বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ছন্দে ফিরেছে শেখ জামাল

রাশেদুর রহমান

ছন্দে ফিরেছে শেখ জামাল

জয়ের নায়ক সাখওয়াত হোসেন রনি

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। প্রথা মেনেই যেন দর্শকশূন্য গ্যালারি। দর্শকদের চেয়ে প্রেস বক্সে সাংবাদিকদের সংখ্যাই কিছুটা বেশি হবে। দর্শক না থাকলেও দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো বাংলাদেশের ফুটবলে এখন অনেক কিছুই আছে। তেমনি একটা ঘটনার দেখা মিলল সাইডলাইনে। দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের আর্জেন্টাইন ট্রেনার দিয়েগো ইজেকুয়েল রোহাস। সাবস্টিটিউটদের প্রস্তুত করে তুলছেন তিনি দৃষ্টিনন্দন অনুশীলনের মাধ্যমে। মিডফিল্ডার ইমরান হোসেন রুবেলের কঠোর পরীক্ষা নিয়ে তবে মাঠে ছাড়লেন তাকে। সংক্ষিপ্ত ট্রেনিংয়ে ছিল জরুরি প্রয়োজনে হেড, ব্লকিং, নিখুঁত পাসিং, ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে শরীরের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এবং আরও অনেক কিছু। এভাবেই একের পর এক সাবস্টিটিউটদের নিয়ে কাজ করছেন দিয়েগো আর মাঠে নামাচ্ছেন। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ক্লান্ত-শ্রান্ত ফুটবলারদের বিশ্রামে টেনে আনছেন কোচ আফুসি। দারুণ একটা দল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। দলের গাম্বিয়ান তারকা সলোমন কিং কেবল অধিনায়কের ব্যাজ পরেই থেমে থাকলেন না, ম্যাচটায় আক্রমণেও নেতৃত্ব দিলেন। প্রায় প্রতিটা আক্রমণেই তার ভূমিকা থাকল। কম গেলেন না আর্জেন্টাইন লুসিয়ানো এমানুয়েল আরায়া পিরেজও। ম্যাচ শেষে তাকে সাধুবাদ জানাতেই দুহাত দিয়ে অনেকটা জাপটে ধরলেন। ‘গ্রেট একটা ম্যাচ’ কমপ্লিমেন্টের জবাবে বারবার ধন্যবাদ দিলেন। আর্জেন্টিনায় নিশ্চয়ই কোনো ম্যাচে এমন দর্শকখরা থাকে না। লুসিয়ানো অবশ্য অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। বাংলাদেশের ফুটবলে দর্শক ফেরানোর লড়াইয়ের তিনিও এখন অকুতোভয় সৈনিক। শেখ জামালের প্রধান তারকা অবশ্য গাম্বিয়ার সলোমন কিং। তিনি ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়ে গেলেন দ্রুততার সঙ্গে। গতকাল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের জয়টা কিন্তু বিদেশি নয়, দেশি ফুটবলারের পা থেকেই এলো। ম্যাচ শুরুর দ্বিতীয় মিনিটেই লুসিয়ানোর দারুণ এক এসিস্টে জয়সূচক গোলটা করেন সাখাওয়াত হোসেন রনি। শেখ জামাল জয় পেল ওই এক গোলেই (১-০)। শুরুটা ভালো না হলেও টানা তিন ম্যাচ জিতে ছন্দে ফিরেছে শিরোপাপ্রত্যাশী শেখ জামাল। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের কোচ যোসেফ আফুসি অবশ্য দেশি-বিদেশি ফুটবলাওে কোনো পার্থক্য করেন না। ম্যাচ শেষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের লাল অ্যাথলেটিক ট্র্যাকে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘আমার কাছে দেশি-বিদেশি ফুটবলারের আলাদা কোনো মূল্য নেই। গোলটা সাখাওয়াত হোসেন রনি করেছে শেখ জামালের পক্ষে। জয়টা শেখ জামালের হয়েছে। এখানে দলের জয়টাই মুখ্য। গোলটা কে করেছে তা দেখতে গেলে একটা দল হিসেবে খেলা সম্ভব হবে না।’ আফুসি অবশ্য দলের খেলায় খুব একটা সন্তুষ্ট নন। তিনি বরং ভাগ্যকেই ধন্যবাদ দিচ্ছেন। ‘আমাদের অনেকটাই ইনজুরি সমস্যা আছে। লুসিয়ানোও তো ইনজুরিতে আক্রান্ত। তাও সে দারুণ খেলেছে। আজ (গতকাল) আমরা খুব একটা ভালো খেলতে পারিনি। ভাগ্য সহায়ক হয়েছে বলেই জয়টা পেয়েছি।’

 সত্যিই তো, ব্রাদার্স ইউনিয়নের অন্তত তিনটা আক্রমণ ছিল ভয়ানক। নেহাত ভাগ্যের জোরেই গোল হজম করতে হয়নি তাদের। ব্রাদার্স ইউনিয়নের কোচ সৈয়দ নাইমুদ্দিনও আফসোস করে বলে গেলেন, ‘ভাগ্যটা আমাদের ভালো ছিল না। না হলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারতাম।’ অবশ্য কিছু সহজ সুযোগ হারিয়েছে শেখ জামালও।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর