শনিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

কিংসদের হারিয়ে সুযোগ খুঁজছে সিক্সার্স

ক্রীড়া প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম থেকে

কিংসদের হারিয়ে সুযোগ খুঁজছে সিক্সার্স

রান করছে সিলেট সিক্সার্সের লিটন ও জেসন রয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে ছিল সিলেট সিক্সার্স। রাজশাহী কিংসের সামান্য একটা ধাক্কা সিক্সার্সদের হাজার ফুট নিচে নিক্ষেপ করতে পারত। তা হয়নি। খাদের কিনারে থাকলেই যে আত্মাহুতি দিতে হবে, তা কে বলল! সিলেট সিক্সার্স বরং রাজশাহী কিংসকেই বিপদে ফেলে দিল। সুযোগ তৈরি করল লাফিয়ে পাহাড়ে চড়ার। শীর্ষ চারে স্থান পাকাপোক্ত অবশ্য হয়নি। তবে এখন আর একেবারে অসম্ভবও নয়! বেশকিছু যুক্তির যথার্থতার ওপর নির্ভর করছে সিলেটের ভবিষ্যৎ। পরের তিনটা ম্যাচ জিতলে ভাগ্য খুলে যেতে পারে তাদের!

বিপিএল সিক্সে চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচ। দর্শক সমাগম বরাবরের মতোই ‘উপচে পড়া’। ধারণক্ষমতার চেয়ে কিছুটা বেশিই হবে হয়তো! উইকেটটাও দারুণ। ব্যাটিং সহায়ক। টি-২০’র দর্শকরা সচরাচর যা দেখতে চায়, তাই দেখাল সিলেট সিক্সার্স। হালকা ঘাসযুক্ত সবুজ রঙা উইকেটে ম্যাচের শুরু থেকেই রানের জন্য হামলে পড়েন সিলেট সিক্সার্সের ব্যাটসম্যানরা। ১০ ওভারে ৯০। ২০ ওভারে ১৮০। এই হিসাব দিয়ে অবশ্য ম্যাচটার মাহাত্ম্য বুঝা যাবে না। শেষ চার ওভারের রান আলাদা করলেই কেবল ঝড়ের প্রকৃতিটা বুঝা যায়। সোহাইল তানভীর, অলক কাপালি আর নওয়াজরা শেষ চার ওভারে রান তুলেন ৫৬! এই ছোট্ট ঝড়টাই সিলেটের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হয়ে যান জাতীয় দলে ডাক পাওয়া ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান (১)। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার সুখবর শোনার পর প্রথম সুযোগেই ব্যর্থ হলেন তিনি। অবশ্য জ্যাসন রয় (৪২), লিটন কুমার দাস (২৪) আর আফিফ হোসেন (২৮) ধাক্কাটা সামলে নেন। রান তোলেন ঝড়ের গতিতে। সেই গতি মাঝখানে থামলেও শেষদিকে পুষিয়ে দেন সোহাইল তানভীর (২৩), নিকোলাস পুরান (১৯) আর অলক কাপালিরা (১৬)। শেষ ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান বল হাতে এসেও রানের গতি থামাতে পারেননি। তবে ব্যাটিং উইকেট থাকায় খুব একটা দুশ্চিন্তা ছিল না রাজশাহীর। কিন্তু তাসের ঘরের মতোই ভেঙে পড়ে তারা। সিলেট সিক্সার্সের ছুড়ে দেওয়া ১৮১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৮.২ ওভারে অলআউট হয় মাত্র ১০৪ রানে। ৭৬ রানের বিশাল জয়ে নতুন করে আশা জাগিয়ে তোলে সিলেট সিক্সার্স। অন্যদিকে ম্যাচের সর্বোচ্চ রান (৫০) করেও রাজশাহী কিংসকে জয়ের পথে তুলতে পারেননি ফজলে রাব্বি। বরং ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেন সিলেট সিক্সার্সের সোহাইল তানভীর। ব্যাট হাতে ১০ বলে ২৩ রান করার পর বল হাতে ৩ উইকেট নেন মাত্র ১৭ রানে। সিলেটের পক্ষে ৩ উইকেট নিয়েছেন নওয়াজও। এ ছাড়াও দুটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও অলক কাপালি।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে ফজলে রাব্বি দুষলেন ভাগ্যকে। অন্যদিকে নতুন অধিনায়কত্ব পাওয়া কাপালি জানিয়ে গেলেন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আশা ছাড়ছে না সিলেট সিক্সার্স। পরের ম্যাচগুলো জিতে শীর্ষ চারে খেলার স্বপ্নটা সত্যি করতে বদ্ধপরিকর দলটা। ওয়ার্নার চলে যাওয়ার পর সোহাইল তানভীরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল অধিনায়কের। গতকাল ভাগ্য পরীক্ষার জন্যই নাকি কাপালিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সত্যিই ভাগ্যবান কাপালি!

অনেক যদি দিয়ে এখনো টিকে আছে বিপিএল সিক্সে সিক্সার্স এবং কিংসের আশা। শীর্ষ চারে যেতে হলে নিজেদের জয়টাই কেবল যথেষ্ট হবে না তাদের, প্রতিপক্ষের ম্যাচের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে। বিশেষ করে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সের ম্যাচের দিকে। অবশ্য গতকাল রাজশাহী কিংস হেরে যাওয়ায় সুবিধা হলো মাশরাফিবাহিনীরই।

সর্বশেষ খবর