শুক্রবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সেঞ্চুরিতে তামিমের প্রত্যাবর্তন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সেঞ্চুরিতে তামিমের প্রত্যাবর্তন

সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপে আঙ্গুলে ব্যথা পান। ওই ইনজুরিতে মাঠের বাইরে ছিলেন প্রায় তিন মাস। গতকাল ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফিরেছেন তামিম ইকবাল। ফিরেই ১০৭ রানের দাপুটে এক সেঞ্চুরি। তিন অংকের জাদুকরি ইনিংসটি খেলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে। যেনতেন সেঞ্চুরি নয়, তার ব্যাটিং তাণ্ডবে চোখের পানি, নাকের পানি এক হয়েছে ক্যারিবীয় বোলারদের। তামিমের ফেরার ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন সৌম্য সরকারও। দুজনের জোড়া সেঞ্চুরিতে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে জয় পেয়েছে বিসিবি একাদশ। আলোর স্বল্পতায় নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ হওয়া ম্যাচে মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বিসিবি একাদশ জয় পেয়েছে ডার্ক ওয়ার্থ লুইস (ডিএল) মেথডে ৫১ রানে। ৯ ডিসেম্বর শুরু ওয়ানডে সিরিজ।     

স্পিন জাদুতে ইতিমধ্যে টেস্ট সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে টাইগাররা। স্পিনার চতুষ্টয় সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম, নাইম ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে চট্টগ্রাম টেস্ট ৬৪ রানে এবং মিরপুরে জিতেছে ইনিংস ও ১৮৪ রানে। দুই টেস্ট টাইগাররা জিতেছে পৌনে তিনদিনে। টেস্ট সিরিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মুখোমুখি হবে ওয়ানডেতে। মূল মঞ্চে নামার আগে গতকাল প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে দুই দল। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে দুই দলের ব্যাটসম্যানরাই ঝালিয়ে নিয়েছেন নিজেদের। বিকেএসপি-৩ নম্বর মাঠে প্রথমে ব্যাট করে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ সংগ্রহ বরে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৩১ রান। দুই ওপেনার কিয়েরন পাওয়েল ও শাই হোপ স্বাগতিক বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ১৫ ওভারে তুলে নেন ১০১ রান। পাওয়েল ব্যক্তিগত ৪৩ রানে ফিরলেও হোপ করে ৮১ রান। মিরপুর টেস্টে টাইগার স্পিনারদের ঘূর্ণির বিপক্ষে একাই লড়াই করেছিলেন হোপ। ওয়ানডে সিরিজে তিনি যে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবেন, তার আগাম ইঙ্গিত দিয়েছেন গতকাল বিকেএসপিতে প্রস্তুতি ম্যাচে। ৮১ রানের প্রত্যয়ী ইনিংসটি খেলেছেন ৮৪ বলে ৩ ছক্কা ও ৬ বাউন্ডারি। হোপ ছাড়া পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেছেন রোস্টন চেইজ। ৬৫ রানের অপরাজিত ইনিংসটি খেলেন ৫১ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায়। অন্যদের মধ্যে অ্যালেন ৪৮ রান করেন ৩২ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায়। ড্যারেন ব্রাভো ২৪, শিমরন হেটমায়ার ৩৩ রান করে। বিসিবি একাদশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন নাজমুল ইসলাম অপু, রুবেল হোসেন ও মেহেদি হাসান রানা। অধিনায়ক মাশরাফি মিতব্যয়ী বোলিং করে ১ উইকেট নেন ৮ ওভারের ৩৭ রানের খরচে।

টার্গেট পর্বতসমান ৩৩২ রান। দুই বাঁ হাতি ওপেনার তামিম ও ইমরুল কায়েস ৯ ওভারে সংগ্রহ করেন ৮১ রান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে দুটি সেঞ্চুরি হাঁকানো ইমরুল ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২৫ বলে ৫ চারে করেন ২৭ রান। এরপর সৌম্যর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বাঁধেন তামিম। ১৩.৫ ওভারে দুজনে যোগ করেন ১১৪ রান। দুজনেই সেঞ্চুরি করে সিরিজে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেন। দলীয় ২২.৫ ওভারে সাজঘরে ফিরেন তামিম। চেইজের বলে স্ট্যাম্পড হওয়ার আগে বাঁ হাতি ওপেনার ১০৭ রানের টর্নেডো ইনিংসটি খেলেন ৭৩ বলে। যাতে ছিল ১৩ চার ও ৪ ছক্কায় তিন মাস পর খেলতে নেমে তিন অংকের জাদুকরি ইনিংসটি খেলেন ৭০ বলে। হাফসেঞ্চুরি করেন মাত্র ৩৪। পরের হাফসেঞ্চুরি ৩৬ বলে। তামিমের দেখানো পথে সেঞ্চুরি করেছেন সৌম্যও।

১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংসটি খেলেন ৮৩ বলে ৭ চার ও ৬ ছক্কায়। দুই বাঁ হাতির জোড়া সেঞ্চুরিতে ৪১ ওভারে ৬ উইকেটে ৩১৪ রান তুলে ফেলে বিসিবি একাদশ। ৯ ওভারে যখন দরকার মাত্র ১৮ রান, তখনই আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল ও শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকত আলোর স্বল্পতার জন্য বন্ধ করে দেন খেলা। ম্যাচের ফলাফলের জন্য ডিএল মেথডের শরণাপন্ন হন আম্পায়ার এবং বিসিবি একাদশকে ৫১ রানে জয়ী ঘোষণা দেন।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ৩৩১/৮, ৫০ ওভার (কিয়েরন পাওয়েল ৪৩, শাই হোপ ৮১, চেইস ৬৫*, অ্যালেন ৪৮, হেটমায়ার ৩৩। রুবেল হোসেন ২/৫৫, মেহেদি রানা ২/৬৫, নাজমুল ২/৬১,)

বিসিবি একাদশ: ৩১৪/৬, ৪১ ওভার (তামিম ইকবাল ১০৭, সৌম্য সরকার ১০৩*, ইমরুল কায়েস ২৭। চেইস ২/৫৭, বিশু ২/৮১)

ফল: বিসিবি একাদশ ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৫১ রানে জয়ী

সর্বশেষ খবর