শনিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

এক ভুবনের দুই বাসিন্দা...

এক ভুবনের দুই বাসিন্দা...

কবির বকুল ও দিনাত জাহান মুন্নী

সংগীত ভুবনের প্রিয় দুই মুখ কবির বকুল ও দিনাত জাহান মুন্নী। একজন গীতিকবি, অন্যজন কণ্ঠশিল্পী। দুজনই সমান জনপ্রিয়। কবির বকুলের লেখা অসংখ্য গানে কণ্ঠ দিয়েছেন দিনাত জাহান মুন্নী। পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে তারা সুখী পরিবার। একই অঙ্গনে একসঙ্গে দীর্ঘদিন তাদের পথচলা। প্রায় ২১ বছর। একই ছাদের নিচে সুখ-দুঃখের ভাগাভাগি করছেন। এবার বাংলাদেশ প্রতিদিনের শোবিজ বিভাগের আড্ডা আয়োজনে অতিথি হয়ে তারা এসেছিলেন। এই তারকা দম্পতির সঙ্গে খোলামেলা আড্ডার চুম্বক অংশ তুলে ধরেছেন- আলী আফতাব ও পান্থ আফজাল  ছবি : রাফিয়া আহমেদ

 

সূর্য যখন কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে অস্ত যাওয়ার পথে, তার কিছুক্ষণ আগে অফিসে হাজির হন সংগীত ভুবনের দুই জনপ্রিয় তারকা দম্পতি কবির বকুল ও দিনাত জাহান মুন্নী। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শোবিজ টিম কালক্ষেপণ না করেই প্রথমে ছবি তোলার কাজটি সেরে ফেলে। ক্লিক ক্লিক আওয়াজে ক্যামেরার ভিউফাইন্ডারে ধরা পড়ে এই সুখী দম্পতির সুখের কিছু চিত্র। বিস্তৃত কনফারেন্স রুমে প্রবেশের পর আড্ডার সূচনায়ই কবির বকুলের মুখে জানতে চাওয়া হয় তাদের দুজনের ভালোবাসার গল্প। একটু মৃদু হেসে শুরু করলেন বকুল- ‘মুন্নীকে ছোটবেলা থেকেই চিনতাম। দুজনের বাড়ি চাঁদপুরে। মুন্নীর ছোট মামা ছিল আমার বড় ভাইয়ের বন্ধু। সে সূত্র ধরেই প্রথমদিকে মুন্নী কিন্তু আমাকে মামা বলেই ডাকত। এ কারণে মোটামুটি মুন্নীর বন্ধুদের কাছে আমাকে প্রায় শুনতে হতো- মামা যখন স্বামী হলো। হা হা হা... ঢাকায় আসার অনেক বছর পর মুন্নীকে একদিন হঠাৎ দেখে মনে হয়েছিল, এই মেয়েটিকে বুঝি আমি মনে মনে খুঁজছি। তখন মুন্নীও স্থায়ীভাবে ঢাকায় থাকে। এর মধ্যে একদিন যে কোনো কারণে মুন্নীর খোঁজ করছিলাম।’ কথার পিঠে কথা বাড়াতেই প্রশ্ন জুড়ে দিলাম, কি কারণে মুন্নী আপাকে এত খোঁজাখুঁজি? এমন প্রশ্নে দুজনের মুখেই হাসি দেখা গেল। মুচকি হেসে মুন্নী বলে চললেন, ‘বিষয়টি অনেক মজার। এ বিষয়টি আমার থেকে ভালো বকুল বলতে পারবে।’ বকুল ভাই কথাটা লুফে নিয়েই বলতে শুরু করেন, ‘একদিন আমার অফিসের এক সহকর্মী জিজ্ঞাসা করল, তুমি মুন্নীকে চেন? বললাম, কেন চিনব না! সে আবার বলল- বিয়ের জন্য মুন্নীকে একজন একটু দেখতে চায়। বললাম- ঠিক আছে, খুঁজে বের করছি। তারপর আমি খুঁজতে খুঁজতে তার হোস্টেলে গেলাম। কিন্তু গিয়ে হতাশ হলাম! কারণ সে ছিল না। তাকে না পেয়ে আমার একটি ভিজিটিং কার্ড রেখে এলাম। তার পরদিন সকাল ১০টা কি সাড়ে ১০টার দিকে মুন্নী আমাকে ফোন করে। তাকে অফিসে আসতে বলি। মুন্নী সেদিনই বিকালে আমার অফিসে আসে। তখন আমি ভোরের কাগজে কাজ করি। মুন্নী অফিসে আসার পর অফিসের সবার সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দিই। সবাইকে বলি, মুন্নী অনেক ভালো লালনগীতি গাইতে পারে। মুন্নী তখন সবাইকে লালনের গান শোনায়। গান শোনানোর পর সে চলে যায়। তারপর দুই-একদিন তার সঙ্গে দেখা করি। একদিন ওকে সরাসরি বলেই ফেললাম- তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে। তুমি রাজি থাকলে আমি পারিবারিকভাবেই বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে চাই। মুন্নী আমাকে সেদিন ফিরিয়ে দেয়নি। প্রস্তাব দেওয়ার পর পারিবারিক আয়োজনে আমাদের বিয়ে হয়েছিল ১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর।’ আপনাদের দাম্পত্য জীবন প্রায় ২১ বছর। জানা মতে, মুন্নী আপনাকে অনেক চিঠি লিখত? বকুল ভাই মৃদু হেসে বলতে লাগলেন, ‘সে তো আমাকে অনেক চিঠি দিত; আমিও দিতাম। সেসবের কিছু চিঠি এখনো আমি অনেক যতœ করে রেখে দিয়েছি।’ এরপর কবির বকুলের কাছে শোবিজ টিমের আরেক প্রশ্ন, বর্তমানে চলচ্চিত্রে গানের কী অবস্থা? বকুল বললেন, ‘আগের সময়ের চলচ্চিত্রের সঙ্গে এখনকার চলচ্চিত্রের পার্থক্য তো কিছুটা থাকবেই। এখন আগের মতো গান তৈরির সেই পরিবেশ খুঁজে পাওয়া যায় না। ২০১১-১২ সালের পর গান তৈরির সেই পরিবেশ আস্তে আস্তে ফিঁকে হয়ে গেছে। এখন ফোনে কল দিয়ে বলে,  ভাই রোমান্টিক একটি সিনেমার জন্য গান লাগবে; একটু লিখে দেন না। এভাবেই তো চলছে! সব মিলিয়ে সিনেমার গানে এখন আর প্রাণ খুঁজে পাই না। তখন এমন হতো যে, আমি গান লিখে রাখছি, সুরকার তার নিজের মতো সুর করে দিচ্ছে, আর শিল্পীরা যে যার যার মতো করে গানটিতে ভয়েজ দিয়ে গেছে। চলচ্চিত্রের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হচ্ছে গান। আর সেই সময়ে গানের জন্য আমাদের একসঙ্গে সবাইকে বসতে হতো। ১৯৯৪ সালের দিকে আমি কিন্তু ব্যস্ত গীতিকারদের মধ্যে একজন। প্রায় সব অ্যালবামেই আমার দুই-একটি গান থাকত। আমি তখন তপন চৌধুরীর সঙ্গে থাকি। একদিন তপনদা আমাকে ডেকে বললেন, ‘তোকে আবু তাহের ভাই (প্রয়াত সংগীত পরিচালক) খুঁজছেন। তোকে দিয়ে সিনেমায় গান লেখাবেন মনে হয়। খবরদার! এই সুযোগটি মিস করবি না যেন।’ তার কথামতোই আমি তখন আবু তাহের ভাইকে ফোন করি। তিনি আমাকে সিনেমায় গান লেখার জন্য প্রস্তাব দেন। আমি রাজি হয়ে যাই। তিনি তার বাসায় যেতে বলেন। তার বাসায় গিয়ে দেখলাম, ‘অগ্নিসন্তান’ সিনেমার সবাই বসে আছে। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ছবিটির পরিচালক, স্ক্রিপ্ট রাইটার, সুরকার ও মিউজিসিয়ান। সব মিলিয়ে আট-নয়জন হবে। এই পরিবেশের সঙ্গে প্রথম পরিচিত হলাম আমি। তারা ছবির পুরো গল্পটা শোনালেন। সিনেমার প্রেক্ষাপট বুঝিয়ে দিয়ে গান লিখতে বললেন। এ তো গেল সিনেমার গানের কথা! আর অডিও বিষয়টি ছিল ভিন্নরকম। যখন যে আমাকে যার জন্য গান লিখতে বলেছে, আমি ঝটপট লিখে দিয়েছি। এমনো হয়েছে যে, এক রাতেই ছয়-সাতটি গান লিখেছি। তবে এখন মনে রাখার মতো কিছু গান হচ্ছে কিন্তু।’  দীর্ঘক্ষণ চুপ থাকার পর প্রশ্ন করা হয় দিনাত জাহান মুন্নীকে। চলচ্চিত্রে গানের শুরু কীভাবে? তিনি বিস্তারিত বলে চললেন, ‘ছোটবেলা থেকেই গান গাওয়া শুরু। চাঁদপুর থেকে ঢাকায় পড়াশোনা করতে এলাম। ১৯৯৬ সালে এনলিস্টেড হলাম টেলিভিশন ও রেডিওতে। পাশাপাশি ছায়ানটে ভর্তি হই। ঠিক ’৯৭-এর দিকে বকুলের সঙ্গে আমার পরিচয় ও বিয়ে। ওই সময় অনেক গান করেছি কিন্তু গানটাকে তখনো কিন্তু আমি প্রফেশন হিসেবে নেইনি। আসলে মা আমাকে গানের জন্যই ঢাকায় পড়াশোনা করতে পাঠিয়েছিলেন। শান্তিনিকেতনে পড়তে যাওয়ার কথা থাকলেও তা হয়ে উঠেনি। যেহেতু আমি একটা মেয়ে, তাই অনেক কিছুই তখন সম্ভব ছিল না। আমি এরপর ভর্তি হই ছায়ানটে। তবে বকুলের সঙ্গে বিয়ের পর ১৯৯৭ সালে প্রথম প্লেব্যাকে কাজ করার সুযোগ দেন শওকত আলী ইমন। সেটি ছিল কবির বকুলের লেখা ও শওকত আলী ইমনের সুরে। গানটি ছিল ‘জননেতা’ ছবির । দ্বিতীয় গানটিও কিন্তু এই জুটির। ছবির নাম ‘দুর্র্ধর্ষ সম্রাট’। ২০০০ সালে প্রকাশিত হয় আমার প্রথম অ্যালবাম ‘প্রতীক্ষা’। ছয় বছর বিরতির পর ২০০৭ এর দিকে লালনের গান নিয়ে আমার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘অপার হয়ে বসে আছি’ প্রকাশ হয়। এরমধ্যে বেশকিছু গান করি। তার মধ্যে তিনটি ছিল ডুয়েট।’ ভারি ভারি কথায় আড্ডা যখন চুপসে যাচ্ছিল ঠিক তখন কবির বকুল মুন্নীর কিছু গুণের ফিরিস্তি দেওয়া শুরু করলেন। ‘মুন্নী কিন্তু খুব ভালো রান্না করতে পারে। একটি মানুষের সব গুণ তো আর একদিনে প্রকাশ পায় না, তা আস্তে আস্তে প্রকাশ পায়। যেমন- বিয়ের পর আমি জানতাম মুন্নী রান্না করতে জানে না। কোনো দিন নাকি রান্নাঘরেও যায়নি। কিন্তু আস্তে আস্তে মুন্নী পাকা রাঁধুনি হয়ে যায়। তার হাতের রান্না খেতে খেতে আমি তো একসময় মোটাও হয়ে যাচ্ছিলাম।’ কবির বকুলের কথা কেড়ে নিয়ে মুন্নী বললেন- ‘আসলে বাধ্য হয়েই রান্নাটা শিখে ফেলেছি বলা যায়! একসময় বকুলের সঙ্গে তার অনেক বন্ধুরা বিকালে বাসায় আড্ডা দিতে আসত। তাদের জন্য বিকালের নাস্তা তৈরি করতে হতো আমার। বলা নেই কওয়া নেই হুট করেই দুপুরে কিছু বন্ধুকে নিয়ে খেতে চলে আসত সে। তাই তাদের জন্য দ্রুত রান্না করতে হতো। এভাবেই বিপদে পড়ে পড়ে রান্নাটা একসময় শিখে ফেললাম।’ প্রশ্নের উত্তর শেষ না হতেই আবারও প্রশ্ন। আপনি দেখতে তো মাশাল্লাহ যথেষ্ট সুন্দরী! সুন্দরী হওয়ার কারণে গানের পাশাপাশি নায়িকা হওয়ার কি প্রস্তাব পেয়েছেন কখনো? মুন্নীর জবাব, ‘প্রস্তাব তো অনেকবারই পেয়েছি। দেশের গুণী অনেক পরিচালকই আমাকে অভিনয় করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন। অনেকে আবার আমার গানের চরিত্রের সঙ্গে মিল রেখে গল্পও লিখতে চেয়েছেন। তবে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে না করে দিয়েছি।’ গান লেখার পাশাপাশি ভালো ছড়া-কবিতাও লেখেন কবির বকুল। প্রসঙ্গটি নিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বলেন, “অষ্টম-নবম শ্রেণিতে থাকাকালীন সময় থেকে ছড়া-কবিতা লেখা শুরু। তবে কলেজে পড়াকালীন কবিতা লেখার ঝোঁকটি বাড়তে থাকে। ৯৪তে ‘আমি বিদ্রোহী’ শিরোনামে আমার প্রথম কবিতার বই প্রকাশ হয়। সে সময় সরকারবিরোধী কবিতা বেশি লিখতাম। আর ’৯৬তে প্রকাশ হয় ‘চিৎকার’। তারপর ২০০১-এ আমার তৃতীয় বই প্রকাশ হয় ‘যত ভুল কবির বকুল’। পাশাপাশি নাটকও লিখেছি। এরই মধ্যে তিনটি নাটক প্রচার হয়েছে।” প্রসঙ্গ শেষ না হতেই তাকে আবার জিজ্ঞাসা, কবির বকুলের প্রথম গান লেখা সম্পর্কে জানতে চাই? ‘এই ইতিহাস অনেক বড়। তবে ছোট্ট করে বলি। ১৯৮৮ সালে ১৩টি গান লিখে আমি তপনদাকে দেই। তিনি আমার একজন শ্রদ্ধেয় মানুষ। একদিন তপনদার কাছে গিয়ে বললাম, ‘দাদা আমি কিছু গান লিখেছি, যদি দেখতেন! তপনটা বলল, তুই রেখে যা। আমি পরে দেখে নিব। তার প্রায় চার-পাঁচ মাস পরে আমি আবার ঢাকায় তপনদার বাসায় গেলাম। তপনদাকে একসময় জিজ্ঞাসা করলাম, ‘দাদা, আমার গানগুলো কি দেখেছিলেন?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ দেখেছি। একটু ঠিকঠাক করতে হবে।’ এই বলে দাদা বাথরুমে গেলেন। আমি তো জানি দাদা গানগুলো বিছানার নিচে রেখেছেন। আমি কৌতূহলবশত বিছানা উল্টিয়ে দেখি গানগুলো একই জায়গায় পড়ে রয়েছে। মন একটু খারাপ হয়ে গেল। তারপর আমি বাড়িতে চলে আসি। তার দুই মাস পর শুনতে পেলাম আমার গান আইয়ুব বাচ্চু গেয়েছেন। তখন খুশিটা আর ভাষায় প্রকাশ করার মতো ছিল না। দাদাকে দেওয়া ১৩টা গানের মধ্যে ‘কাল সারা রাত তোমারই কাঁকন যেন মনে মনে রিনিঝিনি বেজেছে যার’ গায়ক আইয়ুব বাচ্চু আর অন্যটি ছিল নাসিম আলী খানের গাওয়া ‘পথে যেতে যেতে খুঁজেছি তোমায়’। গীতিকার হিসেবে জীবনে নতুন পথের দেখা পেলাম। তারপর একটা বছর আমি অনেক কষ্ট করেছি। অনেকেই গান নিয়ে যেতেন। কিন্তু গান আর প্রকাশ হতো না। এরপর তো আজকের এই কবির বকুল হয়ে উঠা।’ দিনাত জাহান মুন্নী ও গীতিকার কবির বকুলের সংসারে আছে আরও তিনটি মানুষ। দুই মেয়ে ও এক ছেলে। তাদের সন্তানরা তাদের পথেই হাঁটবে কিনা জানতে চাওয়া হলে মুন্নী বলেন, ‘ছেলে-মেয়েরা বাবা-মায়ের রক্তের ধারা কিছুটা তো পাবেই। সে কারণে হয়তো তারা গান করছে। কিন্তু তাদের যে গানটাকে পেশা হিসেবে নিতে হবে তা কিন্তু নয়। আমার বড় মেয়ে প্রেরণা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়, পাশাপাশি গানটাও চালিয়ে যেতে চায়। তবে তারা গানের চেয়ে বেশি মিউজিসিয়ানই হতে চায়। এরই মধ্যে তারা কিন্তু পিয়ানো ও গিটার শিখছে। তাদের ওপর আমাদের আলাদা কোনো চাপ নেই। তারা তাদের পছন্দমতোই চলুক। তবে এই সময়ে এসে আমি আরও একটি কথা বলতে চাই। বর্তমানে আমাদের একটি শিক্ষিত শিল্পী সমাজ প্রয়োজন। যারা জেনে-বুঝে ও শিখে গান করবে।’ গল্প-আড্ডায় অনেকটা সময় কেটে-গেল। ঘড়ির কাটায় লাগাম টেনে ধরার সাধ্য কারোই নেই; আমাদেরও। তাই সময়কে নিজের গতিতে চলতে দিয়ে এই প্রিয়মুখ দুজনকে অফুরন্ত ভালোবাসা জানিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের শোবিজ স্পেশাল আড্ডা শেষ হয়। 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর