শিরোনাম
বুধবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আমি তো টেন্ডুলকার-ম্যাকগ্রা নই

আমি তো টেন্ডুলকার-ম্যাকগ্রা নই

সংবাদ সম্মেলনে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা ক্রিকেটারদের একজন মাশরাফি বিন মর্তুজা। কিন্তু নিজে তেমনটি ভাবেন না। তাই সংসদ নির্বাচন নিয়ে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করেই বলেছেন, তিনি শচীন টেন্ডুলকার কিংবা ম্যাকগ্রা নন, যাতে ক্যারিয়ার শেষে লোকে তার কথা মনে রাখবেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৩০ ডিসেম্বর। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নড়াইল-২ আসন থেকে নির্বাচন করবেন নৌকা প্রতীকে। প্রার্থী হওয়ার পর গতকাল প্রথমবার নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ার, রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে কথা বলেছেন—

 

নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এর ফলে খেলার প্রতি ফোকাস কি কমে যাবে...

আমার মাইন্ড সেটআপে একদমই না। অনুশীলনে পুরোপুরি মন আছে আমার। ১৪ ডিসেম্বর সিরিজ শেষে নির্বাচনে মনোযোগ দিব। তার আগে পুরোপুরি মনযোগ খেলায় রাখব।

নির্বাচন করছেন কেন...

বিশ্বকাপের পর যদি আমার ক্যারিয়ার শেষ হয়, পরের সাড়ে ৪ বছরে কি হবে জানি না। মানুষের সেবা করা আমি সবসময় উপভোগ করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটা সুযোগ দিয়েছেন। আমি সেটা কাজে লাগাতে চাই। এলাকায় কাজ করার জন্য আমার একটা ফাউন্ডেশন আছে। আমার মনে হয়েছে তাদের জন্য কাজ করার এটা গ্রেট অপরচুনিটি। এখান থেকেই মনে হয়েছে নির্বাচন করার। আর সাড়ে সাত-আট মাস পরতো আবার জাতীয় নির্বাচন হবে না।

নির্বাচনের জন্য সিরিজের ফোকাস কি সরে যাচ্ছে...

আমি আগেই বলেছি আমার মাইন্ড সেটআপ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময় মনে হয়েছিল এরপর পারব কি না। তারপরও আমি খেলছি। বিশ্বকাপ পর্যন্ত মাইন্ড সেটআপ আছে। অবশ্য তারপর রিভিউ করার সুযোগ আছে। যদি তখন সে অবস্থায় না থাকি, তাহলে অবশ্যই কুইট করব।

সিরিজে আপনার ফোকাস ...

আমার চোখে ঠিক আট দশটা সিরিজ যেভাবে খেলছি এটাও তাই। অবশ্যই সিরিজ জিততে চাই।

কি ভেবে নির্বাচন...

আমার ক্যারিয়ার শেষের দিকে। আমি শচিন টেন্ডুলকার কিংবা ম্যাকগ্রা নই, যে আমার কথা স্মরণ রাখবে মানুষ। আমি আমার মতো করে ক্রিকেটটা খেলেছি। স্ট্রাগলিং লাইফে যতটুক পেরেছি খেলেছি। তবে মানুষের জন্য কাজ করা সবসময় উপভোগ করেছি। সেবা করা আমার ছোটবেলার শখ ছিল বলতে পারেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বৃহৎ পরিসরে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন।

সংসদ সদস্য হলে খেলা চালিয়ে যাওয়া ঠিক হবে? 

আমার প্রথম লক্ষ্য বিশ্বকাপ খেলা। বিশ্বকাপতো আট মাসের ব্যাপার। এই সময় পর্যন্ত যেভাবে খেলে আসছি ওইভাবে খেলার চেষ্টা করব। আমার ব্যক্তিগত লক্ষ্যও বিশ্বকাপ।

দেশের মাশরাফি এখন দলের মাশরাফি...

খুবই স্বাভাবিক। আমার উদ্দেশ্য পরিষ্কার। যদি সুযোগ পাই মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।

আগেও বলেছি, আমি কোনো তারকা নই. আট মাস পরে যখন খেলা ছেড়ে দিব, তখন জনে জনে মানুষ স্মরণ করবে।

তরুণদের কি স্বপ্ন দেখাতে চান...

আমি স্বপ্ন দেখাতে আসিনি। গতানুগতিক কথা বলতেও চাই না। যাতে কাল আপনি সেটা মেলাতে না পারেন। চিন্তা করার সুযোগ নাই এখনই যে, আমি নির্বাচিত হয়ে গেছি। নির্বাচিত হওয়ার পর যদি মনে হয় আমার কাজ নিয়ে কথা বলবেন, তখন বলবেন। 

নড়াইলের সমর্থন...

আলহামদুলিল্লাহ, ভালো। যদিও যেতে পারিনি এখনো।

বিসিবি সভাপতি কিংবা সতীর্থ ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা হয়েছে...

না। কারও সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা হয়নি।

দল না জিতলে আপনার ভবিষ্যৎ...

কালকে আপনার জীবনে কী ঘটবে, আপনি জানেন না। আমার জীবনেও কি ঘটবে, সেটাও জানি না। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আপনি ক্লিয়ার মাইন্ড নিয়ে যাচ্ছেন কি না। আমি শুধু নিজেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। কাল আমার সঙ্গে কি হবে জানি না।

পরিবার থেকে বাধা, কিংবা সমর্থন...

এটা আমার পরিবারের জন্য একেবারে নতুন। মানিয়ে নিতে তাদের একটু সময় লাগবে। আমারও লাগবে। আমার বাসার কেউ রাজনীতি করেনি।

তরুণ প্রজন্মের প্রতি মেসেজ...

মাত্রই বললাম নিজেকে আমি নিয়ন্ত্রণ করি। নিজেকে ঠিক জায়গায় নিতে পারি কি না, সেটা আমি দেখি। ২০০১ সালে যখন অভিষেক হয়, তখন তরুণদের আইকন ছিলাম না। আমি আমার কাজ মন দিয়ে করেছি বলেই এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে গেছি। নির্বাচিত হলে নিজের কাজটা ঠিকমতো করার চেষ্টা করব। 

সর্বশেষ খবর