শনিবার, ৪ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ক্রুইফ এখনো জয়ের স্বপ্ন দেখেন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রুইফ এখনো জয়ের স্বপ্ন দেখেন

দ্বিতীয়বার দায়িত্ব নিয়ে হারানো গৌরব ফেরানোর কথা বলেছিলেন লোডডিক ক্রুইফ। বলেছিলেন এশিয়ান কাপের প্লে-অফে বাছাইপর্বে তাজিকিস্তানের বিপক্ষে ভালো ফুটবল খেলবে বাংলাদেশ। ক্রুইফ কি বাস্তবের কঠিন জমিনে থেকে না, বাফুফের কর্তা ব্যক্তিদের মন জোগাতে বলেছিলেন? দুশানবেতে তাজিকদের গতিশীল ফুটবলের কাছে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর অনেকেই এখন ক্রুইফের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়ায় বাছাইপর্বে খেলা সংশয়ের বেড়াজালে আটকে পড়েছে। গৌরব ফিরিয়ে আনতে ৭ জুনের ফিরতি ম্যাচে ৬-০ গোলে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। সেটা কি আদৌ সম্ভব? গত কয়েক বছরের পারফরম্যান্স কিন্তু বলছে, সম্ভাবনা শূন্য শতাংশ। তারপরও জয়ের স্বপ্ন দেখেন ক্রুইফ। ঘরের মাঠ বলেই কি! সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ব্যর্থতার জন্য সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ক্রুইফকে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। পারফরম্যান্সের গ্রাফ নামতে নামতে তলানিতে এসে ঠাঁই নিয়েছে। সেখান থেকে ওপরে উঠার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে বাফুফে। কিন্তু কোনোভাবেই কিছু হচ্ছে না। প্লে-অফের বাছাইপর্বের ম্যাচ দুটির জন্য বাফুফে ফিরিয়ে আনে ক্রুইফকে। ঢাকায় পা রেখে ক্রুইফ স্বপ্ন দেখার কথা বলেছিলেন ক্রীড়াপ্রেমী জাতিকে। তাজিকিস্তানে যাওয়ার আগেও বলেছিলেন, হারিয়ে যাওয়া গৌরব ফেরাতে জয়ের জন্য খেলবেন। কিন্তু এটা যে স্বপ্ন দেখানো কথা! ৫-০ গোলের ব্যবধান পরিষ্কার করে দিয়েছে। বড় ব্যবধানে হারের পর নিজেকে বাঁচাতেই বোধহয় হাতাশার কথা বললেন কোচ, ‘ম্যাচের ফল খুবই হতাশাজনক। প্রতিপক্ষ খুবই শক্তিশালী। আমি আশা করেছিলাম ২-০ কিংবা ৩-১। কিন্তু তা হয়নি ট্যাকনিক্যাল কারণে।’ ম্যাচে বাংলাদেশ গোল খেয়েছে একটি কর্নারে ও দুটি ফ্রি কিকে। তাতেই পরিষ্কার ক্রুইফবাহিনীর রক্ষণভাগ কতটা কাচ-ভঙ্গুর। রক্ষণভাগের দুর্বলতার কথা বলেছিলেন ২০০৩ সালে বাংলাদেশকে সাফ জেতানো ক্রোয়েশিয়ান কোচ জর্জ কোটান। তখন তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছিলেন ক্রুইফ। বড় ব্যবধানে হারের জন্য অবশ্য কোনো ভণিতা করেননি। তবে আকার ইঙ্গিতে জানিয়েছেন দলের এমন পারফরম্যান্সের কারণ, একাদশের ৫-৬ ফুটবলারের গত ৫-৬ মাস কোনো ধরনের ফুটবল না খেলা। বাহ! ক্রুইফ।

১০ মাস আগে বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্বে ঘরের মাটিতে ১-১ গোলে ড্র করেছিল তাজিকিস্তানের সঙ্গে। এরপর ফিরতি ম্যাচে হেরেছিল ৫-০ গোলে। এবার পুনরায় হারলো একই ব্যবধানে। তাজিকদের পারফরম্যান্সের ভুয়সী প্রশংসা করেছেন ক্রুইফ। মধ্য এশিয়ার দেশ থেকে বাংলাদেশের শেখার আছে বলেন কোচ, ‘প্রতিপক্ষ তাজিকিস্তানকে আমরা ভালোভাবে সামলাতে পারিনি। তাজিকরা অনেক মানসম্পন্ন ফুটবল খেলেছে। তারা নেদারল্যান্ডসের মতো পজিশনাল ফুটবল খেলে। ১০ মাস আগের তাজিকিস্তানের সঙ্গে বর্তমান দলটির খেলার পার্থক্য অনেক। এখান থেকে অনেক শেখার আছে।’ মধ্য এশিয়ার দলটির কাছে এ নিয়ে ৬ বার হারলো বাংলাদেশ। ৭ জুন ফিরতি ম্যাচ। প্রতিপক্ষ হিসেবে মামুনুলরা আন্ডার ডগ, কোনো সন্দেহ নেই। তারপরও ক্রুইফ স্বপ্ন দেখছেন, ‘দুশানবেতে প্রথমার্ধে পরিকল্পিত ফুটবল খেলেছে দল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান তৈরি করে নিয়েছে তারা। ঘরের মাঠে ফিরতি ম্যাচ কঠিন হবে। তারপরও আমরা ট্যাকনিক্যাল ম্যাচ খেলতে চেষ্টা করব। ঘরের মাঠে আমি জিততে চাই। আমরা দেশের কথা মাথায় রেখেই খেলব।’গতকাল ছিল জুমাবার। ফুটবলাররা সবাই দুশানবের একটি মসজিদে নামাজ আদায় করেন।

সর্বশেষ খবর