপন্থিদের কূটকৌশল এবং রাজ্জাকপন্থিদের অনমনীয় অবস্থান তাঁর সব প্রয়াসকে ভেস্তে দেয়। দল ভেঙে যায়। তিনি এ সময়ে খুবই ধৈর্য, সহনশীলতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেন। সারা দেশে বাকশালপন্থিরা তাঁকে আদর্শিক দিক থেকে এবং ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করলেও তিনি ধৈর্যহারা হননি। সারা দেশের নেতা-কর্মীর সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দলকে আঘাতের ঘা থেকে সারিয়ে তুলতে বিরামহীন পরিশ্রম করতে থাকেন। স্বজনদের ভালোমন্দের খোঁজখবর বা নিজের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা না করে উদয়াস্ত পরিশ্রমের এক কঠিন সংগ্রামের পথ বেছে নেন। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে স্বৈরতান্ত্রিক দুঃশাসন আর সাংগঠনিক ক্ষেত্রে বিশ্বাসঘাতকতা তাঁকে ব্যতিব্যস্ত করে তুললেও বিচলিত ও বিভ্রান্ত করতে পারেনি। অবিচল ও অভ্রান্ত পথের দিশা ধরে তিনি পিতার আদর্শকে বুকে ধারণ করে এগোতে থাকেন দৃঢ় পদচারণায়। 

আমরা যারা তরুণ-যুবা তারা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলাম তাঁকে নেতৃপদে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে। যদিও এ সময়টা আমি রাজনীতির বাইরে ছিলাম, তথাপি তাঁর পাশে থেকে তাঁকে সহায়তা করার দায়িত্বকে কর্তব্যজ্ঞান করেছি। ওবায়দুল কাদের, মমতাজ হোসেন, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসেন, আবদুল মান্নান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাহে আলম, অসীম কুমার উকিল, সুলতান মনসুর আহমেদ, আবদুর রহমান প্রমুখ এ সময়টাতে ছায়ার মতো তাঁর সঙ্গে থেকে সহায়তা করেছেন সাংগঠনিক কাজে। জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে সর্বজনাব আবদুস সামাদ আজাদ, জিল্লুর রহমান, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, মহিউদ্দিন চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, ড. কামাল হোসেন, আবদুল জলিল, মো. নাসিম, আইভি রহমান, মতিয়া চৌধুরী প্রমুখ নেত্রীকে শক্তি-সাহস জুগিয়েছেন নিরন্তর। অন্যদের মাঝে টাঙ্গাইলের মান্নান সাহেব, নেত্রকোনার মমিন সাহেবের নামও উল্লেখ করা যেতে পারে। একটা সময় পর্যন্ত ফণীভূষণ মজুমদারও তাঁকে সহায়তা করেছেন। মিজান চৌধুরী, দেওয়ান ফরিদ গাজী, আবদুল কুদ্দুস মাখন, মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু তখন অন্য সংগঠন ও দল করেন আওয়ামী লীগ নামে। সবকিছু মিলিয়ে শেখ হাসিনাকে কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হচ্ছিল এ সময়টায়।

আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে শেখ হাসিনাকে অনেক কঠিন সময় ও বন্ধুর পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। আজ ক্ষুদ্র পরিসরে তা লিপিবদ্ধ করা সম্ভব নয়। শুধু আমি বলতে পারি, রাষ্ট্রীক ও দলীয় উভয় ক্ষেত্রেই তাঁকে হাঁটতে হয়েছে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে, কিন্তু দেশব্যাপী বঙ্গবন্ধুর লাখো-কোটি আদর্শিক কর্মী যেমন তাঁকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে গেছেন এবং জনগণের মধ্য থেকে তিনি যে সমর্থন ও ভালোবাসা পেয়েছেন তাও কম প্রাপ্তি নয়। কর্মীদের প্রতি স্নেহ-মমতায় তিনি যেমন মাতৃসমা তেমনি সহকর্মীদের প্রতিও তাঁর সহমর্মিতা ও সহযোগিতা অতুলনীয়। নেতা-কর্মীদের আনন্দ-বেদনায় তাঁর অংশগ্রহণ যে কোনো রাজনৈতিক নেতার জন্যই ঈর্ষণীয়।

বাংলাদেশে তিনি এসেছিলেন একজন নিঃস্ব ব্যক্তি হিসেবে, অভিভাবকহীন। আজ তিনিই লাখো-কোটি নিঃস্ব মানুষের ভরসাস্থল এবং কোটি অসহায় মানুষের অভিভাবক। আওয়ামী লীগ সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও তিনি সেদিন ছিলেন একজন কর্মীমাত্র। আর আজ তিনি একজন নেতাই শুধু নন, একজন সফল রাষ্ট্রনায়কও বটে। কর্মী থেকে রাষ্ট্রনায়কে উত্তরণের এই পথপরিক্রমায় স্নেহময়ী এই জননী একজন দৃঢ়চেতা সাহসী সেনাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে, বাংলাদেশকে।

জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন পদার্পণের বছর আমরা উদযাপন করছি- আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধু প্রত্যাবর্তন করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশে। পূর্ণতা পেয়েছিল আমাদের বিজয়। বাংলাদেশ এখন দারিদ্র্যসীমা অতিক্রম করে উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ। বর্তমানে আমরা এমডিজি অর্জন করে এসডিজি বাস্তবায়নের পথে। ডিজিটাইজেশনে বাংলাদেশের অগ্রগতি বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করছে। বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফার পথ ধরে স্বাধীন বাংলাদেশ আজ অগ্রসরমান অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিশ্বে অনুকরণীয়। শুধু তাই নয়, মানবাধিকার, আইনের শাসনসহ সব ক্ষেত্রেই ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতির পিতার নেতৃত্বে এক দিন বাঙালির মর্যাদা বিশ্বময় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সময়ের পরিক্রমায় তাঁরই কন্যা পুরো বিশ্বে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে এক নতুন মানবিক পরিচয় পায় বাংলাদেশ। আজকের বিশ্বে এত বিপুলসংখ্যক আশ্রয় প্রার্থী বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও জায়গা পেত কি না তা নিয়ে সবারই সংশয় আছে। পিতার যোগ্য উত্তরসূরি এই পুত্রী এক অনন্য ব্যক্তি হিসেবে এবং আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছেন। তাঁর জয় হোক। জয় শেখ হাসিনা। জন্মদিনে নিরন্তর  শুভেচ্ছা।

লেখক : সংসদ সদস্য।

সর্বশেষ খবর