রবিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

ক্যান্সার চিকিৎসায় পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি

ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালে রয়েছে ক্যান্সার চিকিৎসার সর্বাধুনিক সব প্রযুক্তি যেমন- কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, টার্গেটেডথেরাপি, হরমোনথেরাপি, জিনথেরাপি, রেডিওথেরাপি টেকনিক। এসব রয়েছে একই ছাদের নিচে

ক্যান্সার চিকিৎসায় পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি

সাকিফ শামীম

ম্যানেজিং ডিরেক্টর

ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল ও সুপার স্পেশালিটি সেন্টার

 

ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল ও সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাকিফ শামীম বলেছেন, দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালে বাংলাদেশে নতুনভাবে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৬ হাজার মানুষ এবং ক্যান্সারে মারা গেছেন ১ লাখ ৯ হাজার জন। ক্যান্সার চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা এখন দেশেই রয়েছে। দেশে চিকিৎসা নিয়ে মানুষ সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে যাচ্ছেন। প্রতিদিনই অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সমন্বয়ে দেশে গড়ে উঠছে নতুন নতুন হাসপাতাল। বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা রোগীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গত বছরের মার্চে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের যাত্রা শুরু করেছে। ১৮টি ফ্লোর-বিশিষ্ট বিশাল এই হাসপাতালটি গড়ে তোলা হয়েছে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে। ক্যান্সার চিকিৎসায় পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি আমরা।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই হাসপাতাল দেশবরেণ্য চিকিৎসক, দক্ষ নার্স, টেকনোলজিস্ট এবং অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের হাসপাতালে বিভিন্ন স্তরে দুইশর অধিক কর্মী রয়েছে। সম্মুখসারির কর্মী হিসেবে নার্সের ভূমিকা অপরিসীম। তাই আমাদের হাসপাতালের নার্সিং ব্যবস্থাও আন্তর্জাতিক মানের।  

এই হাসপাতালে সেবায় প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কে সাকিফ শামীম বলেন, ক্যান্সার চিকিৎসায় আমরা একটা পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। এটি হবে দেশসেরা ক্যান্সার- চিকিৎসক, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধার এক সমন্বিত প্রতিষ্ঠান। সুসজ্জিত প্যাথলজি ল্যাব, আইসিইউ, এইচডিইউ, আটটি মডিউলার অ্যাডভান্স অপারেশন থিয়েটার, ডে কেয়ার সেন্টার, ডায়ালাইসিস সেন্টার, প্যালিয়েটিভ কেয়ার এবং সাইকোথেরাপি সেন্টার আছে। সপ্তাহে সাত দিন, ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা এবং ফার্মেসি সবই চালু থাকবে এখানে। এ ছাড়াও ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালে রয়েছে ক্যান্সার চিকিৎসার সর্বাধুনিক সব প্রযুক্তি যেমন- কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, টার্গেটেডথেরাপি, হরমোনথেরাপি, জিনথেরাপি, রেডিওথেরাপি টেকনিক। এসব রয়েছে একই ছাদের নিচে।

এই হাসপাতালে রোগীকে বিশ্বমানের সেবা দেওয়া সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতির মধ্যে থেকে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করে চলেছি আমরা। চেষ্টা করছি একটি সমন্বিত বিশেষায়িত ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণের। সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে যেন সব ধরনের জটিলতা সমাধান করা যায় সেই চেষ্টা করা হয়েছে। ক্যান্সার রোগীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমাদের হাসপাতালটিতে ১৫০ বেডের পাশাপাশি রয়েছে স্পেশাল কেমোবেডের ব্যবস্থা। ক্যান্সারের সঠিক ডায়াগনোসিস নিশ্চিত করতে ম্যান বিহাইন্ড মেশিন বলে একটা কথা রয়েছে। সে জন্য সুনির্দিষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি দক্ষ ল্যাবরেটরি বিশেষজ্ঞ, হিস্টোপ্যাথলজিস্ট, ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজিস্টের সমন্বয় করা হয়েছে। তাই আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল ও সুপার স্পেশালিটি সেন্টার বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা দিয়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দিতে সম্পূর্ণভাবে সক্ষম।

ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর একটি অংশ দেশের বাইরে সেবা নেয়। এই হাসপাতালে তারা সেবা নিলে খরচের তারতম্য কেমন হবে জানতে চাইলে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল ও সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলেন, আমি আগেই বলেছি, বাংলাদেশে প্রতি বছর দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। এর তিন ভাগের এক ভাগও যদি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়, তাহলে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যায়।  আমাদের এই হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ বিদেশগামী একজন রোগীর গড় চিকিৎসার খরচের তুলনায় অনেক কম। আর বিদেশে যাওয়ার যে ভোগান্তি সেটি নেই এখানে, আর সঙ্গে পাচ্ছে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা।  আমাদের এই হাসপাতালের কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ৭ হাজারের বেশি রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন আমরা প্রায় ১ হাজারের বেশি রোগীকে নিয়মিত চিকিৎসা দিয়ে থাকি।  

হাসপাতাল নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে সাকিফ শামীম বলেন, ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশালিটি সেন্টার দেশের সর্বপ্রথম কম্প্রিহেন্সিভ ক্যান্সার কেয়ার সেন্টার। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ল্যাবএইড ৩০ বছরের আস্থা ও ভরসার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবায় আধুনিক প্রযুক্তি ও চিকিৎসা পদ্ধতি দিয়ে দেশের ক্যান্সার চিকিৎসায় বিপ্লব ঘটাতে চলেছে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশালিটি সেন্টার। মানসম্পন্ন যত্ন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে এই ধারণা পরিবর্তনের পথপ্রদর্শক হওয়াই আমাদের লক্ষ্য। ক্যান্সার এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট রোগীদের জীবনমান উন্নতির জন্য রয়েছে আমাদের নিঃশর্ত প্রতিশ্রুতি। আমরা রোগীদের জীবন বাঁচাতে বদ্ধপরিকর। যারা আমাদের প্রাঙ্গণে এসেছে ও আসবে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।

সর্বশেষ খবর