শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

আইসিসিতে ভারতের ভরাডুবি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা—আইসিসিতে ভরাডুবি হলো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। বিসিসিআইয়ের চরম বিরোধিতা সত্ত্বেও পাস হয়েছে নতুন পরিচালনা কাঠামো ও আর্থিক সংস্কার প্রস্তাব। এর মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে গেল ‘তিন মোড়ল’ তত্ত্ব্ব।

ভোটাভুটিতে ভারত এবার তাদের দুই সহযোগী ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকেও পাশে পায়নি। কেবল পরিচালনা কাঠামোর সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ভারত শ্রীলঙ্কাকে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিল। তারপরেও ১২-২ ভোটে ঠিকই নতুন সংস্কার প্রস্তাব পাস হয়েছে। আর আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠনে ভারত কাউকে সঙ্গে পায়নি। তারা হেরে গেছে ১৩-১ ভোটে। আগামী জুন মাসে আইসিসির বার্ষিক সভাতে নতুন সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত হবে। নতুন সংস্কার প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে ভারত হেরে যাওয়ায় ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বর্জন করতে পারে বিসিসিআই। যদিও এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভারতীয় দল ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু দল ঘোষণার নির্ধারিত তারিখ ২৫ এপ্রিল পার হয়ে গেছে। নতুন সংস্কার প্রস্তাবেও আইসিসির আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ পাবে ভারতই। তবে আগের চেয়ে অঙ্কটা অনেক কমে গেছে। আগের প্রস্তাব অনুযায়ী ভারতের পাওয়ার কথা ছিল ৪৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে তারা পাবে ২৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে ২০১৪ সালে যখন প্রথম তিন মোড়ল তত্ত্ব্ব পাস হয় তখন আইসিসি থেকে ভারতের নেওয়ার কথা ছিল ৫৭০ মার্কিন ডলার।

নতুন সংস্থার প্রস্তাবে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের কোনো ক্ষতি হয়নি। ইংল্যান্ড আইসিসি থেকে ১৪৩ মিলিয়ন ডলার পাবে (বিগ-থ্রিতে পাওয়ার কথা ছিল ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। আর অস্ট্রেলিয়া টেস্ট খেলুড়ে বাকি ছয় দলের মতো ১৩২ মিলিয়ন ডলার করে পাবে। তিন মোড়ল চুক্তিতে থাকার সময়ই একই পরিমাণ অর্থ পাওয়ার কথা ছিল ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার। নতুন প্রস্তাবে আইসিসির পূর্ণ সদস্যগুলোর মধ্যে কেবল মাত্র জিম্বাবুয়েই কিছুটা কম পাবে—৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশগুলোর জন্য বরাদ্দ ২৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আইসিসিতে তিন মোড়ল তত্ত্ব্বের প্রধান কারিগর ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান শ্রীনিবাসন। কিন্তু শশাঙ্ক মনোহর দায়িত্ব নিয়েই তিন মোড়ল তত্ত্ব ভেঙে ফেলার ইঙ্গিত দেন। অবশেষে তা বাস্তবায়ন করলেন। তবে আইসিসির চেয়ারম্যান পদ থেকে অবসরের ঘোষণাও দিয়েছেন মনোহর। আগামী সভার পরই তিনি সরে দাঁড়াবেন।

তার আগে আইসিসি ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারায় সন্তুষ্ট মনোহর, ‘বিশ্ব ক্রিকেটের উন্নয়নে এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমার বিশ্বাস, এই সিদ্ধান্তে ক্রিকেটে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। নতুন এই কাঠামো ক্রিকেটের উন্নয়নে দারুণ ভূমিকা রাখবে।’ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড চেয়েছিল বেশ কয়েকটি দেশকে নিজেদের পক্ষে নেওয়ার। কিন্তু তারা সফল হয়নি। এমনকি বাংলাদেশকেও তারা পাশে পায়নি। বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা ভারতীয় এক মিডিয়াকে বলেছেন, ‘দুটি প্রস্তাবই ছিল আমাদের বিরুদ্ধে। তাই বিসিসিআই দুই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। কিন্তু মনোহর কিভাবে এমন একটি প্রস্তাবের পক্ষে গেলেন?’ সহযোগী দেশগুলোর বরাদ্দ নিয়েও একটা বড় আপত্তি ছিল ভারতের। কেননা সিঙ্গাপুরের মতো দলগুলোও এখন আইসিসি থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর