শিরোনাম
রবিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জায়ান্ট কিলার থেকে জায়ান্ট আরামবাগ!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জায়ান্ট কিলার থেকে জায়ান্ট আরামবাগ!

আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ ফুটবলে বাংলাদেশের পরিচিত ক্লাব। ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ১৯৮০ সালে প্রথম বিভাগ লিগে খেলার যোগ্যতা পেয়েছে। সেই বছর নেপালের আনফা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের প্রথম দল হিসেবে বিদেশের মাটিতে শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়ে। এখন পর্যন্ত দলটির লিগে শিরোপা বা রানার্সআপ হওয়ার কৃতিত্ব নেই। তবে শুরু থেকে বড় দলকে হারিয়ে ফুটবলে চমক দেখানোর জুড়ি নেই আরামবাগের।

১৯৮৫ সালে সুপার লিগে সেই ম্যাচের স্মৃতি ভোলবার নয়।

লড়াইটা ছিল ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানের বিপক্ষে। শক্তিশালী দলটির বিপক্ষে আরামবাগের দাঁড়ানোর কথা নয়। প্রথমার্ধে ০-১ গোলে পিছিয়ে থাকে তারা। দ্বিতীয়ার্ধে আরামবাগ জেগে উঠে। আক্রমণের পর আক্রমণে মোহামেডানের সেরা রক্ষণভাগ তছনছ করে ফেলে। শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে থাকা আরামবাগ ২-১ গোলে জিতে চমক সৃষ্টি করে। এই এক হারই মোহামেডানের নিশ্চিত শিরোপা হাত ছাড়া হয়ে যায়। সেই থেকে দলটি জায়ান্ট কিলারের খ্যাতিও পেয়ে যায়। এরপর আবাহনীসহ বড় দলকেও ধরাশায়ী করেছে। তবে তা অঘটন বলেই বিবেচিত হতো। গত কয়েক বছরে আরামবাগ চোখে পড়ার মতো পারফরম্যান্স প্রদর্শন করছে। ১৯৯৭ সালেই তারা প্রথম বারের মতো ফেডারেশন কাপে ফাইনাল খেলেছে। হেরে যায় আবাহনীর কাছে। ২০০০ সালেও ফাইনাল খেলে হেরে যায় মুক্তিযোদ্ধার কাছে। ২০১৭ সালে ফেডারেশন কাপেও একই পরিণতি। ফাইনালে হারে আবাহনী কাছে। তারুণ্যনির্ভর অপরিচিত খেলোয়াড়দের নিয়ে ফেডারেশন কাপের মতো বড় আসরে তিনবার রানার্স আপ হওয়া কম গৌরবের নয়। এবারের আসরে চট্টগ্রাম আবাহনীর মতো শক্তিশালী দলকে পেছনে ফেলে আরামবাগ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়। কোয়ার্টার ফাইনালে দুবার এগিয়ে থেকে দুর্ভাগ্য ক্রমে ঢাকা আবাহনীর কাছে হেরে যায়। গত বছর সব ফেবারিটদের পেছনে ফেলে স্বাধীনতা কাপে আরামবাগ চ্যাম্পিয়ন হয়। একেবারে অচেনা খেলোয়াড় নিয়ে ট্রফি জেতাটা চাট্টিখানি কথা নয়। এবারও টুর্নামেন্টে শেষ আটে জায়গা পেয়েছে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে। শুক্রবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে ম্যাজিক প্রদর্শন করেছে আরামবাগ। শক্তিশালী সাইফ স্পোর্টিংকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে। হ্যাটট্রিক করেছেন নাইজেরিয়ান ফুটবলার পল এমিলি। লিগে সুফল আসছে না। কিন্তু অন্যান্য টুর্নামেন্টে গ্রুপপর্ব পেরিয়ে কোয়ার্টার, সেমি বা ফাইনাল খেলছে আরামবাগ। বিগত বছরগুলো থেকে আরামবাগ যেন ঝলছে উঠে। বিগ বাজেটেও দল না, পরিচিত কোনো ফুটবলার নেই। তারপরও আমরাবাগের পারফরম্যান্স প্রশংসনীয়। আগে যাদের পরিচিত ছিল জায়ান্ট কিলার বলে এখন যেন নিজেরাই জায়ান্ট হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে কোচ মারুফুল হকের কথা না বললেই নয়। গতবার তিনি দায়িত্ব নিয়ে আরামবাগকে নিয়ে গেছেন নতুন রূপে। আরামবাগ যেভাবে এগুচ্ছে তা ফুটবলের জন্য সুসংবাদই বালা যায়। নতুন নতুন শক্তির দেখা মিললে সন্ধান পাওয়া যাবে নতুন ফুটবলারের। বাংলাদেশে এখন ফুটবলে যে মানসম্পন্ন ফুটবলার আসছেন বা জাতীয় দলে খেলছে তাদের অধিকাংশেরই হাতেখড়ি আরামবাগ থেকেই। অতীতেও এই ক্লাবে খেলে পরবর্তীতে তারকারখ্যাতি পেয়েছে অসংখ্য ফুটবলার।

সর্বশেষ খবর