সোমবার, ১১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

নিরাপত্তা পরিদর্শক পাঠাচ্ছে ইংল্যান্ড

ক্রীড়া প্রতিবেদক

নিরাপত্তা পরিদর্শক পাঠাচ্ছে ইংল্যান্ড

ঢাকা, ইস্তাম্বুল, প্যারিস- ভিন্ন ভিন্ন দেশের ভিন্ন ভিন্ন নগরী। এক শহরের সঙ্গে আরেক শহরের দূরত্ব নিদেন পক্ষে হাজার মাইল। নিজস্ব সংস্কৃতি, জাতিসত্তা রয়েছে শহরগুলোর। দূরত্ব হাজার মাইলের হলেও আজ, এখন শহরগুলোর মধ্যে রয়েছে অদ্ভুত সাযুজ্য এবং অন্যরকম এক মিল! সবগুলো শহরই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। দুই মাসের ব্যবধানে শহরগুলোতে জঙ্গিরা নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে স্তব্ধ করে দিয়েছে বিশ্ববাসীকে। জঙ্গিদের এসব নারকীয় হত্যাকাণ্ডে মানুষ এখন ভীতসন্ত্রস্ত। স্বস্তি চান, শান্তি চান তারা। ১ জুলাই জঙ্গিরা গুলশানে যে বীভৎস, নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তাতে মারা গেছেন ২২ জন নিরীহ লোক। এই হত্যাকাণ্ড প্রভাব ফেলেছে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজে। সিরিজের তারিখ চূড়ান্ত হওয়ার পরও এর ভবিষ্যৎ এখন আটকে পড়েছে সংশয়ের বেড়াজালে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পরিষ্কার করে বলতে পারছে না, ইংল্যান্ড সফর করবে কি না? কিছু না বললেও সিরিজ নিয়ে আশাবাদী বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন জানিয়েছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে শিগগিরই ইংল্যান্ডের নিরাপত্তা পরিদর্শক দল আসছে। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে সিরিজটি খেলার বিষয়ে আগ্রহ দেখায়নি বিসিবি।

দুই টেস্ট ও তিন ওয়ানডে খেলতে ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা ইংল্যান্ডের। ২০১৬ সালে দেশের মাটিতে এটাই একমাত্র টেস্ট সিরিজ। এরপর অবশ্য ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড যাবে টাইগাররা। ২০১৫ সালের পর প্রায় এক বছর ধরে কোনো টেস্ট খেলছে না বাংলাদেশ। যদিও আগস্টে ভারতের বিপক্ষে একটি টেস্ট খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। সেটা পিছিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে গিয়ে ঠেকেছে। ২০১৭ সালে অবশ্য বেশ টাইট শিডিউল টাইগারদের। কিন্তু বিসিবির ভাবনায় এখন শুধুই ইংল্যান্ড সিরিজ। গুলশান ট্র্যাজেডিতে সিরিজটি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়লেও বিসিবি আশাবাদী। গতকাল সেলফোনে আশার কথাই শুনিয়েছেন বিসিবি সিইও, ‘বিশ্বব্যাপীই জঙ্গিরা নাশকতা চালাচ্ছে। গুলশানের হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মানা যায় না। ওই ঘটনা স্বাভাবিকভাবে ইংল্যান্ড সফরের ওপর প্রভাব ফেলেছে। আসা, না আসার বিষয়ে ইংল্যান্ড এখনো কিছু বলেনি। কিছু বলেনি বলেই আমরা আশাবাদী। আমরা নিয়মিত ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’

গুলশান ঘটনার আগে রমজানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে ঢাকায় আসার কথা ছিল ইংলিশ নিরাপত্তা পরিদর্শক দলের। কিন্তু আসেনি। সহসাই আসবে বলেন বিসিবি সিইও, ‘বাংলাদেশ ও ভারত সিরিজ প্রায় একই সময়। ইংল্যান্ড পরিদর্শক দল দুই দেশেই তাদের ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে আসবে। এটা তাদের রুটিন চেক আপ। তারা যখন ভারত আসবে, তখন আমাদের এখানেও আসবে।’ ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলকে এরই মধ্যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

শিডিউল মেনে ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা ইংল্যান্ডের। সফরের শুরুতে ওয়ানডে সিরিজ এবং পরে টেস্ট সিরিজ। ৭ ও ৯ অক্টোবর মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম দুটি এবং ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডে। ২০-২৪ অক্টোবর প্রথম টেস্ট চট্টগ্রামে এবং ২৮ অক্টোবর-১ নভেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট মিরপুরে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের মাটিতে এটাই একমাত্র সিরিজ। যদি কোনো কারণে সফর করতে অপারগতা জানায় ইংল্যান্ড, তাহলে এ বছর আর ঘরের মাঠে কোনো টেস্ট কিংবা ওয়ানডে খেলা হবে না মাশরাফি, মুশফিকদের।         

সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ার পরও গত অক্টোবরে বাংলাদেশ সফর করেনি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। দুই টেস্টের সিরিজটি খেলতে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ঢাকায় আসার কথা অস্ট্রেলিয়ার। মজার বিষয় হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দল না আসলেও নভেম্বর বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্ব খেলতে একদিনের সফরে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দল।

এই মুহূর্তে পরিস্থিতি যে রকম জলঘোট পাকিয়ে আছে, তাতে সিরিজটির ভবিষ্যৎ পরিষ্কার করে বলা যাচ্ছে না। তারপরও দেশের ১৭ কোটি ক্রিকেটপ্রেমী অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন ইংল্যান্ডের।

সর্বশেষ খবর