বৃহস্পতিবার, ৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

অনুশীলন নিয়েই যত ভোগান্তি

পেশাদার লিগ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

অনুশীলন নিয়েই যত ভোগান্তি

ফুটবলে বাংলাদেশে পেশাদার লিগের যাত্রা ২০০৭ সালে। দেখতে দেখতে ১০টি আসর কেটে গেছে। কিন্তু প্রকৃত পেশাদারিত্বেও চিহ্ন কি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে? কোটি কোটি টাকা খরচ করে দল গড়া হচ্ছে। কেউ কেউ শিরোপা জিতে উৎসব করছে। ব্যস এই পর্যন্ত। পেশাদার লিগে যা যা প্রয়োজন তা কি ক্লাবগুলো পূরণ করছে? জিমনেসিয়াম, তাতো স্বপ্ন বলা যায়। অনেক ক্লাবকে অনুশীলনের জন্য এখনো যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। পেশাদার লিগে এবার ১৩টি ক্লাব অংশ নেবে। ১৮ জানুয়ারি দেশসেরা এই আসরে পর্দা ওঠার কথা।

পেশাদার লিগের অন্যতম শর্ত হচ্ছে অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোর আলাদা প্রশিক্ষণ ভেন্যু থাকতে হবে। কয়টা ক্লাব এই শর্ত মানছে? আসলে মানবেই বা কীভাবে? আলাদা প্রশিক্ষণ করবে সেই মাঠ কোথায়। ঢাকা আবাহনী, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র, বসুন্ধরা কিংস, রহমতগঞ্জ বা ব্রাদার্স ছাড়া কারও কি প্রশিক্ষণের আলাদা মাঠ আছে। তবু আবার কোনো কোনো ভেন্যু প্রশিক্ষণের জন্য পুরোপুরি উপযোগী নয়। শেখ জামাল, শেখ রাসেল ও বসুন্ধরা কিংসের অনুশীলন মাঠকেই ইউরোপের সঙ্গে তুলনা করা যায়। ঢাকা মোহামেডানের মতো ঐতিহ্যবাহী দল জন্ম থেকেই মাঠ সমস্যায় জ্বলছে। যে ক্লাবের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে তাদের প্রশিক্ষণের জন্য ঘুরে বেড়ানোটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। বেশ কিছুদিন আগে এক অনুষ্ঠানে ক্লাবের কর্মকর্তারা ঘোষণা দিয়েছিলেন সাভারে আলাদা ক্রীড়া কমপ্লেক্স হওয়ার পর সব জটিলতা কেটে যাবে। সেই ঘোষণা এখনো মুলা হয়ে ঝুলছে। মতিঝিল ক্লাব ভবনে যে মাঠটি আছে সেখানে মাঝেমধ্যেই মোহামেডান প্রশিক্ষণ করে। কিন্তু এই মাঠ অনুশীলনের জন্য কোনোভাবে উপযুক্ত নয়। গত কয়েক বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির যে সংকটাপন্ন অবস্থা তাতে দল গঠন করায় মুশকিল হয়ে পড়ছে। সেখানে নিজস্ব অনুশীলন মাঠের চিন্তায় করা যায় না। সাবেক নন্দিত ফুটবলার শফিকুল ইসলাম মানিক মোহামেডানের শুধু খেলোয়াড়ই ছিলেন না। বর্তমানে সদস্যও। তিনি আক্ষেপ করে জানালেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি বার বার তাগাদা দিয়েছি। আরও অনেকে দিয়েছেন। তারপরও ক্লাবের নিজস্ব অনুশীলন মাঠের ব্যবস্থা করা যায়নি। সাভারে বিশাল জায়গা থাকার পরও এতদিনে কেন মোহামেডানের কমপ্লেক্স গড়া সম্ভব হয়নি সেটাই রহস্য।’ চট্টগ্রাম আবাহনীও বড় দল। চট্টগ্রামে তাদের জমি থাকলেও অনুশীলনের জন্য উপযোগী নয়। ক্লাব কমপ্লেক্স করার কথা থাকলেও হতে পারেনি। অথচ তাদের সেই সামর্থ্য রয়েছে। ঢাকায় ক্লাবটির অনুশীলনে ভোগান্তির শেষ নেই। একই অবস্থা মুক্তিযোদ্ধা, আরামবাগ, নফেল স্পোর্টিং ও টিম বিজেএমসির। সত্যি কথা বলতে কি বাফুফে এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব এড়াতে পারবে না। দেশের ফুটবলে অভিভাবক সংস্থাটি দীর্ঘদিনের সমস্যার ব্যাপারে কোনো নজর দেয়নি। লিগ খেলবে অথচ অনুশীলনের সুযোগ পাবে না সেখানে খেলোয়াড়দের কাছে কি আশা করা যায়?

সর্বশেষ খবর