রবিবার, ৫ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

মুশফিকদের হারালেন মাশরাফিরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মুশফিকদের হারালেন মাশরাফিরা

মুশফিকুর রহিম ৭১ বলে করেছেন ৭৫ রানের দারুণ এক ইনিংস। মাশরাফি বিন মর্তুজা ১০ ওভার বোলিং করেও কোনো উইকেট পাননি। ব্যাট হাতেও মাঠে নামার সুযোগ হয়নি। তারপরেও দিন শেষে জাতীয় দলের দুই অধিনায়কের লড়াইয়ে বিজয়ী মাশরাফি-ই। মুশফিকের মোহামেডানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে তার দল কলাবাগান ক্রীড়া চক্র।

কালকের ম্যাচে জয় পেয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের শেখ জামাল ধানমন্ডিকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে রূপগঞ্জ। ওপেনার আব্দুল মজিদের সেঞ্চুরিতে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ১১২ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে ভিক্টোরিয়া।

মোহামেডান-কলাবাগান ম্যাচে কাল দুই দুটি সেঞ্চুরি হয়েছে। মোহামেডানের হয়ে সেঞ্চুরি করেছেন মুস্তাফিজুর রহমানের হায়দরাবাদের সতীর্থ বিপুল শর্মা। তাই মুস্তাফিজকে দলে না পেলেও বিপুল শর্মাকে পেয়ে লাভই হয়েছে মোহামেডানের। কিন্তু এই সেঞ্চুরিতেও তো জিততে পারেনি মতিঝিলের ঐতিহ্যবাহী দলটি। তাসামুল হকের সেঞ্চুরিতে জিতে গেছে কলাবাগান। রূপগঞ্জের বোলারদের দাপটে কাল মাত্র ১৮৪ রানেই গুটিয়ে যায় শেখ জামালের ইনিংস। সর্বোচ্চ ৪১ রান এসেছে নাজমুস সাদাতের ব্যাট থেকে। রূপগঞ্জের দুই বোলার মুরাদ খান ও তাইজুল ইসলাম নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আলাউদ্দীন বাবু ও নাহিদুল ইসলাম। ১৮৫ রানের সহজ টার্গেটে খেলতে নেমে তিন উইকেট হারিয়েই জিতে যায় রূপগঞ্জ। বল হাতে দাপট দেখানো নাহিদুল ব্যাট হাতেও খেলেছেন ৯২ রানের দারুণ এক ইনিংস। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন জুনায়েদ সিদ্দিক।

ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে নেমে ভিক্টোরিয়ার দুই ওপেনার মিলেই গড়েন  ১৭০ রানের জুটি। মজিদ ১১৭ বলে করেন ১১৮ রান, ফজলে মাহমুদ ৯৮ বলে খেলেন ৭১ রানের ইনিংস। উদ্বোধনী জুটি দাপুটে ব্যাটিং করায় প্রথম ইনিংসে ৩০২ রানের বিশাল স্কোর করে ভিক্টোরিয়া। ব্রাদার্সের নাবিল সামাদ ৫০ রানে নেন চার উইকেট। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৯০ রানেই অলআউট হয়ে যায় ব্রাদার্স। সর্বোচ্চ ৯৩ রান এসেছে অধিনায়ক তুষার ইমরানের ব্যাট থেকে।

কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাটিং করে ২৯০ রানের বড় স্কোর গড়ে মোহামেডান। সর্বোচ্চ ১০০ রান আসে বিপুল শর্মার ব্যাট থেকে। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় খাতায় রান যোগ হওয়ার আগেই উইকেট হারায় কলাবাগান। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেই ১৪০ রান করে হাসানুজ্জামান ও তাসামুল। পঞ্চম উইকেটে তানভীর হায়দারকে সঙ্গে নিয়ে আরেকটি ১২৯ রানের অপরাজিত জুটি গড়েন তাসামুল। এই দুই জুটিই কলাবাগানকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যায়। তাসামুল করেন অপরাজিত ১২৬ রান। হাসানুজ্জামানের ব্যাট থেকে এসেছে ৯৫ রান। এছাড়া অপরাজিত ৫২ রান করেছেন তানভীর। এই জয়ে মাশরাফির কলাবাগানের সুপার লিগে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। দশম রাউন্ড শেষে সুপার লিগ নিশ্চিত করেছে তিন দল— প্রাইম দোলেশ্বর, ভিক্টোরিয়া ও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। শীর্ষে থাকা দোলেশ্বরের পয়েন্ট ১৪, ভিক্টোরিয়া ও রূপগঞ্জের পয়েন্ট ১৩ করে। ১২ করে পয়েন্ট রয়েছে দুই জায়ান্ট আবাহনী ও মোহামেডানের। তবে সুপার লিগ এখনো নিশ্চিত হয়নি তাদের। ১০ করে পয়েন্ট রয়েছে চার দলের— গাজী গ্রুপ, প্রাইম ব্যাংক, কলাবাগান কেসি ও শেখ জামালের। বাকি আছে আরও একটি ম্যাচ। শেষ ম্যাচে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের প্রতিপক্ষ কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি। তাই মাশরাফিদের জয় অনেকটাই নিশ্চিত। জিতে গেলে কলাবাগানের পয়েন্ট হয়ে যাবে ১২। আবাহনী সিসিএস-কে হারালেই নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের সুপার লিগ। এরপর বেশি সম্ভাবনা মোহামেডানের। কেন না তাদের নেট রানরেট অনেক বেশি। তাই শেখ জামালের বিরুদ্ধে হেরে গেলেও তাদের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। তবে মোহামেডান জিতে গেলে বাদ শেখ জামাল। প্রাইম ব্যাংকের খেলা রয়েছে দোলেশ্বরের সঙ্গে এবং গাজী গ্রুপের খেলা রয়েছে ভিক্টোরিয়ার বিরুদ্ধে। দুই ম্যাচে দোলেশ্বর ও ভিক্টোরিয়া জিতে গেলে সুপার লিগে চলে যাবে মাশরাফির কলাবাগান ক্রীড়া চক্রই। তবে গাজী গ্রুপ কিংবা প্রাইম ব্যাংক জিতে গেলে তাদের সম্ভাবনাই থাকবে বেশি। কেন না দুই দলের নেট রানরেটই মাশরাফিদের চেয়ে বেশি।

সর্বশেষ খবর