রবিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আবারও প্রতিপক্ষ রশিদের দুর্ভেদ্য ঘূর্ণি

ক্রীড়া প্রতিবেদক, দুবাই থেকে

আবারও প্রতিপক্ষ রশিদের দুর্ভেদ্য ঘূর্ণি

প্রশ্ন শুনে হেসে ফেলেন। এরপর যা বললেন, সেটা আরও বিস্ময়কর। রশিদ খান; বয়স ২০ পেরিয়ে একুশ। ক্রিকেট বিশ্বের বিস্ময়কর লেগ স্পিনার। তার স্পিন, গুগলী, ফ্লিপার, আর্মার বুঝতে ভিডিও করছে প্রতিপক্ষ দলগুলো। চুলচেরা বিশ্লেষণ করে দুর্বল দিকগুলো বের করে পাল্টা আক্রমণের পরিকল্পনা করছে। লাভ হচ্ছে না তাতে বিন্দুমাত্র। উল্টো দিন দিন ব্যাটসম্যানদের পাহাড়সম চাপ নিয়ে মুখ থুপড়ে পড়ছেন। আবুধাবীতে দুর্দান্ত বোলিংয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস তুলে ছাড়েন। ম্যাচ শেষে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘ভিডিও করে কি হবে? খেলতে হবে ব্যাটসম্যানকে তার নিজের চোখে। সে কতটা বুঝতে পারবে, সেটাই মূল বিষয়।’ ভুল বলেননি ৪৯ ওয়ানডেতে ১১২ উইকেট নেওয়া রশিদ। শুধু রশিদ নন, আফগানিস্তানের বোলিং বিভাগের আরেক ‘তুরুপের তাস’ অফ স্পিনার মুজিব-উর-রহমান। এই দুই স্পিনারই তাদের ঘূর্ণি জাদুতে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন টাইগারদের ব্যাটিং লাইনআপ। ৭২ ঘণ্টার ব্যবধানে আজ আবার রশিদ, মুজিব, মোহাম্মদ নবীদের দুর্ভেদ্য ঘূর্ণির মুখোমুখি হচ্ছেন মাশরাফি, মুশফিক, সাকিবরা। সেদিনের মতো আজও কি ঘূর্ণিতে বেহাল হয়ে পড়বেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা? নাকি, দেশ থেকে উড়িয়ে আনা সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েশে ভর করে ২৮ সেপ্টেম্বর ফাইনালের আশা জাগিয়ে রাখবে টাইগাররা।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সহজেই উতরে যায় মুশফিকের সেঞ্চুরিতে। কিন্তু আফগানিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে বড্ড নড়বড়ে মনে হয়েছে লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব, মাহমুদুল্লাহ, মোসাদ্দেক সৈকতদের। বিশেষ করে স্পিনারদের বিপক্ষে অস্থির মনে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। আবুধাবীর ধীরলয়ের উইকেটে তিন আফগান স্পিনার রশিদ, মুজির ও নবীর স্পিন মায়ায় গুঁড়িয়ে দেন সাকিবদের সব প্রতিরোধ। আফগানিস্তানের ২৫৫ রানের জবাবে মাত্র ১১৯ রানে গুটিয়ে যান মাশরাফিরা। ম্যাচে রশিদ ছিলেন বিধ্বংসী মেজাজে। ৯ ওভারের স্পেলে ৩ মেডেন নিয়ে ১৩ রানের খরচে তুলে নেন ২ উইকেট। পিছিয়ে ছিলেন না আরেক স্পিনার মুজিবও। ৮.১ ওভারের স্পেলে ২২ রানের খরচে নেন ২ উইকেট। অভিজ্ঞ নবী এক উইকেট পেলেও রান খরচে ছিলেন মিতব্যয়ী। ১০ ওভারে রান দেন মাত্র ২৪। তিন স্পিনারের মধ্যে রশিদ ও মুজিবকেই দুর্ভেধ্য মনে করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব, ‘রশিদকে শুধু আমাদের নয়, বিশ্বের সবগুলো দেশের ব্যাটসম্যানদেরই খেলতে কষ্ট হয়। তাকে খেলতে না পারাটা যে কঠিন সেটাও নয়। শুধু পরিকল্পনা করে খেলতে হবে। আমাদের ব্যাটসম্যানরা সেটাই পারছেন না। আজ সাফল্য পেতে অবশ্যই পরিকল্পনা করে খেলতে হবে। তবে রশিদ কিংবা মুজিবদের কিভাবে সামলাতে হবে, সেটা নিয়ে এখনো আমরা টিম মিটিং করিনি।’       

এশিয়া কাপের প্রথম শিরোপা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে আসা মাশরাফিদের সূচনা ছিল দারুণ। দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কাকে হারালেও আফগানিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি কোনোরকম। সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন এখন ধুসর হয়ে পড়েছে। তারপরও আফগানিস্তানকে আজ হারাতে পারলে ফের স্বপ্ন দেখার সাহস পাবেন মাশরাফিরা। কিন্তু আবুধাবীর শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামের ধীরলয়ের উইকেটে রশিদ খানের লেগ স্পিন, গুগলী, আর্মার, মুজিবের ফ্লিপার, ক্যারম বল এবং নবীর নিয়ন্ত্রিত স্পিনের বিপক্ষে কতটা যুৎসই লড়াই করতে পারবে মাশরাফি বাহিনী?

 

২৮ সেপ্টেম্বরের ফাইনালে খেলতে অপেক্ষায় থাকতে হবে দেশ থেকে উড়িয়ে আনা সৌম্য ও ইমরুলের রুদ্র মূর্তির। তবে ফাইনালের আগে বাংলাদেশকে আজ টপকাতে হবে রশিদ, মুজিব, নবীর স্পিনের কঠিন হার্ডল।

সর্বশেষ খবর