বুধবার, ২০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ঘরেই শপিং ঘরেই রান্না

ঘরেই শপিং ঘরেই রান্না

পোশাক ও ছবি : রঙ বাংলাদেশ

ঈদুল ফিতর দোরগোড়ায়। একেবারেই ভিন্ন আঙ্গিকে উদযাপন হবে এবারের ঈদ উৎসব। করোনাভাইরাস আতঙ্কে দেশের বড় বড় সব শপিং মল এখন বন্ধ। তাই বলে তো ঈদের আমেজ থেমে থাকবে না। বুদ্ধি খাটিয়ে বাড়িতেও আনা যায় উৎসবের আবহ। সেক্ষেত্রে ঈদ শপিং হবে অনলাইনে। আর রান্নাবান্না হবে ঘরেই।

 

কদিন বাদে ঈদুল ফিতর। তবে এবারের ঈদ উদযাপন হবে একেবারেই ভিন্নভাবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এবারের ঈদের চিত্রটি হবে ভিন্ন। প্রতিবারের মতো প্রিয়জন, বন্ধুবান্ধব ও স্বজনদের সঙ্গে মেতে ওঠা যাবে না ঈদের আনন্দে। তাই বাড়িতেই আনতে হবে উৎসবের আবহ। চিন্তার কিছু নেই, বুদ্ধি খাটিয়ে বাড়িতেও আনা যাবে উৎসবের আমেজ। সেক্ষেত্রে ঈদ শপিং হতে পারে অনলাইন শপে। আর শপিং না চাইলে ঘরে থাকা পোশাকে একটু নতুনত্ব যোগ করে, নতুনভাবে পরে সেটাকে বানিয়ে ফেলা যায় ঈদপোশাক। ঈদের রান্নার আয়োজন হোক ঘরেই, আপনজনের সঙ্গে।

এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ঈদের কেনাকাটা। তবে সেটা শপিংমলগুলোয় ভিড় ঠেলে নয়, অনলাইন শপে। দেশের নামিদামি ফ্যাশন হাউসগুলো করোনাকালে বন্ধ রেখেছে তাদের আউটলেট। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে অনলাইন শপগুলো তুলেছে তাদের ঈদপোশাক। শপগুলোয় অর্ডার করলে ঘরে চলে আসবে ঈদের নতুন পোশাক। বিভিন্ন অনলাইন শপ স্ক্রল করে দেখা গেল রকমফের পোশাকের সমাহার। ঈদ আয়োজনে অনলাইন শপে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোর ঈদ আয়োজনে রয়েছে নানা রকম শাড়ি। বর্তমান ট্রেন্ড এমনিতেই মিক্স অ্যান্ড ম্যাচিংয়ের। কাঁথা, ব্লক, অ্যাসিড পেইন্ট সবকিছুই একসঙ্গে শাড়িতে জায়গা করে নিয়েছে। আর এতেই একটি শাড়ি হয়ে উঠেছে অনবদ্য সৌন্দর্যে ভরপুর। বেশ কিছুকাল আগেও শুধু কটনই ছিল ঈদের শাড়ি। সঙ্গে যুক্ত হতো মসলিন, জামদানির বাহার। বর্তমানে সেই আদল বদলে জরি, পুঁতি, চুমকির আলোড়নে তৈরি করা হচ্ছে আটপৌরে মসলিন, জামদানি, বেনারসি আর জর্জেটের সাম্রাজ্য। রঙে এসেছে উৎসবের আমেজ। অনলাইন শপগুলোয় শাড়ির পাশাপাশি রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সালোয়ার-কামিজ। পোশাকে পাশ্চাত্য বা প্রাচ্য যার আবির্ভাবই থাকুক, সালোয়ার-কামিজের প্রতি ঝোঁকটা কিন্তু মেয়েদের আছেই। তবে এই কামিজগুলোর একটি কমন বৈশিষ্ট্য থাকছে, লম্বা বা থ্রি কোয়ার্টার হাতা আর বেশির ভাগের আবার হাই নেক। অধিকাংশ পোশাকে থাকছে ফুলেল প্রিন্ট, একরঙা বা উভয়ের মিশেল।

অনলাইন শপগুলোয় মেয়েদের পোশাকের পাশাপাশি ছেলেদের ঈদ পাঞ্জাবিও চলছে বেশ। আর ঈদ পাঞ্জাবির আবেদন সব বয়সী পুরুষের কাছেই সমান। তাই তো আধুনিক ডিজাইনের এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের পাঞ্জাবির খোঁজ করে সবাই। অন্য সব সময়ের মতো সুতি পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। এর বাইরেও সিল্ক, মসলিন, লেলিন ইত্যাদি ফেব্রিকের কালারফুল কালেকশন রয়েছে পছন্দের শীর্ষে। পাঞ্জাবির পাশাপাশি কোটিও চলছে দেদার। অনলাইন শপ ঘেঁটে বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের ঈদের পোশাকটি।

এ ছাড়া ঘরে থাকা পোশাকে একটু নতুন কিছু যোগ করে, নতুনভাবে পরে সেটাকে বানিয়ে ফেলা যায় ঈদপোশাক। বাড়ির আলমারিতে অনেক পোশাক থাকে, যেগুলো সেভাবে পরা হয়নি, কিছু হয়তো ছুঁয়েই দেখা হয়নি। সেগুলোই হতে পারে ঈদ ফ্যাশনের প্রধান অনুষঙ্গ। সেক্ষেত্রে মিক্সড অ্যান্ড ম্যাচিং স্টাইল হতে পারে আদর্শ। যাতে পুরনো শাড়িটি পরলেও তাতে যেন আসে নতুনের আবহ। স্টাইলে একটু নতুনত্ব আনতে সেখান থেকেই একটি কটি বেছে নিয়ে পরবেন শাড়ির ওপর। কটির রং শাড়ির রঙের বিপরীত হবে। জামদানি তো কমবেশি অনেকের সংগ্রহেই রয়েছে। তবে সবার আলমারিতে কোটি নাও থাকতে পারে। হাতার কাটে নতুনত্ব আছে এমন টপ বা ব্লাউজ বেছে নিতে পারেন। একটু পুরনো টপ হলেও ক্ষতি নেই। আর তা যদি না থাকে হাতে, তো এখনো অনেক সময় আছে। অন্য কোনো পোশাকে ফুলেল নকশার হাতা থাকলে তা খুলে টপের হাতায় জোড়া লাগিয়ে নিতে পারেন। বাড়িতে সেলাই মেশিন থাকলে তো কথাই নেই, তবে সুই-সুতা দিয়েও কিন্তু হাতা জোড়া লাগানোর কাজটি করা যায়। আবার পুরো সেট একসঙ্গে না পরে এক সেটের পাজামা, আরেক সেটের কামিজের সঙ্গে পরেও তৈরি হতে পারে নতুন ধারার স্টাইল। তার ওপর লম্বা কোটি বা একটা স্কার্ফ জড়িয়ে নিলেই হয়ে যাবে নতুন ফ্যাশন।

এবারের ঈদ যেহেতু ঘরে বসেই হবে। সেক্ষেত্রে ঈদের সাজ হতে পারে হালকা ধাঁচের। ঈদে ন্যাচারাল মেকআপই ভালো লাগবে, দিনের বেলায় ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পর কমপ্যাক্ট পাউডার লাগিয়ে নিন। এ ছাড়া টিনটেড ফাউন্ডেশনও লাগাতে পারেন। এক্ষেত্রে ন্যাচারাল লুক বজায় থাকবে। রাতের বেলা বা বিকালের সাজে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে লিক্যুইড বা ক্রিম ওয়াটার বেজড ফাউন্ডেশন কপাল, নাক, পুরো মুখ ও গলায় লাগিয়ে ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। ত্বকে যদি দাগ থাকে, সে ক্ষেত্রে প্রথমে কনসিলার বা ত্বকের রঙের চেয়ে এক শেড হালকা ফাউন্ডেশন দাগগুলোর ওপর দিয়ে আঙ্গুলের সাহায্যে মিলিয়ে নিন। তারপর কমপ্যাক্ট পাউডার এবং ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন। দিনের সাজে হালকা গয়না মানানসই। শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজ ও ফতুয়ার সঙ্গে চেইনের সঙ্গে হালকা ধরনের পাথরের সেট, সঙ্গে কানে ছোট দুল পরতে পারেন। কানে ছোট চুলের সঙ্গে গলায় লম্বা ধরনের মালা। কানের দুলটা যদি ভারী পরেন তবে গলায় কিছু না পরাই ভালো।

ঈদ কাটবে ঘরে, বাসাজুড়ে তার আমেজ না থাকলে কি চলবে? তাই ঈদে ঘরেই রান্না করতে পারেন মুখরোচক সব খাবার। পরিবারের সবার পছন্দের ডিশ থাকতে পারে এসব খাবারের আয়োজনে। এদিকে ঈদের দিন বাড়ির ছাদেই পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে করা যেতে পারে ছোট্ট বারবিকিউ আয়োজন। আর আনন্দ আড্ডায় পরিবারের সবার ঈদের স্মৃতিচারণ নিয়ে খোশগল্পে মেতে উঠতে পারেন। পরিবারের সবাই জানবে অজানা গল্প। তবে তা সামাজিক দূরত্ব মেনেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর