মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

জেগে থাকল আবাহনীর আশা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

জেগে থাকল আবাহনীর আশা

দক্ষিণ কোরিয়ার পোচনের দুর্গে ঢাকা আবাহনীর আক্রমণ। ম্যাচটি গোল শূন্য ড্র হয় —বাংলাদেশ প্রতিদিন

কাগজে-কলমে দুই দলের ব্যবধান যোজন যোজন দূরত্বে। ঢাকা আবাহনী এবারের পেশাদার লিগ চ্যাম্পিয়ন। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়ার বিভাগীয় পর্যায়ের তৃতীয় স্তরের দল পোচন সিটিজেন এফসি। তাই ম্যাচের আগে ফেবারিট তকমা নিয়েই মাঠে নামে ঢাকা আবাহনী। কিন্তু ‘পুঁচকে’ পোচনের সঙ্গে ‘ড্র’ করে বসে টুর্নামেন্টের অন্যতম দাবিদার আবাহনী। প্রথম ম্যাচে হারার পর এ ম্যাচে ড্র, তার পরও টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যায়নি আবাহনীর। তবে এই ম্যাচে ড্রর ফলে সেমিফাইনালে যাওয়ার পথ অনেকটা কঠিন করে ফেলল আবাহনী। সেমিফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত করতে হলে নিজেদের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আলগা এফসির বিরুদ্ধে জিততে হবে আবাহনীকে। প্রতিপক্ষ পোচন সেমিতে যাওয়াটা অনেকটাই নিশ্চিত করেছে। একটি করে জয় ও ড্র নিয়ে ‘এ’ গ্রপে শক্ত অবস্থানে রয়েছে দলটি। তবে এই গ্রুপ থেকে টানা দুই ম্যাচ জিতে সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস।

সাত মিনিটে ম্যাচে প্রথম আক্রমণ করে ঢাকা আবাহনী। ডান প্রান্ত থেকে জনাথন ডেভিডের ফ্রি কিক থেকে ছোট বক্সে ফাঁকা পেয়ে যান মধ্যমাঠের খেলোয়াড় সাইমন। তার নেওয়া জোরালো শট গোল লাইন থেকে প্রতিহত করেন পোচন অধিনায়ক চো ট্রি। পাল্টা আক্রমণে পোচন প্রায় গোল করে বসেছিল। বাঁ প্রান্ত থেকে জি কিয়ং ডিউকের থ্রু পাস থেকে আক্রমণভাগের খেলোয়াড় কিম চানের বাঁ পায়ের নেওয়া শটটি আবাহনীর গোলরক্ষক শহীদুল ইসলাম ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। ৪৪ মিনিটে পরিকল্পিত আক্রমণে যায় পোচন। ডি বক্সের কাছেই আবাহনীর রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ইয়াসিন খানের হাতে লাগলে ফ্রি কিক পায় দক্ষিণ কোরিয়ার দলটি। সুবিধাজনক পজিশনে বল পেয়ে দর্শনীয় ফ্রি কিক নেন জি কিয়ং। তার নেওয়া অসাধারণ শটটি অসাধারণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো দলকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক শহীদুল। পাল্টা আক্রমণ থেকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয় আবাহনীর। এবার বাধা হয়ে দাঁড়ালেন পোচন গোলরক্ষক চুই আন সেওং। ডান প্রান্ত থেকে আবাহনীর আক্রমণ। জনাথন ডেভিডের লব থেকে ছোট বক্সে পেয়ে জোরালো হেড নেন আরেক বিদেশি ফরোয়ার্ড এমেকা। কিন্তু অসাধারণভাবে সেই বল ফিরিয়ে দেন পোচন গোলরক্ষক চুই আন সেওং। ০-০ সমতায় থেকে বিরতিতে যায় দুই দল। ৫৫ মিনিটে পোচনের ফের পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে বল পেয়ে গোলবারে জোরালো শট নেন পার্ক জং। কিন্তু তার নেওয়া শটটি ক্রসবার ঘেঁষে চলে যায় বাইরে। পাল্টা আক্রমণ থেকে আরেকটা গোলের সুযোগ তৈরি হয় নীল আকাশিদের। ডান প্রান্ত থেকে জনাথনের ক্রস থেকে ডি বক্সে বল পেয়ে যান কামারা। তার নেওয়া সাইডবলি ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে চলে গেলে একটি সহজ সুযোগ নষ্ট হয় জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীর। ৬৭ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে পোচনের। এবার তাদের হতাশ করে ক্রসবার। ডি বক্সের বাইরে থেকে লি সেওংয়ের নেওয়া শট ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হলে বঞ্চিত হয় পোচন। ৭৩ মিনিটে ফের বঞ্চিত হয় দক্ষিণ কোরিয়ার দলটি। চাংয়ের কাছ থেকে বল পেয়ে অসাধারণ হেড করেন লি। কিন্তু বলটি বার ঘেঁষে চলে যায় বাইরে। খেলার অন্তম মুহূর্তে ম্যাচের সহজ সুযোগটি নষ্ট করেন আবাহনীর বদলি খেলোয়াড় জীবন। জনাথনের হেড থেকে ছোট বক্সে বল পেয়ে যান জীবন। কিন্তু বল বাইরে মেরে গোলের সহজ সুযোগ হেলায় নষ্ট করেন জীবন। শেষ পর্যন্ত কোনো দলই গোল করতে না পারায় ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল। এই ম্যাচ ড্র হলেও এখনো সেমিফাইনালের আশা ছাড়েননি ঢাকা আবাহনীর কোচ ড্রাগো। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ২-১ গোলে পরাজিত করে কিরগিজস্তানের এফসি আলগাকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর