শিরোনাম
সোমবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

টাইগারদের টি-২০ চ্যালেঞ্জ শুরু

রাশেদুর রহমান

টাইগারদের টি-২০ চ্যালেঞ্জ শুরু

টেস্ট সিরিজে ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ। ওয়ানডে সিরিজটাও নিজেদের করে নিয়েছেন মাশরাফিরা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে প্রথম ও শেষটা জিতেছে টাইগাররা অনেকটা খেলাচ্ছলেই। মাঝখানে একটা ওয়ানডেতে পথ হারালেও জয়ের রাস্তায় উঠে এসেছে স্টিভ রোডসের শিষ্যরা। সিলেটের পাহাড়ঘেরা সবুজ-শ্যামল মাঠে দারুণ জয়ে সিরিজটা রাঙিয়েছে টাইগাররা। এবার টি-২০ সিরিজ জিতে প্রথমবারের মতো ফুলস্কেল সিরিজ জয়ের রেকর্ড গড়ার সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। এর আগে কখনোই টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০ তিন ফরম্যাটের সিরিজ একসঙ্গে জিততে পারেনি টাইগাররা।

পুণ্যভূমি সিলেট। এমনকি জাতীয় নির্বাচনে ভালো ফলাফলের জন্যও সিলেট থেকে প্রচারণা শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলো। সেখানে বাংলাদেশের টি-২০ সিরিজের সূচনাটা সিলেট থেকে হওয়া তো দারুণ ব্যাপার। এই মাঠে প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচটা দারুণভাবে জিতেছে বাংলাদেশ। টি-২০ সিরিজটাও এবার জয় দিয়ে শুরু করবে বলে আশা করেন ভক্তরা। গুরু স্টিভ রোডস কেবল প্রথম ম্যাচটাই নয়, সিরিজটাই জিততে চান। ‘এমন একটা কীর্তি গড়া আমাদের পক্ষে খুবই সম্ভব। তিনটা সিরিজেই ওদেরকে হারাতে পারলে কী দারুণ ব্যাপার হবে!’ স্টিভ রোডস এভাবেই বললেন। কিন্তু বাস্তবতাটাও তো অস্বীকার করা যায় না। ক্যারিবীয়দের অতীত গৌরবের কিছুই অবশিষ্ট নেই। তারপরও ভারতের মাটিতে ম্যাচ জিতেছে দলটা। বাংলাদেশকেও একটা ম্যাচে হারিয়েছে। এ কারণে সহজেই কোনো কিছু অর্জিত হবে না। বিষয়টা কোচ স্টিভ রোডসও জানেন। ইনজুরি আক্রান্ত অধিনায়ক সাকিবের পরিবর্তে সংবাদ সম্মেলনে এসে রোডস বললেন, ‘ওরা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) কোনো সিরিজ না জিতে একেবারে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে চাইবে না। এ কারণে টি-২০ সিরিজটা আরও কঠিন হবে।’ অবশ্য দলের আÍবিশ্বাস অনেক ভালো। যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো অস্ত্র আছে তার হাতে। সতর্কতার সঙ্গে খেলতে পারলে টি-২০ সিরিজটাও জয় করা সম্ভব বলে মনে করেন স্টিভ রোডস।

সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর নির্ভরতা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজরা। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও দারুণ উন্নতি। মুস্তাফিজুর রহমান প্রথমবারের মতো ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ পাঁচে ঠাঁই করে নিয়েছেন। মিরাজেরও বেশ উন্নতি হয়েছে। বোলিং আর ব্যাটিংয়ের পাশে ফিল্ডিংটাই কেবল এখনো ম্লান। ক্যাচ মিস হচ্ছে নিয়মিতই। ফিল্ডিং মিসের ঘটনাও নেহাত কম নয়। তবে ব্যাটিং আর বোলিংয়ের পারফরম্যান্সে আড়ালে পড়ে যাচ্ছে ফিল্ডিংয়ের ব্যর্থতা। সফলতাও ধরা দিচ্ছে।

আশার বাণী অনেক আছে। এর মধ্যে ছোট্ট একটা দুঃসংবাদ। সাকিব আল হাসান পায়ে আঘাত পেয়েছেন। স্টিভ রোডস বলছেন, আঘাতটা তেমন গুরুতর নয়। নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করার সময় সাইফুদ্দিনের ইনসুইং ইয়র্কারে পায়ে ব্যথা পেয়ে অনুশীলন ছেড়ে যান সাকিব। পরে তো আর সংবাদ সম্মেলনটাই করেননি। তবে সাকিব নাকি আঘাতটাকে ভালোভাবে নিতে পারছেন না। বরফ দিয়ে ব্যথাটা কমিয়ে রেখেছেন ঠিকই। কিন্তু এর কোনো গ্যারান্টি নেই। কোচ ভয় পাচ্ছেন, সকালে ঘুম ভাঙলেই সাকিব ব্যথার কথা জানাতে পারেন!

বাংলাদেশ দারুণ একটা বছর পার করল। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটেই দারুণ সব অর্জন আছে এ বছর। ওয়ানডেতেই যেমন ২০টা ওয়ানডে খেলে জিতেছে ১৩টি। তবে এশিয়া কাপ ও শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে হেরে যাওয়ায় দুঃখ থাকবেই। তারপরও বছরটাকে সফল বলতে হবে। দলটাকে গুছিয়ে নিয়েছেন স্টিভ রোডস। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে চূড়ান্ত একটা টার্গেটও ঠিক করে ফেলেছেন। সেমিফাইনাল খেলতে চান তিনি সামনের বিশ্বকাপে।

মাশরাফি-সাকিব-মুশফিক-তামিম-রিয়াদের পাশাপাশি এখন সৌম্য-লিটন-মিরাজরাও যেমন পারফর্ম করছেন, তার ধারাবাহিকতা থাকলে বিশ্বকাপের প্রাথমিক লক্ষ্যটা তো ঠিকই আছে!

তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ। প্রথমটা সিলেটে। বাকি দুটো ঢাকায়। ‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত মিরপুরে। ২০ ও ২২ ডিসেম্বর ঢাকায় নামার আগে সিলেটের জয়টা হতে পারে এক বড় পুঁজি। আজ প্রথম টি-২০তে সেই পুঁজি সংগ্রহ করতেই নামবে বাংলাদেশ। দেখা যাক, সাকিবের ইনজুরি ভয় কাটিয়ে টাইগাররা লক্ষ্যটা পূরণ করে ঢাকায় ফিরতে পারেন কি না!

সর্বশেষ খবর