শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সেই ভুটানকেই এত ভয়!

এএফসি কাপ প্লে অফ বাচাইপর্ব

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সেই ভুটানকেই এত ভয়!

এএফসি কাপ প্লে অফ বাছাইপর্ব খেলতে গতকাল ভুটান ফুটবল দল ঢাকায় এসে পৌঁছায় —বাংলাদেশ প্রতিদিন

দুশ্চিন্তায় রয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ও ১০ অক্টোবর থিম্পুতে ভুটানের বিপক্ষে এএফসি কাপের প্লে-অফ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। জিততে পারলে বাছাই পর্বে সুযোগ পাবে। হারলে দীর্ঘ সময় ধরে এএফসির কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবে না বাংলাদেশ। বিষয়টি নিঃসন্দেহে প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুটানের কাছে হেরে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট  থেকে যদি বাইরে থাকতে হয় এর চেয়ে বড় লজ্জা আর কি হতে পারে। গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলেও সান্ব্তনার জয় পেয়েছিল ভুটানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে। প্লে-অফ ম্যাচ বাংলাদেশের বাঁচামরার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। খেলোয়াড়দের শক্তি ঝালাই করে নিতে বৃহস্পতিবার মালেতে মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। ৫-০ গোলে হার মানেন নাসিররা। এমন পারফরম্যান্সের পর ভয়টা আরও বেড়ে গেছে।

ভুটানকে হারাতে পারবে কিনা এ নিয়েও সংশয় রয়েছে। অথচ অতীতে ভুটানের জাতীয় দল ঢাকার ক্লাবগুলোর সামনে দাঁড়াতে পারত না। গোলের বন্যায় ভেসে যেত। পাকিস্তান আমলে আগা খান গোল্ড কাপে ভুটানের জাতীয় দল একাধিকবার অংশ নিয়েছে। খেলেছে মোহামেডান, ওয়ান্ডারার্স, ইপিআইডিসি বা আরও দলের সঙ্গে। কখনো তারা ম্যাচ জিতে দেশে ফিরতে পারেনি। ১৯৬৮ সালে মোহামেডানের কাছে ১২-০ গোলে হার মেনেছিল। সেই ম্যাচে মোহামেডানের অধিনায়ক ছিলেন জাকারিয়া পিন্টু। স্মৃতিচারণ করে তিনি জানালেন ‘ভুটান যখন খেলতো তখন ম্যাচের আগে কর্মকর্তারা অনুরোধ রাখতেন গোল যেন বেশি না হয়। অতিথি দল বলে আমরা সেই অনুরোধ রক্ষাও করতাম। বিশ্বাস করবেন টিপু বা প্রতাপ কর্নার শট নিলে ভুটানের সব খেলোয়াড় রক্ষণভাগের সামনে দাঁড়িয়ে থাকত। সাফ গেমস শুরুতেও ভুটান পাত্তা পেত না। কিন্তু ৯০ দশকে এসে ভুটান শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হয়ে উঠে। অধিকাংশ ম্যাচে বাংলাদেশ জিতছে ঠিকই কিন্তু ভুটান ছেড়ে কথা বলছে না। কথা হচ্ছে অতীতে ভুটানকে নিয়ে ছেলেখেলা খেললেও এখন তারা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কেন? তাহলে কি বাংলাদেশ পিছিয়ে গেছে। বাস্তবতা হচ্ছে এটাই মান কমে যাওয়ায় ভুটানও জ্বলে উঠছে। দুই ম্যাচের জন্য বাংলাদেশের হেড কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন বেলজিয়ামের সেইন্টফিট। ভুটান ফুটবল সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। তারপরও বলছেন হোম আর অ্যাওয়ে দুই ম্যাচে জয় চান তিনি।

বাংলাদেশ জিতবে এই প্রত্যাশাতো সবারই। কিন্তু ভুটান আগের সেই ভুটান নেই যে তাদের হারানো যাবে নিশ্চিত করে বলা যাবে। বিশেষ করে ফুটবলাররা ভালো মতো জানেন বর্তমানে ভুটানের শক্তি কেমন। একটা প্রমাণও পেয়েছেন কিছুদিন আগে। পেশাদার লিগ রানার্স আপ শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র থিম্পুতে এএফসি কাপ প্লে-অফ বাছাইপর্ব খেলে আসে। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে চাইনিজ তাইপের টাটুংয়ের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে। পরের ম্যাচে ভুটান টারটোনসের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করলেই শেখ রাসেল পরবর্তী রাউন্ডে উঠে যেত। কিন্তু পারেনি ৪-৩ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে। প্রথমার্ধে ভুটান ৪-১ গোলে এগিয়ে যাওয়ায় মনে হচ্ছিল ব্যবধান আরও বড় হবে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে শেখ রাসেল ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩ গোল শোধ করে।

রনি পেনাল্টি মিস না করলে ম্যাচ ৪-৪ ড্র হতো আর শেখ রাসেল টুর্নামেন্টে টিকে থাকত। দুর্ভাগ্য ক্রমে তা আর হয়নি। মামুনুলরা যদি খেলাটি স্ট্রিমে দেখে থাকেন তাহলে নিশ্চয় প্রথমার্ধে ভুটানের ছন্দময় খেলা চোখে পড়েছে। শেখ রাসেলে জাতীয় দলের বেশ কজন খেলোয়াড় ছিলেন। এটা কিন্তু জাতীয় দলের জন্য সতর্ক বার্তাও বলা যায়। সত্যি বলতে কি বাংলাদেশ ফেবারিট হলেও এএফসি কাপে ভুটানকে ভয় পাবার যথেষ্ট কারণও রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর