শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

আব্বু ছিলেন আমাদের স্বপ্নের মানুষ

আব্বু ছিলেন আমাদের স্বপ্নের মানুষ

প্রতীক হাসান ও প্রীতম হাসান

বাবা বাংলাদেশের স্বনামধন্য সংগীতশিল্পী, আশির দশকের সাড়া জাগানো গায়ক প্রয়াত খালিদ হাসান মিলু। কিন্তু বাবার

পরিচয়ে নয়, দুই ভাই প্রতীক হাসান ও প্রীতম হাসান নিজস্ব প্রতিভার গুণেই এখন বাংলাদেশের সংগীতজগতের পরিচিত দুটি নাম। বাংলাদেশের অন্যতম একজন সংগীতশিল্পী প্রতীক হাসান। অন্যদিকে তার ছোট ভাই গায়ক, সংগীত পরিচালক আর অভিনয়ে পেয়েছেন সুখ্যাতি। বাংলাদেশ প্রতিদিনের এবারের শোবিজ আড্ডায় অতিথি হয়েছেন তারা। তাদের সঙ্গে প্রাণবন্ত সেই আড্ডা তুলে ধরেছেন- আলী আফতাব ও পান্থ আফজাল ছবি : রাফিয়া আহমেদ

 

তাদের সঙ্গে আড্ডার আয়োজনটা ছিল হঠাৎ করেই। দুই দিন আগে তাদের সঙ্গে কথা বলে সময় নির্ধারণ করা হয়। চৈত্রের দাবদাহকে উপেক্ষা করে সময় মতোই আড্ডা দিতে হাজির হয়েছিলেন তারা। এক ভাই আরেক ভাই থেকে ছয় বছরের ছোট হলেও দুই ভাইয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব অনেক দৃঢ়! খুনসুটি করতে করতে তারা গাড়ি থেকে নামলেন। পায়ে খানদানি জুতার সঙ্গে অ্যাশ রঙের নরমাল প্যান্ট আর কালো শার্টে প্রতীক ছিলেন অনবদ্য। হাতে দামি ঘড়ি আর স্বভাবসুলভ কালো সানগ্লাস হাতে আঁকড়ে রেখেছেন তিনি। তবে প্রীতম বলতে গেলে পুরাই রাফ অ্যান্ড টাফ লুকে! ইলেক্ট্রনিক গেজেটবান্ধব প্রীতম পরেছেন হালকা ব্লু-রঙের জিন্স-প্যান্টের সঙ্গে সাদা টি-শার্ট। টি-শার্টের ওপর চাপানো জিন্সের শার্ট। হাতে হাতঘড়ি, পায়ে ম্যাচ করা স্নিকার! আগেই প্রস্তুত নিয়ে ছিল ফটোগ্রাফার। তাদের ফটোসেশনের পাঠ চুকিয়ে বসানো হয় আড্ডা। কথা না বাড়িয়ে আড্ডা শুরু করলাম বড় ভাই প্রতীককে দিয়ে। বাবার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে গানের জগতে পা রেখেছেন প্রতীক। সংগীতজীবনের শুরুটা কীভাবে হয়েছিল? এ প্রসঙ্গে প্রতীক বলেন, ‘আব্বু ছিলেন স্বপ্নের মানুষ। আব্বুকে দেখেই মূলত গানের জগতে আমার স্বপ্ন দেখা শুরু। ছোট্ট থেকে আব্বুর গান গাওয়া আর সেই সঙ্গে তার জনপ্রিয়তা দেখে গানের প্রতি একটা আগ্রহ জন্মেছিল। জ্ঞান-বুদ্ধি হওয়ার আগেই গানের পরিবেশে বেড়ে ওঠা। আব্বুর একজন মিউজিশিয়ান ছিলেন পল। তিনি আমাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন, গানের প্রাকটিস করাতেন। আব্বু তেমন করে জানতেন না সেই সময়। তারপর অফিশিয়ালি আসা আব্বু যখন অসুস্থ, ২০০৪ সালে। তখন থেকেই গানের সঙ্গে পথচলা। আব্বুর ইচ্ছাতেই শুরু হয়েছিল সংগীতজীবন। কিন্তু তার কথা ছিল আগে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করবা, তারপর গানে আসবা।’ তবে আব্বুর ইচ্ছায় এলেও নিজ যোগ্যতায় এ পর্যন্ত এসেছেন- এমনটাই দাবি করেন এ শিল্পী। বাবার কণ্ঠের মতো হুবহু আপনার কণ্ঠ। একজন সফল গায়কের ছেলে হিসেবে কতটুকু মূল্যায়ন পান? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আব্বুর ছেলে এর চেয়ে বড় ব্যাপার হলো নিজের যোগ্যতা। সেটি না থাকলে গানের জগতে এত বছর ধরে টিকে থাকতে পারতাম না। আব্বুর নাম বেচে সাময়িক টিকে থাকা যায়।’ বাবার শূন্যতা সবসময় তাড়া করে প্রতীক হাসানকে। ‘আব্বু যখন আমাদের ছেড়ে চলে যান তখন আমি ছোট। সময়ের তাগিদেই আমার গানে আসা। আব্বুর অসংখ্য ভক্ত রয়েছে। এখন শুধু আব্বুর সন্তান হিসেবে নয়, আমার নিজের নামেও শ্রোতা আমাকে চেনে। বিষয়টি ভালো লাগে। কিন্তু এ ভালো লাগাটা দ্বিগুণ হতো যদি আব্বু এটা দেখে যেতে পারতেন। আব্বু যদি দেখতেন তার সন্তান নিজের নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছে- আব্বু অনেক খুশি হতেন।’ আপনার বাবার অসংখ্য জনপ্রিয় গান আছে। এ গানগুলো নিয়ে দুই ভাইয়ের কোনো পরিকল্পনা আছে? প্রতীক বললেন, ‘আব্বুর জনপ্রিয় গানের সংখ্যা অনেক। আমি চাইছি সব গান একত্রে করে একটি আর্কাইভ করে রাখতে। আমি আব্বুর অনেক গান খুঁজেও পাচ্ছি না। তবে যত সময়ই লাগুক না কেন আমি এ কাজ শেষ করব।’

‘আমার মা বলেছিলেন খোকা তুই প্রেম করিস না, ভালো ছেলেদের কপালে ভালো মেয়ে জোটে না!’ খোকা গানের এই কয়েকটি লাইন কিন্তু এখন ফেসবুকে ভাইরাল। কথাটি আসলে কতটুকু সত্য? প্রীতম হাসান মোবাইল অন্যমনস্ক ছিলেন। কথাটা শুনে আমাদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ছোট্ট করে উত্তর দিলেন, ‘আসলেই কিন্তু! এই পর্যন্ত আমার দেখা ভালো ছেলেদের (বন্ধু) কপাল খুবই খারাপ।’

মাত্র ছয় মিনিটের একটা গান খোকা। হুমায়ূনপুত্র নুহাশের নির্মাণে এই চমৎকার গানের সিনেমেটিক ভিডিওতে অনেক পরিচিত মুখ রয়েছে। অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? প্রীতম প্রশ্নটাকে সিরিয়াসলি নিয়ে গুরুগম্ভীরভাবে বর্ণনা দিতে লাগলেন, ‘অভিজ্ঞতা তো চমৎকার! এটি একটি পরিপূর্ণ গল্প। এটিতে রয়েছে অনেক রহস্য। একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার যা যা উপকরণ দরকার সব কিছুর সমন্বয় ছিল এটিতে।’

এদিকে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের কথা ও সুরে গেয়েছেন কণ্ঠশিল্পী খালিদ হাসান মিলু। বাবার সুযোগ্য সন্তান প্রতীক হাসানও বাবার কণ্ঠের গান নিজের কণ্ঠে গেয়ে পরিচিতি পান। যার জন্য তিনি কৃতজ্ঞ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের কাছে। তাকে নিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে প্রতীক বলেন, ‘তার সৃষ্টি করা আব্বুর অসাধারণ কিছু গান গেয়ে আজ আমি প্রতীক হাসান। তিনি আমাকে দিয়েছেন অকৃত্রিম ভালোবাসা, পথ চলার অনুপ্রেরণা আর আজীবন গাওয়ার কিছু গান।’ বর্তমানে কী নিয়ে ব্যস্ততা? প্রতীক বলেন, ‘নিয়মিত শো করছি। প্লে-ব্যাকেও কাজ করছি। সবকিছু মিলিয়ে গান নিয়েই ব্যস্ত থাকছি।’ এই সময়কে অনলাইননির্ভর সংগীতাঙ্গনের যুগ বলে অনেকেই। বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন? প্রীতম এটিকে পজেটিভলি দেখছেন। বললেন, ‘অনলাইন আমাদের ভবিষ্যৎ প্লাটফর্ম। এটির রয়েছে অনেক সম্ভাবনা যদি ঠিকঠাকমতো কাজে লাগানো যায়। তবে ভালো মানের কাজ দিয়েই মানুষের মনে জায়গা করে নিতে হবে।’ প্রতীক কথার পিঠে কথা টেনে উত্তর দিলেন, ‘ইউটিউবে রাতারাতি হিট হয়ে তারকা বনে যাওয়াতে আমি বিশ্বাসী নই। ইউটিউবের ভিউ কিন্তু জনপ্রিয়তার মাপকাঠি হতে পারে না। শ্রোতারা যেসব কাজ মনে রাখবে সেগুলোই স্থায়ী হবে। আর তাই শ্রোতারা যেন আমার কাজ মনে রাখেন সেই চেষ্টাই সবসময় করি।’ বাবার দেখানো পথ ধরেই কি হাঁটতে চেয়েছিলেন? কথাটার মানে ভালোভাবে বুঝে নিয়ে সহজ কথায় প্রীতমের উত্তর ‘মিউজিকের প্রতি কোনো আগ্রহই ছিল না আমার। ছোটবেলায় বলতাম, আর্মি অফিসার হব। ঘরভর্তি ছিল খেলনা রাইফেল, পিস্তল, বন্দুক, গুলি এসব। ভীষণ দুষ্টু ছিলাম। আব্বু যখন বেঁচে ছিলেন। প্রতীক ভাইয়া আমাকে প্রায়ই অনুশীলন করাতেন তখন। ভাইয়া এ ব্যাপারে কিন্তু খুবই সিরিয়াস ছিলেন কিন্তু আমার মনোযোগ ছিল কম্পিউটার গেমসে। আব্বু মারা যাওয়ার পর আমি গেমস নিয়েই পড়ে থাকতাম। তারপর একটা সময় প্রতীক ভাইয়ার অনুপ্রেরণায়ই বলা যায় আমার সংগীতাঙ্গনে পা রাখা। মাধ্যমিক পরীক্ষার পর ফুফুর কিনে দেওয়া কম্পিউটারে কম্পোজিশনের অনুশীলন শুরু হয় রিদমের প্যাটার্ন তৈরির মাধ্যমে। তারপর একটা সময় মজা করে একটা-দুটো প্যাটার্ন করা শুরু করি। প্রথম একটি রবীন্দ্রসংগীত রিমিক্স করি।’

সংগীতাঙ্গনে প্রথম সুযোগটা আসে কীভাবে? প্রীতম বলতে শুরু করেনে, ‘হাবিব ভাইয়ের করা একটা মুঠোফোনের জিঙ্গেলে গান গাওয়ার মাধ্যমে। তবে এই বিষয় নিয়ে রয়েছে আরেক ইতিহাস। আমার মনে এটি প্রতীক ভাইয়ার মুখ থেকে শুনলেই বুঝতে পারবেন।’ প্রীতমের ছুড়ে দেওয়া উত্তরের সঙ্গে যোগ করে বড় ভাই প্রতীক বলা শুরু করলেন, ‘একটা মুঠোফোনের জিঙ্গেলে গান গাওয়ার জন্য হাবিব ভাই আমাকে একদিন ডাকলেন। কিন্তু ভয়েজ কয়েকবার নেওয়ার পর তিনি সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। তিনি একটু রাফ ভয়েজ চাচ্ছিলেন। যার কণ্ঠ ওপরের দিকে যেতে একটু কষ্ট হয়। আমি তখন ছোট ভাইকে দিয়ে চেষ্টা করে দেখতে বলি। এরপর গানটি সে গাইল।’ প্রীতম কথার মাঝেই বড় ভাইয়ের কথাটাকে কেড়ে নিয়ে বললেন, ‘এটির পর থেকেই হাবিব ভাইয়ের সঙ্গে আমার ব্যাপক সখ্য হলো। প্রতিদিন রামপুরা থেকে গ্রিন রোডে হাবিব ভাইয়ের স্টুডিওতে যেতাম, তবে সাইকেল চালিয়ে।’ হাবিবের সঙ্গে বেশ কিছু কাজ করেন প্রীতম। তার সঙ্গে কাজ করতে আর গান করতে প্রীতম তো পারমানেন্টলি তার বাসার কাছেই বাসা নেয়। ‘ওই সময় অদিত ভাইও আসতে বললেন। তা ওখানে নাকি একটি রুম খালি ছিল। এরপর তো আমি গানের জন্য বাসা ছেড়ে পান্থপথের স্টুডিওতে চলে এলাম।’

হানিফ সংকেতের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে প্রথমবার টিভি পর্দায় এসেছিলেন, সঙ্গে ছিলেন বড় ভাই প্রতীক হাসান। এরপর কুদ্দুস বয়াতির সঙ্গে ‘আসো মামা হে’ গানটি করার পর সবাই আপনাকে চিনতে শুরু করল। প্রথম ভিডিওতেই বাজিমাত! এরপর করলেন ‘লোকাল বাস’, ‘জাদুকর’, ‘রাজকুমার’, ‘বেয়াইন সাব’ এবং সর্বশেষ ‘খোকা’। গানগুলো আবার একটি আরেকটি থেকে ভিন্ন। স্বপ্লদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, নাটকে অভিনয় করেছেন আবার অস্তিত্ব, রাজনীতি ও দেবীর সংগীত পরিচালনাও করেছেন। এতসব কীভাবে পারেন? প্রীতম ফিক করে হেসে উত্তর দিলেন, ‘আসলে হয়ে যায় আর কি! নুহাশ ভাইয়ের কারণে অভিনয় করেছি। সে আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। তার কাজ সব সময় ভিন্নরকম। তবে আমার সব আগ্রহ কিন্তু গান নিয়ে, অভিনয় করার ইচ্ছা ছিল না। অনুরোধ রক্ষার ফলে করেছি। প্রীতম ভাই, হাবীব ভাই, অদিত ভাই গানের ক্ষেত্রে অনেক বেশি হেল্প করেছেন। আর আমি যে গানগুলো করেছি সবই দেখবেন বাংলা সুর ব্যবহার করেছি।’ অভিনয়ে নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছা আছে? ‘খুবই কষ্টের কাজ অভিনয়। তবে ভালো স্ক্রিপ্ট বা ভালো চরিত্র পেলে অভিনয় করব।’ এর আগে তো জাজের আজিজ ভাই আপনাকে চলচ্চিত্রে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করার অফার দিয়েছিলেন? প্রীতম কথাগুলো শুনে মুচকি হেসে অল্প কথায় বললেন, ‘আপাতত গান নিয়েই ভাবতে চাই। চলচ্চিত্রে অভিনয় তরার কোনো ইচ্ছে নেই আমার’ আজকাল বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে বাজতে শোনা যায় ‘বেয়াইনসাব’ গানটি! ছোট ভাই প্রীতম হাসানের সুর-সংগীতে এতে কণ্ঠ দিয়েছেন প্রতীক হাসান। কথা লিখেছেন দুই ভাই যৌথভাবে। মডেল হয়েছেন অভিনেতা জাহিদ হাসান, সিয়াম আহমেদ, অভিনেত্রী সায়লা সাবি, শার্লিনা হোসেন, ধারাভাষ্যকার চৌধুরী জাফরউল্লাহ শরাফত, রন্ধনশিল্পী কেকা ফেরদৌসী প্রমুখ। গানটি নিয়ে প্রশ্ন করতেই প্রতীকের উত্তর ‘আমাদের দেশে বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সবাই হিন্দি গান ছেড়ে নাচে। এর একটা কারণও আছে। মেলোডি গানের তুলনায় আমাদের এখানে নাচের গান কম। তা ছাড়া বিয়ে নিয়ে সেই অর্থে নতুন গানও হয়নি। এই গানটি হয়তো সে বিষয়গুলো পূরণ করতে পেরেছে। ভিডিওটি আসার পর থেকে আমরা দুই ভাই যেখানেই যাই পরিচিতজনরা ‘বেয়াইনসাব’ বলে ডাকে! বিষয়টি খুব এনজয়েবল।’ প্রীতমের সঙ্গে প্রতীকের করা কিছু গান রয়েছে। সঙ্গে বাড়তি পাওনা মজাদার মিউজিক ভিডিও। এদিকে খেলাধুলার ব্যাপারে ছোটভাই প্রীতমের ঘোর অনীহা। বড় ভাইয়ের পছন্দের ফুটবল দল ব্রাজিল হলেও ছোট ভাইয়ের তেমন পছন্দের কোনো দল নেই। প্রতীক হাসান ফুটবল দলকে ভালোবেসে ‘ব্রাজিল নাকি আর্জেন্টিনা’ গানটিও গেয়েছিলেন। ক্রিকেটের ব্যাপারেও প্রীতমের আগ্রহ নেই । তার আগ্রহ পড়ে থাকে গেজেটে বিভিন্ন গেমসের খেলার মধ্যে। মাঝখানে করা গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে হলো প্রতীক নাকি প্রীতমের?  ‘হা হা হা...বাস্তবে এখনো তেমন ঘটেনি।’ প্রতীক হাসানের উত্তর। ‘এফডিসিতে সেট বসিয়ে গানটির দৃশ্যে ধারণ করা হয়। ভিডিওটি নির্মাণ করেছেন তানিক রহমান অংশু। গানটিতে আমাদের দুই ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ডের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন টয়া। মজার চরিত্রে অভিনয় করেছেন চাষী আলম ও মুকিত জাকারিয়া। আর একটি বিশেষ দৃশ্যে হাজির হয়েছেন সংগীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ।’ এ প্রসঙ্গে টেনে প্রীতম হাসান বলেন, ‘আমি সব সময় নতুন কথা এবং মজার মজার বিষয় নিয়ে গান করতে পছন্দ করতে পছন্দ করি। গানের গল্পের সঙ্গে মিল রেখেই অংশু ভাই ভিডিওটি বানিয়েছেন।’

দেবী ছবিতে মমতাজের কণ্ঠে ‘দোয়েল পাখি’ গানটির কম্পোজিশন প্রীতমের করা। কিন্তু ছবিতে এই গানটি ব্যবহার করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে মন খারাপ হয়েছিল? হালকা উত্তর প্রীতমের ‘একটু!’। প্রতীককে প্রশ্ন করা হলো, গায়ক, মিউজিশিয়ান নাকি অভিনেতা হিসেবে প্রীতম ভালো? ‘নিজের ভাই বলে বলছি না, অনেক মেধাবী সংগীত পরিচালক সে। গায়কিও দুর্দান্ত। আর ছোটবেলা থেকেই তো ওর গানের প্রতি ঝোঁক।

সবাই যখন তার কাজের প্রশংসা করে খুব গর্ব হয়।’ বড় ভাই প্রতীক বিভিন্ন বিষয়ে কেমন সহযোগিতা করে?

প্রীতম বলেন, ‘ভাইয়া আর আমি বন্ধুর মতো। তিনি জীবনের সবক্ষেত্রে আমার পরামর্শদাতা। সব সময়ই আমাকে আগলে রাখেন। ভাইয়ার কাছ থেকে তো গানের অনেক কিছুই শিখেছি।’ প্রীতমের স্বপ্ন নতুন প্রজন্মের জন্য আন্তর্জাতিক মানের গান করা। বাউলশিল্পী ও আন্তর্জাতিক শিল্পীদের নিয়ে যৌথ কাজ করার ইচ্ছা আছে তার। দীর্ঘ আড্ডায় দুই ভাইয়ের মধ্যে অ™ভুত কিছু বিষয় খুঁজে পাওয়া গেল। দুই ভাই খুবই আড্ডাপ্রিয় ও মিশুক হলেও প্রীতম গেজেট বান্ধব। মোবাইল আর কম্পিউটার প্রযুক্তির মধ্যে সারাক্ষণ ডুবে থাকে সে। আর তার একটি স্কোয়াড আছে যেটিতে সৌভিক, হৃদি, সাফা, টয়া, নুহাশ, সিয়ামসহ রয়েছে অনেকেই। গেজেট, তাদের সঙ্গে আড্ডা আর মাস্তিতে কেটে যায় প্রীতমের সারাদিন। বড় ভাই হিসেবে প্রতীক অনেক বেশি দায়িত্বশীল। গান গাওয়া, মা-ভাই আর স্টেজ শো নিয়ে থাকেন ব্যস্ত। কথায় কথায় সময় পার হতে চলল। আড্ডার সন্ধিক্ষণে এসে সব কথার ইতি টানতে হলো...

 

সর্বশেষ খবর