রবিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

লড়াইয়ে ফিরল রাজশাহী

ক্রীড়া প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম থেকে

লড়াইয়ে ফিরল রাজশাহী

আবারও মুস্তাফিজ ম্যাজিক। চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে তার শেষ ২ ওভার স্বাগতিকরা খেলতে পারেনি। ৩ উইকেট পান তিনি। চিটাগংয়ের উইকেট পতনের পর কাটার মাস্টারকে নিয়ে উৎসবে মেতেছেন রাজশাহী ক্রিকেটাররা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্ব নতুন আঙ্গিক নিয়ে এল। ঢাকা ও সিলেটে অনেক ম্যাচেই রান খরা দেখেছেন দর্শকরা। চট্টগ্রাম সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রথমে ব্যাটিং করলেই রানের পাহাড় গড়ার সুযোগ পাচ্ছেন ব্যাটসম্যানরা। উইকেটে যেন চার-ছক্কা লুকানো আছে। সেগুলো খুঁজে খুঁজে বার করছেন ব্যাটসম্যানরা। গতকাল রাজশাহী কিংসও সুযোগটা কাজে লাগাল। চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ১৯৮ রানের দারুণ সংগ্রহ গড়ে তারা। পরে ব্যাট করতে নেমে চিটাগং ভাইকিংস নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রান তুলে। রাজশাহী জিতে যায় ৭ রানে।

ম্যাচটা রাজশাহী কিংসের জন্য বাঁচা-মরার। চিটাগং ভাইকিংসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তবে বাঁচা-মরার নয়। এ কারণেই কি না মুশফিকুর রহিম টস জিতেও আবারও পরেই ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন। অথচ একদিন আগে এই মাঠেই রংপুরের রানের (২৩৯) নিচে চাপা পড়েছিল তার দল। সুযোগটা পুরোপুরিই কাজে লাগায় রাজশাহী কিংস। ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ সূচনা করেন চার্লস এবং সৌম্য সরকার। মাঝখানে দলের বাইরে ছিলেন সৌম্য। গতকাল ফিরে শুরুটা ভালো করলেও অবশ্য বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি। ২০ বলে ২৬ রান করেই সাজঘরে ফিরেন তিনি। খালেদ আহমেদের বলে মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দেন সৌম্য। তবে চার্লস এবং লরি ইভানস রানের গতি খুব একটা থামতে দেননি। চার্লস ৪৩ বলে ৫৫ রান করে আবু জায়েদ রাহির বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পা দেন। অন্যদিকে খালেদের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন লরি ইভানস। ২৯ বলে ৩৬ রান সংগ্রহ করেন ইভানস। শেষ দিকে ছোট খাট দুটি ঝড়ই রাজশাহী কিংসকে বড় সংগ্রহ এনে দেয়। রায়ান মাত্র ১২ বলে করেন ২৭ রান। ৪টা ছক্কা হাঁকান তিনি। এছাড়া ক্রিস্টিয়ান জনকার ১৭ বলে ৩৭ রানের ঝড়োগতির ইনিংস উপহার দেন। তিনি ছক্কা হাঁকান ৩টি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে নিরাপদ সংগ্রহই গড়ে তোলেন মেহেদী হাসান মিরাজরা। চিটাগংয়ের পক্ষে বল হাতে ২টি উইকেট শিকার করেন খালেদ আহমেদ। এছাড়াও ১টি করে উইকেট নেন আবু জায়েদ ও রবিউল হক।

১৯৯ রান টার্গেট হলেও চিটাগং যেভাবে খেলছিল তাতে মনে হচ্ছিল তারা জিতে যাবে। অধিনায়ক মুশফিক ও ইয়াসির আলি ৩৮ বলে ৫৭ রান তুললে ধীরে ধীরে বিজয়ের পথে এগোচ্ছিল স্বাগতিকরা। ইয়াসির সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেন। কিন্তু মুস্তাফিজ তার শেষ ২ ওভারে অসাধারণ বোলিং করে দলকে জেতান। এ জয়ে রাজশাহী সুপার ফোরের আশা ভালোভাবে টিকে থাকল।

চিটাগং ভাইকিংস ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে এখনো শীর্ষে থাকলেও বাকি চার দল ঢাকা ডায়নামাইটস, রংপুর রাইডার্স, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও রাজশাহী কিংস ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। তবে তারা ইতিমধ্যে ১০টি ম্যাচ খেলেছে। তাদের দুই ম্যাচে জেতার ওপর নির্ভর করবে সুপার ফোরে যাবে কিনা। মূল্যবান ৩ উইকেট পাওয়ার কারণে কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার পেয়েছেন। জয়ের পর তিনি বলেন, ‘ম্যাচটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ভালো খেলেই আমরা জিতেছি। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।’

এদিকে খুলনা টাইটানসকে হারিয়ে সিলেট সিক্সার্স এখনো সুপার ফোরের খেলা সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সিলেট ১৯৫ রানের বিশাল সংগ্রহ করে। পরে নেমে খুলনা ১৩৭ রানে থেমে যায়। এ জয়ে ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করল সিলেট। সাব্বির রহমান ২৯ বলে ৪৪ রান করে প্রমাণ দিয়েছেন ব্যাটিংয়ে এখনো তিনি জ্বলে উঠতে পারেন। আফিফ ৪৯, মোহাম্মদ নওয়াজ ৩৯ এবং নিকোলার ১২ রানও বড় ভূমিকা রেখেছে সিলেটের জয়ে। ট্রেইলর সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন। আরিফুল ২৪ ও জুনায়েদ সিদ্দিকির ২০ ছাড়া ব্যাটিংয়ে বাকিরা কেউ সুবিধা করতে পারেননি। সিলেটের পক্ষে নাবিল ৩টি, তাসকিন ২টি, সোহাইল, এবাদাত, নওয়াজ ও কাপালি ১টি করে উইকেট পান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর