রবিবার, ২৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

তামিমের সঙ্গী কে

মেজবাহ্-উল-হক

শচিন টেন্ডুলকার ও সৌরভ গাঙ্গুলি, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও ম্যাথু হেইডেন, গর্ডন গ্রিনিজ ও দেসমন্ড হাইনস, সনাৎ জয়সুরিয়া ও মারভান আতাপাত্তু কিংবা ডেভিড বুন ও জিওফ মার্শ ক্রিকেট বিশ্বে এমন দীর্ঘ মেয়াদি ওপেনিং জুটির নজীর অনেক আছে। কেবল বাংলাদেশেই দীর্ঘ মেয়াদের কোনো ওপেনিং জুটি দেখা যায়নি। টেস্ট ও ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়ার পর তামিম ইকবাল ছাড়া আর কোনো ক্রিকেটার ওপেনিংয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিতে পারেননি। ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়েছে। টাইগাররা এখন কোনো দলকেই আর বাড়তি সমীহ দেখায় না। প্রতি দলের বিরুদ্ধেই মাঠে নামে জয়ের চিন্তা করে। গত এক বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেট অনেক কিছু অর্জন করেছে। অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে। ঘরের মাঠে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ক্রিকেট শক্তিকে সিরিজে পরাজিত করেছে। এশিয়া কাপে দুই দুইবার ফাইনালে উঠেছে। ওয়ানডে র?্যাঙ্কিংয়ে সাতে উঠেছে। মুস্তাফিজুর রহমানের মতো বিশ্বসেরা বোলার পেয়েছে বাংলাদেশ। যিনি জাদুকরী কাটার, স্লোয়ার, ইয়র্কার দিয়ে ক্রিকেট-বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিচ্ছেন। পেয়েছে সাকিব আল হাসানের মতো অলরাউন্ডার। যিনি একই সময়ে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটেই র?্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠেছিলেন। স্পিন তো ছিলই, এখন বাংলাদেশের পেস আক্রমণই যেকোনো দলের ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জ জানানোর সামর্থ্য রাখে। ফিল্ডিংয়েও অনেক ভালো বাংলাদেশ। সমস্যা কেবল ওপেনিংয়েই...। ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকে তামিম ইকবাল জাতীয় দলে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামছেন। কিন্তু অপর পাশে স্থায়ী জায়গা করে নিতে পারেননি কোনো কোনো ব্যাটসম্যান। এ পর্যন্ত একে একে ১৩ জনের সঙ্গে জাতীয় দলে ওপেন করেছেন তামিম। কেউ স্থায়ী হতে পারেননি। ওপেনিংয়ে তামিমের প্রথম সঙ্গী ছিলেন শাহরিয়ার নাফিস। এরপর থেকে জাভেদ ওমর, জুনায়েদ সিদ্দিকী হয়ে সৌম্য সরকার, লিটন দাস নিয়মিত বিরতিতে তামিমের ওপেনিং পার্টনার পরিবর্তন হয়েছে।

তবে তামিমের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সময় ওপেন করেছেন ইমরুল কায়েস। ভালোই গড়ে উঠেছিল তাদের জুটিটা। মোট ৪৫ ইনিংসে একসঙ্গে ব্যাট হাতে নেমেছেন তারা। এই জুটিতে এসেছিল ১১৭৮ রান। জুনায়েদ সিদ্দিকী ও শাহরিয়ার নাফিসের সঙ্গে তামিমের জুটিটা ভালো গড়ে উঠেছিল। জুনায়েদের সঙ্গে ২৫ ইনিংস এবং নাফিসের সঙ্গে ২৪ ইনিংস ব্যাটিং করেছেন তামিম ইকবাল। এছাড়াও এনামুল হক বিজয় (১৯) ও সৌম্য সরকারের (১০) সঙ্গেও শুরুটা ছিল সম্ভাবনাময়। লিটন দাসও তামিমের সঙ্গে ওপেন করেছেন। তবে সৌম্য সরকারকে বেশ আগ্রাসীই মনে হচ্ছিল। ১০ ইনিংসে এই জুটির গড় ৫৪। কিন্তু হঠাৎ কি যে হয়ে গেল সৌম্য আর ফর্মই ফিরে পাচ্ছে না। টি-২০ এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে সুবিধা করতে পারেননি। এমনকি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও সৌম্য সরকার ব্যর্থ। ১৫ ম্যাচে সৌম্য করেছেন মাত্র ৩৪৯ রান। গড় ২৩.২৬ মাত্র। সেঞ্চুরি তো নেই-ই, হাফ সেঞ্চুরিও মাত্র একটি।  অথচ তামিম ইকবাল ৪৭.৬০ গড়ে করেছেন ৭১৪ রান। এবারের আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। দুই সেঞ্চুরির সঙ্গে ৪ হাফ সেঞ্চুরিও রয়েছে তার। তামিমের স্ট্রাইকরেটও দারুণ ৯০.৭২। তবে সৌম্য সুবিধা করতে না পারলেও ওপেন করতে নেমে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেই অনেকেই দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে ভিক্টোরিয়া স্পোটিং ক্লাবের ওপেনার আবদুল মজিদ। ৪৪.১২ গড়ে করেছেন ৭০৬ রান। এখনো জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়াননি মজিদ। তবে এবার নির্বাচক যদি তাকে তামিমের সঙ্গে হিসেবে নির্বাচন করেন তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

দারুণ ব্যাটিং করেছেন জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া ক্রিকেটার শামসুর রহমান শুভ। তার গড় তামিমের চেয়েও বেশি- ৫৫.৮০। গাজী গ্রুপের হয়ে ব্যাটিং করা এই ওপেনার মাত্র ১১ ম্যাচ খেলেই করেছেন ৫৫৮ রান। একটি সেঞ্চুরি ছাড়াও ৪টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তার। শামসুরের স্ট্রাইকরেট ৮৬.৬৪। তাই তামিমের সঙ্গী হিসেবে শামসুরের দলে ফেরাটা যেন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এনামুল হক বিজয়ও দারুণ ব্যাটিং করেছেন। ১১ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪৪৯ রান। ইমরুল কায়েস ৯ ম্যাচে করেছেন ৩৫৩ রান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর