মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

সাতেই থাকছে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সাতেই থাকছে বাংলাদেশ

রাতে ফোনে পাওয়া গেল না বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে। জানা গেল না তার কোনো কমেন্টস। দুবাই থেকে দেশে ফিরে বিসিবি সভাপতি বেশ ঘটা করে বলেছিলেন, ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ এখন পাঁচ নম্বরে। বিসিবি সভাপতির বক্তব্যের পর র‌্যাঙ্কিংয়ের সংবাদটি বেশ আলোড়ন তুলে দেশব্যাপী। বিসিবি সভাপতির বক্তব্য যে ভুল, সেটা পরিষ্কার হয় আইসিসির মিডিয়া ম্যানেজার সামিউল হাসানের ই-মেইল পাওয়ার পর। আইসিসির মিডিয়া ম্যানেজার মেইলে র‌্যাঙ্কিং বিষয়টির পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেন। ব্যাখ্যায় দেখা যাচ্ছে, গত তিন মৌসুমের পারফরম্যান্সের হিসাবে ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ৫ নয়, আগের ৭ নম্বর অবস্থানেই থাকছে। অবশ্য, ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ দুই মৌসুমের ওয়ানডে সিরিজগুলোর পারফরম্যান্স হিসাব করলে বাংলাদেশের অবস্থান র‌্যাঙ্কিংয়ে ৫ নম্বরে। ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিং সাধারণত করা হয় তিন মৌসুমের মেয়াদি চক্রে। সেই মোতাবেক ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ তিন মৌসুমের পরিসংখ্যান হিসাব করে ২ মে যে র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করবে আইসিসি, তাতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ র‌্যাঙ্কিংয়ে পূর্ব অবস্থান ৭ নম্বরেই থাকছে।

১৯৮৬ সাল থেকে ওয়ানডে ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে স্ট্যাটাস পায় ১৯৯৯ সালে এবং টেস্ট স্ট্যাটাস পায় ২০০০ সালে। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে নিয়মিত ওয়ানডে ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছে তাই। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মাশরাফি বিন মর্তুজা দলের নেতৃত্ব পাওয়ার পর বদলে যেতে থাকে পারফরম্যান্স। জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে যাত্রা শুরু। ২০১৫ সাল শেষ করে জিম্বাবুয়েকে ফের হোয়াইটওয়াশ করে। এর মধ্যে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেন মাশরাফিরা। এরপর ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করেন পাকিস্তানকে। ওয়ানডে সিরিজ জিতে নেয় ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সব মিলিয়ে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ১৪টি ম্যাচ জিতে। এই পারফরম্যান্সের বিচারেই বাংলাদেশের র‌্যাঙ্কিং ৫। এটাকেই ঘটা করে প্রচার করেন বিসিবি সভাপতি। র্যাঙ্কিং নিয়ে দেশে ফিরে কি বলেছিলেন, ‘আমরা জানতাম আমাদের র‌্যাঙ্কিং ৭ নম্বর। পরে আইসিসি থেকে আমাকে জানানো হয় আমাদের অবস্থান ৫ নম্বরে। বাংলাদেশ এই প্রথম ৫ নম্বরে উঠল।’ বিসিবি সভাপতি র‌্যাঙ্কিং নিয়ে কি বুঝেছেন, সেটা ‘রহস্যময়’ হয়ে থাকল।

সাধারণত ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিং করা হয় তিন মৌসুমের বিবেচনায়। বাংলাদেশের বর্তমান র‌্যাঙ্কিং ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫ এবং ২০১৫-১৬ মৌসুমের পরিসংখ্যান থেকে। ২০১৫-১৬ মৌসুম দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশ। র‌্যাঙ্কিংয়ে সাধারণত প্রথম দুই মৌসুমের পারফরম্যান্সের ৫০ ভাগ এবং শেষ মৌসুমের শতভাগ পয়েন্ট ধরা হয়। ২০১৫-১৬ মৌসুমে দুর্দান্ত খেলার হিসেবে বাংলাদেশ পাঁচ নম্বরে। পাঁচ নম্বরে জায়গা নেওয়া থেকে বিসিবি সভাপতি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের চূড়ান্ত পর্বে সরাসরি খেলবে বাংলাদেশ। এ জন্য ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ আটে থাকতে হবে। পাঁচে ওঠার ভাবনাতেই বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলতে হবে না। কিন্তু আদৌ কি তাই?

র‌্যাঙ্কিং করা হয় তিন বছরের প্রথম দুই বছরের ৫০ ভাগ এবং শেষ বছরের শতভাগ পয়েন্ট নিয়ে। চলতি মৌসুমের পয়েন্টের হিসেবে বাংলাদেশ পঞ্চম স্থানে। এই ধারাবাহিকতা যদি থাকে তাহলে বাংলাদেশ ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলবে সরাসরি। আগেই জানানো হয়েছে ইংল্যান্ড সরাসরি বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলবে। ১০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ তিন মৌসুমের পারফরম্যান্সের প্রথম দুই বছরের ৫০ ভাগ পয়েন্ট ধরা হবে হিসাবে। তাতে এ বছর যে ভালো খেলেছে বাংলাদেশ, সেটা গণনায় শতভাগ নয়, নেমে আসবে ৫০ ভাগে। তাই বিশ্বকাপ ক্রিকেটের চূড়ান্ত পর্বে খেলার বিষয়টি নিশ্চিত নয়। তবে সেরা আটে থাকলে খেলবে। অবশ্য এ জন্য আগামী ১৭ মাস সেরাটা খেলতে হবে বাংলাদেশকে। তবে আশার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ যে ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলছে, তাতে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে সরাসরি খেলার সম্ভাবনাই বেশি। যাই হোক, ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিং নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি করার দায়ভার নেবে কে? বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নেবেন কি?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর