শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

টিটির রানী টিটিতে নেই

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টিটির রানী টিটিতে নেই

জোবেরা রহমান লিনু

টেবিল টেনিসে মেয়েদের এককে ১৬ বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন জোবেরা রহমান লিনু। এমন বিরল কৃতিত্বে বাংলাদেশের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্রিনিস বুকে নাম উঠেছে তার। এটি নিঃসন্দেহে দেশের জন্য বড় গৌরবের। সত্যি বলতে কি বাংলাদেশে টিটির জনপ্রিয়তা পেছনে লিনুর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। খেলা ছেড়ে দিলেও টেবিল টেনিসের মায়া ছাড়তে পারেননি তিনি। এ খেলার উন্নয়নে পেছনে ভূমিকা রেখেই চলেছেন। অথচ তিনিই কি না অভিমানে টেবিল টেনিস থেকে দূরে সরে গেলেন। বাংলাদেশের সুপারস্টার লিনু। তাই তার যে কোনো কথা বা মন্তব্যের গুরুত্ব থাকে অন্যরকম। তার অভিমান নিয়েও ক্রীড়াঙ্গনে আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কথা হচ্ছে কি এমন ঘটল যে ক্ষোভ বা অভিমানে টিটি থেকে আপাতত সরে গেলেন। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি টেবিল টেনিস ফেডারেশনের নির্বাচন।

তবে সেই নির্বাচনের আর প্রয়োজন পড়ছে না। কেননা একক প্যানেলে ২৪টি পদে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করায় সবাই নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ যে কোনো সময় প্রজ্ঞাপনে নির্বাচিত কমিটির নাম ঘোষণা করবে। এই একক প্যানেলে সহ-সভাপতি হিসেবে নিলুরও নাম ছিল। কিন্তু মনোনয়নপত্রের শেষ দিনে আচমকাভাবে নিলু তার নাম প্রত্যাহার করে নেন। অর্থাৎ নতুন কমিটিতেই তিনি থাকছেন না।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম। আগের কমিটিতে সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা আবাহনীর টেবিল টেনিস কমিটির চেয়ারম্যানও তিনি। শুধু তাই নয় আবাহনীর ফুটবল ও ক্রিকেটে দলবদলে ভূমিকা রাখছেন জাহাঙ্গীর। সুতরাং যোগ্য সংগঠকই টিটি সাধারণ সম্পাদক হতে চলেছেন। টিটিতে নিলুর সঙ্গে কাজ করেছেন জাহাঙ্গীর। বলা যায় তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় আবাহনী টিটি দল গড়ে। নিলু বলেছেন, সহ-সভাপতির লিস্টে তার নাম এক নম্বরে না থাকায় অপমান বোধ করছেন। তাই বাধ্য হয়েই নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। টিটিতে লিনুর যে অবদান সহ-সভাপতির তালিকায় তারই নাম সবার ওপরে থাকার কথা। অথচ সেখানে কি না এক নম্বর সহ-সভাপতির তালিকায় রাখা হয়েছে বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হাসান মুনীরকে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল আলোচনা হয় জাহাঙ্গীরের সঙ্গে। প্রথমে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই ক্রীড়াঙ্গনে জড়িত রয়েছি। তবুও ব্যস্ততার কারণে সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদটি চাচ্ছিলাম না। দেখলাম আমাকে জেনারেল সেক্রেটারি রেখেই প্যানেল সাজানো হচ্ছে। তাই আর না করতে পারিনি। জাহাঙ্গীর বলেন, আমাদের বিপক্ষে একটি প্যানেল গড়ার চিন্তা ভাবনা চলছিল। সংখ্যায় তারা ৫/৬ জন ছিল। অভিজ্ঞ সংগঠক আশিকুর রহমান মিকু ভাই বললেন, ‘হাস্যকরের নির্বাচনের প্রয়োজন কি? বরং ওদের নিয়ে মিলে মিশে কমিটি গঠন করুন। মিকু ভাইয়ের কথায় আমি ও নিলু কমিটি গঠন করি। পরে অবশ্য মিকু ভাইয়েরা কিছু সংশোধনী করে দেন। সেই তালিকায় সহ-সভাপতি হিসেবে নিলুর নাম ছিল কি? জাহাঙ্গীর বলেন, কে ১, ২, ৩ বা ৪-এ থাকবে তা আমরা গুরুত্ব দেয়নি। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই টিটির স্বার্থের কথা চিন্তা করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা। নিলুও তা জানতেন। কিন্তু হঠাৎ করে কেন যে নাম প্রত্যাহার করল বুঝলাম না। মুনীরের আগে তার নাম আছে বলেই কমিটি থেকে দূরে সরে গেছেন। বেশ কটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। আমার প্রশ্ন যখন একক প্যানেল তৈরি করা হয় তখন কি এমন কোনো কমিটমেন্ট করা হয়েছিল ১ নম্বর বা সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে নিলুই থাকবেন? জাহাঙ্গীর বলেন, ‘যাক বির্তক তুলে লাভ নেই। আমি যোগ্যদের সব সময় প্রাধান্য দেই। তাই নিলুকে অনুরোধ করেছি, প্লিজ তুমি নাম প্রত্যাহার করো না। তা ও শোনেননি। কমিটিতে থাকবে কি থাকবে না এটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবুও বলবো টিটির কর্মকাে  নিলুকে অবশ্যই ফিল করি। আমার বিশ্বাস নিলু টেবিল টেনিস থেকে সরে যাবেন না। ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ না করলে টিটির উন্নয়ন সম্ভব নয়।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর