শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

‘সমঝোতা ও বিশ্বস্ততা সম্পর্কের মূল ভিত’

‘সমঝোতা ও বিশ্বস্ততা সম্পর্কের মূল ভিত’

জনপ্রিয়তার দিক থেকে কেউ কারও থেকে কম নন! থিয়েটার, টিভিঅঙ্গন কিংবা চলচ্চিত্রে এই দুই খ্যাতিমান শিল্পীর রয়েছে দৃপ্ত পদচারণা। এই দুই গুণীজন হলেন সৈয়দ হাসান ইমাম ও লায়লা হাসান। সাংস্কৃতিক বিনির্মাণে ষাটের দশক থেকে বর্তমানের সেতুবন্ধনে এই দুজনের রয়েছে অসামান্য ভূমিকা। সৈয়দ হাসান ইমাম একাধারে বাংলাদেশের একজন শক্তিশালী অভিনেতা, আবৃত্তিকার, স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব। অন্যদিকে তার সহধর্মিণী লায়লা হাসান অভিনয় ও নৃত্যাঙ্গনে সর্বদা সপ্রতিভ। দেশীয় নৃত্যের প্রসারে যার রয়েছে অদ্বিতীয় ভূমিকা। দুজনই একই সুতোয় গাঁথা। এবারের বাংলাদেশ প্রতিদিনের শোবিজ বিভাগের আড্ডা আয়োজনের অতিথি তারা দুজন। তাদের সঙ্গে এক সন্ধ্যায় জমে ওঠে আড্ডা। সেই প্রাণবন্ত আড্ডা পাঠকের জন্য তুলে ধরেছেন- পান্থ আফজাল

ছবি : রাফিয়া আহমেদ

 

তারকা দম্পতি শ্রদ্ধেয় সৈয়দ হাসান ইমাম ও লায়লা হাসানের সঙ্গে আড্ডার আয়োজনটা ছিল হঠাৎ করেই। গতানুগতিক ধারাকে ভেঙে আড্ডার ভেন্যু নির্ধারিত হয় স্বয়ং অতিথির বাসায়। সেদিন আড্ডার নিমিত্তে মগবাজারে অবস্থিত অতিথির বাসা অভিমুখে যেতে শুরু হয় তুমুল ঝড়ো বৃষ্টি। কী আর করা! পুরোপুরি কাকভেজা হয়ে নির্দিষ্ট সময়েই শোবিজ টিম হাজির তাদের বাসায়। লিফট থেকে ৭ তলায় নেমেই বাইরের দৃশ্য দেখে আমরা তো অবাক। দরজার বাইরে থরে থরে সাজানো-শোভিত এই দুই গুণীর অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। একটু লক্ষ করে নিচের সিঁড়ির দিকে চোখ দিতেই ধরা পড়ল সাজানো আরও বেশ কিছু পুরস্কার, সম্মাননা, ছবি আর বিভিন্ন ধরনের পোর্ট্রটে। বাইরের পুরো অংশের দেয়ালজুড়ে একে একে সাজানো ওয়ালম্যাট, তাদের ছবি ও পোর্ট্রেট। কলিংবেল বাজাতেই ভিতর থেকে দরজা খুলে দিলেন লায়লা হাসান নিজেই। হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানালেন। ভিতরে প্রবেশ করেই দ্বিগুণ অবাক হওয়ার মতো অবস্থা হলো। একটি সাজানো-পরিপাটি ফ্ল্যাটে এই দম্পতির সুখের আয়োজন। অনেকক্ষণ চোখ আটকে রইল চারপাশের দেয়ালে সাঁটানো ছবিগুলোতে। দীর্ঘ জীবনে অর্জিত তাদের অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা বিভিন্নভাবে সাজানো রয়েছে ঘরের আঙিনাজুড়ে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে হাসান ইমামের হাস্যোজ্জ্বল মুহূর্তের ছবির আশপাশে শোভা পাচ্ছে এই সুখী তারকা দম্পতির ফ্রেমবন্দী ছবি। চারপাশের দেয়ালজুড়ে সাঁটানো হাসান ইমামের সঙ্গে তোলা ইন্দিরা গান্ধী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, অর্মত্য সেন, সত্যজিৎ রায়ের ছবিসহ মা ও সহধর্মিণীর অসংখ্য স্মৃতিময় মুহূর্তের ছবি। সুন্দর ও পরিপাটি ফ্ল্যাটের কিছু স্থানে শোভিত রয়েছে এই তারকাদম্পতির অসংখ্য অর্জন, সার্টিফিকেট আর এন্টিক শোপিস। একদিকে তাদের মেয়ের আঁকা ফ্রেমবন্দী একটি ছবিও টানানো দেয়ালে। চোখ বুলিয়ে ঘরের আশপাশ দেখার মুহূর্তে হাজির হলেন অফুরন্ত প্রাণশক্তি ও হাসিমাখা মুখের সুপুরুষ সৈয়দ হাসান ইমাম। জম্পেস আড্ডার আগে এই দম্পতিকে নিয়ে চলল ফটোশেসন। এরপর শুরু হলো শোবিজ আড্ডা। আড্ডার শুরুটা করলেন হাসান ইমাম নিজেই। বয়সী দুরন্ত এই যুবা বয়স প্রসঙ্গ নিয়ে কথা উঠতেই বললেন, ‘রবীন্দ্রনাথকে তো কিছুতেই ছাড়িয়ে যেতে পারব না, তবে বয়সকে অতিক্রম করেছি...হা হা হা। সে তো ৮০ বছর বেঁচেছিলেন। আর আমার এখন ৮৪!’ কথার এক ফাঁকে পকেট থেকে মুঠোফোন বের করে তিনি ইউটিউবে সার্চ দিয়ে তার গাওয়া রবীন্দ্রসংগীতের একটি ভিডিও দেখালেন। কবিগুরুর ‘দাঁড়িয়ে আছো তুমি আমার...’ গানটি তিনি গেয়েছেন তার দরদভরা কণ্ঠে। ‘এটি ৮১ বছর বয়সে গাওয়া। নিউইয়র্কে উদীচীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে গানটি গেয়েছিলাম। তখন ভিডিওটি মোবাইলে রেকর্ড করা হয়।’ আপনার শৈশব নিয়ে জানতে চাই? ‘শৈশব তো অনেক লম্বা। নানান কাজ করেছি। দুষ্টু ও দুরন্ত ছিলাম; পুকুরে সাঁতার কাটতাম। বহুবার তো মরতে মরতে বেঁচে এসেছি। পানিতে ডোবা থেকে, সাপে কামড় কিংবা আগুনে পোড়া থেকে। রাজনৈতিক কারণে মায়ের বুকে রিভলবার ঠেকিয়ে অনেকেই আমার মৃত্যুর হুমকি দিয়েছে। এত বড় ইতিহাস তো আর অল্প কথায় শেষ হবে না।’ ছাত্রজীবনে আপনি তো ভালো গানও করতেন? ‘১৯৫২ সালে অল ইন্ডিয়া ইয়ুথ ফেস্টিভ্যালে রবীন্দ্রসংগীতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলাম। ১৯৫৫ সালে কলেজের অনুষ্ঠানে গান শুনে দ্বীজেন মুখোপাধ্যায় আমাকে বিনা পারিশ্রমিকে গান শেখানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।’ কথার ফাঁকেই লায়লা হাসান তার পাশে এসে বসলেন। বাংলাদেশের জনপ্রিয় কোরিওগ্রাফার, নৃত্যশিল্পী এবং অভিনেত্রী তিনি। বাংলাদেশ সরকার শিল্পক্ষেত্রে তার অবদানের কথা চিন্তা করে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করেন। লায়লা হাসান পোশাক পরিধানের দিক দিয়ে বরাবরই কিছুটা ব্যতিক্রম। স্টাইল আর ফ্যাশনে তার কাছে আজকের তারুণ্যও হার মানতে বাধ্য। চিরতারুণ্যে ভরপুর এই তারকা আকাশি, ঘিয়ে রং আর সবুজাভ মিশেলের প্যাটার্ন শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করে পরেছেন ঘিয়ে রঙের ব্লাউজ। হাতে ও গলায় শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করা অলংকার। মাথার খোঁপাতে গুঁজেছেন সাদাফুল, কপালে খয়েরি টিপ। চোখে এঁটেছেন সাদা ফ্রেমের চশমা। অপলক এই গুণীর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলাম, আপনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমির প্রথম দিককার শিল্পী। নকশি কাঁথার মাঠ থেকে শুরু করে একাধিক নৃত্যনাট্যে আপনি অংশগ্রহণ করেছেন। সে অভিজ্ঞতার কথা বলবেন কী? ‘সেই ৬২ তে পাস করে বেরিয়েছি! আমি দ্বিতীয় ব্যাচের ছিলাম। তবে তারও আগে ছোটবেলা থেকেই আমি নাচ করেছি। তখন আমার বয়স শুনেছি আড়াই থেকে তিন বছর। তখন তো রেডিওই একমাত্র মাধ্যম ছিল। আমার নানা খান বাহাদুর আলী আহমেদ খান ছিলেন এম এল এ এর কাছ থেকে এই বিষয়ে শোনা। কোনো রকম বাজনা বাজলেই আমি নাকি নাচতাম। এই দেখে বড়দাদু আম্মুকে বলতেন তোর মেয়েটা বড় হলে খুব ভালো নাচবে। আমার প্রথম অনুষ্ঠানে আমি যখন নাচি তখন আমাকে দেখা যায়নি। একটি ডাইনিং টেবিলের ওপরে তখন আমাকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। ছোটবেলায় অনেক গোল্ড মেডেল পেয়েছিলাম। আব্বু সব সময় বলতেন, তোমার হাতেখড়ি তো হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শ্রী মণিবর্ধনের কাছে, তার কথা তো কখনই বল না। আর রেডিওতে প্রথম কিন্তু আমি খেলাঘরে আবৃত্তি করি।’ মুখে হাসির রেখা টেনে সহধর্মিণীর কথা শুনছিলেন হাসান ইমাম। তিনি পরেছেন ঘিয়ে রঙের পাঞ্জাবির সঙ্গে ঢিলেঢালা ধরনের সাদা পায়জামা। স্বাধীনতা আন্দোলনে ‘স্টপ জেনোসাইড’ এবং ‘রূপান্তরের গান’ এর ভূমিকা কেমন ছিল? হাসান ইমামের সপ্রতিভ উত্তর, ‘মুক্তিযুদ্ধে আমাদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র দলিল ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ এবং স্টপ জেনোসাইড’ নির্মিত হয়। এটি দেখে অনেক বিপক্ষ দেশের জনগণ উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তখন মুক্তিকামী শিল্পী সংস্থায় আমিসহ ছিল ওয়াহিদুল হক, সন্জীদা খাতুন এবং মুস্তফা মনোয়ার। আমরা যুবকদের নিয়ে স্কোয়াড গঠন করেছিলাম। আর ’৪৭-৭১ এর পটভূমিতে করা ‘রূপান্তরের গান’ এর ধারা বর্ণনা তখন আমি করতাম। রচনায় ছিল শাহরিয়ার কবির। রূপান্তরের গান নিয়ে তখন আন্তর্জাতিক সম্মেলনেও যোগ দিয়েছিলাম।’ আর ‘বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজ’? ‘১৯৭১ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে আমাকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয় শিল্পীদের প্রতিবাদী সংগঠন ‘বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজ’। সবাই তখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে পাকিস্তান বেতার ও টেলিভিশনের অনুষ্ঠান বর্জন করি। গণআন্দোলনের চাপে পাকিস্তানি সরকার ৮ মার্চ থেকে বেতার টেলিভিশনের দায়িত্ব বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজের হাতে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।’ তখন তো সালেহ আহমেদ নামে সংবাদ পাঠ করতেন? সায় দিলেন হাসান ইমাম। সেসময় আমাদের সমর্থন দিয়েছিল কারা? ‘সারা পৃথিবী তখন দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। তবে মজার ব্যাপার হলো, যেসব রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান আমাদের বিপক্ষে ছিল তাদের জনগণ কিন্তু আমাদের সমর্থন করেছে তখন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শিল্পী, বিশেষ করে বিটলসের শিল্পীরা আমাদের সমর্থন করেছে, পাশে থেকেছে।’ তার সঙ্গে কথা শেষ হতেই দুজনের পরিচয়, পরিণয়, দাম্পত্য জীবনের বোঝাপড়া, বন্ধুত্ব নিয়ে জানতে চাইলে লায়লা হাসান উত্তর দিলেন, ‘আমাদের প্রথম পরিচয় একসঙ্গে ঘটেনি। আমি তাকে আগে দেখেছি। রবীন্দ্র শতবর্ষে দুজনের দেখা হয়েছিল।’ স্ত্রীর কথাকে কেড়ে নিয়ে হাসান ইমাম মুচকি হেসে কিছুটা মজা করেই বললেন, ‘ও তখন বাচ্চা, এই বাচ্চা মেয়ের কথা আমি তখন ভাবিনি; মাথার ওপর দিয়ে চলে যেত ...হা হা হা। অবশ্য পরে তাকে দেখেছি। ও আমাকে প্রথম দেখেছে ১৯৬১তে। পরে আমরা একসঙ্গে ভয়েজ আমেরিকায় নাটক করেছি।’ লায়লা হাসান কথার পিঠে বলে উঠলেন, ‘তবে এই বিষয়টি কাছের মানুষরা ইচ্ছে করেই করেছিলেন। তখন তারা তার জন্য পাত্র খুঁজছিলেন। তবে তাকে এমনিতেই চিনতাম। তখন তিনি ছবির হিরো। নাটকে দেখেছি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখেছি। রবীন্দ্র শতবার্ষিকীতে উনি ৩টি নাটকে অভিনয় করলেন-তাসের দেশ, রাজা-রানী আর রক্তকরবী। তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটা কিছুটা যড়যন্ত্রের মতোই ছিল...হা হা হা।’ স্যার আপনাকে কোনোদিন চিঠি লিখিছিলেন? ‘লিখেছিলেন ১টা। তখন চায়নাতে ছিলাম, এক ডেলিগেটে। একদিন আমার মাথা ধরেছিল। বসে ছিলাম। সে সময় খুরশিদা আলম আপা এসে হাতে চিঠিটা গুঁজে দিয়ে বললেন, নাও এটা, তোমার মাথা ধরা সেরে যাবে। তবে সেই চিঠির উত্তরটা আমি আজও দেইনি।’ হেসে হেসে উত্তর দিলেন লায়লা হাসান। ১৯৬৫ তে সৈয়দ হাসান ইমামের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন লায়লা। একে একে কোলজুড়ে আসে ৩টি সন্তান। সম্পর্কের এই দীর্ঘ পথচলার রহস্য জানতে চাইলে এই গুণী অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী বলেন, ‘এখনকার ছেলেমেয়েদের ইগো সমস্যাটা দূর করতে হবে। ভাবতাম বিয়ের পর, এটাই আমার ঠিকানা, এটাই আমার ঘর। আমি আমার মেয়েদেরও তা-ই শিখিয়েছি।’ নানা সংগঠনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। নৃত্যশিল্পী সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত তিনি। অগণিত সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি ও পুরস্কার পেয়েছেন লায়লা হাসান। ‘আমি বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য ও ফেলো, এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য, উদীচীর উপদেষ্টা, খেলাঘরের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে আছি। তবে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি হিসেবে এখন আছি আর সেক্টর কমান্ডার ফোরামের একাত্তরের নারী পরিষদের সভাপতি হিসেবে থাকতে পেরে আমি নিজে গর্ববোধ করি।’ একটানা বলে গেলেন লায়লা হাসান। বিটিভিতে যখন সরাসরি নাটক প্রচার করত সেই সময় লায়লা হাসান প্রথম টিভি নাটকে অভিনয় করেন। নিজের ঐতিহাসিক নাটকের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে লায়লা হাসান মোস্তাফিজুর রহমানের ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’ ও ‘রক্তকরবী’ নাটকের কথা বলেন। ‘বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম ধারাবাহিক নাটক দম্পতি’তে আমার সরব উপস্থিতি ছিল। গৌতম ঘোষের ‘মনের মানুষ’, রিজভীর নির্দেশনায় রবি ঠাকুরের ‘ছুটি’, সোহেল আরমানের ‘এই তো প্রেম’, কলকাতায় ‘বিনি সুতোর মালা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি। সামনে হাসান ইমামের সঙ্গে জুটি হয়ে করছি ‘মিশন এক্সট্রিম’সহ শহীদুল হক খানের একটি চলচ্চিত্র।’ তবে সবকিছু ছাপিয়ে নৃত্যশিল্পী হিসেবে পরিচয় দিতেই তিনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন লায়লা নার্গিস রোজী। তার বেশি ভালোলাগে নিজেকে স্বাধীন বাংলা বেতারের একজন শব্দসৈনিক হিসেবে পরিচয় দিতে। তিনি বেশি পরিচিতি পান আশির দশকে বিটিভিতে ছোটদের নাচ শেখার অনুষ্ঠান ‘রুমঝুম’ এর মাধ্যমে। এটি থেকেই বর্তমানের জনপ্রিয় তারকা ঈশিতা, তারিন, শ্রাবন্তী, রিয়া এবং রিচি উঠে আসে। অনুষ্ঠানটি তিনি এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন। ১৯৯০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন নাচ ও অভিনয়ের স্কুল ‘নটরাজ’। ছায়ানটে তার হাত দিয়ে নাচ শেখার শুরু হয়েছিল। শহীদ মিনারে নৃত্য পরিবেশনের শুরুটাসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃত্যকলা বিভাগ চালু করার পেছনে তার ছিল অগ্রণী ভূমিকা। আড্ডা শেষে দুজনের কাছেই একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জাদু কী? ‘সমঝোতা ও বিশ্বস্ততা হচ্ছে সম্পর্কের মূল ভিত।’ একসঙ্গে উত্তরটা দিলেন।

সর্বশেষ খবর