বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিতর্কিত রেফারিংয়ে পয়েন্ট হারাল বসুন্ধরা কিংস

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বিতর্কিত রেফারিংয়ে পয়েন্ট হারাল বসুন্ধরা কিংস

বসুন্ধরা কিংসের বখতিয়ারের আক্রমণ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ফুটবল কত জনের খেলা? এই প্রশ্ন সত্যিই হাস্যকর। কেননা ফুটবল যে এগার জনের খেলা কে-না জানেন। তবে মাঝে মধ্যে আবার ফুটবল ১২ বা ১৪ জনের খেলায় পরিণত হয়। এটা আবার শুধু বাংলাদেশের বেলায় প্রযোজ্য। তাও আবার ঘরোয়া আসরকে ঘিরে। গতকাল নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে এমনই এক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। বিকালে মুখোমুখি হয়েছিল এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে আলোচিত দল বসুন্ধরা কিংস ও টিম বিজেএমসি। নবাগত দল হলেও বসুন্ধরা কিংস দেশি-বিদেশির সংমিশ্রণে স্মরণকালের সেরা দল গড়ে। স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঘরোয়া ফুটবলে নতুন এক ইতিহাস লিখে ফেলে।

টার্গেট এখন পেশাদার লিগে ট্রফি জেতা। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বসুন্ধরা কিংস। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে  সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল তারা। তবে গতকাল তাদের জয় রুখে দেয় টিম বিজেএমসি। ম্যাচটি গোল শূন্য ড্র হয়। নোয়াখালী বিজেএমসির হোম ভেন্যু হলেও শক্তির বিচারে বসুন্ধরা কিংসের সামনে তাদের দাঁড়ানো কথা নয়। গোল বন্যায় ভেসে গেলেও অবাক হওয়ার কিছুই ছিল না। সেই বিজেএমসি কি-না রুখে দিল দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী দলকে।

ড্রর পর বিজেএমসির খেলোয়াড়রা যে ধরনের উৎসবটা করে তাতে মনে হচ্ছিল শিরোপাই যেন জয় করেছে। আনন্দতো হওয়ারই কথা। যে বসুন্ধরা কিংস ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেয়, তাদের কাছ থেকেই কিনা পয়েন্ট কেড়ে নিল দলটি। এই কৃতিত্ব কার? বসুন্ধরা কিংসকে রুখে দেওয়ার নায়ক কে? আবারও বলি এই ড্র অবশ্যই বিজেএমসির গৌরবের। কিন্তু নায়ক যদি রেফারি জালাল উদ্দিনকে বলা হয় তা কি ভুল হবে? গতকাল যারা খেলা দেখেছেন তারা নিশ্চয় বলতে পারবেন কেন এই প্রশ্ন উঠবে। আসলে এটাই যৌক্তিক।

এটা ঠিক গতকাল কেন জানি বসুন্ধরা কিংসের খেলা আগের মতো গোছালো ছিল না। তবু একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায় তারা। ব্রাজিলিয়ান মার্কোস, মতিন মিঞারা সহজ সহজ সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি। বিজেএমসির গোলরক্ষক মিলন দৃঢ়তার সঙ্গে বেশ কটি আক্রমণ রুখে দেন। এভাবেই প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয়।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মার্কোস একাই দুটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। এরপর আবার মতিন মিঞা। চাপ অব্যাহত রাখলেও অযথা অফসাইডের বাঁশি বেজে উঠলে কিংসের খেলোয়াড়দের মনোযোগটা নষ্ট হয়ে যায়। ৭৭ মিনিটেই ঘটে সেই ঘটনা। স্পষ্ট হয়ে উঠে বসুন্ধরা কিংসের পয়েন্ট নষ্টের প্রচেষ্টা। বিজেএমসির স্যামসন প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের সামনে গোল করতে যান। ডিফেন্ডার নাসির তার কাছ থেকে বল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। সবাইকে অবাক করে রেফারি জালাল, ফাউল ধরে নাসিরকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন।

ফাউল না হয় ধরতেই পারেন। কিন্তু তা কি লাল কার্ড দেখানোর মতো অপরাধ ছিল? অথচ তার আগে স্যামসন যে নাসিরকে হাত দিয়ে ধাক্কা দেন তা এড়িয়ে যান রেফারি। রেফারির এমন আচরণে কিংসের খেলোয়াড়রা ভেঙে পড়েন। গোলশূন্য অবস্থায় মাঠ ছাড়ে তারা। বিতর্কিত রেফারিংয়ের প্রথম হোঁচট খেয়ে কিংসের ৬ ম্যাচে পয়েন্ট এখন ষোলোতে। কথা হচ্ছে কারও ইন্ধনে কি এসব করা হচ্ছে। তা না হলে আগে ম্যাচে পরিষ্কার গোল করার পরও অফসাইডে তা কিংসকে বঞ্চিত করা হয়েছিল কেন।

গতকাল অযথা লাল কার্ড। রেফারিং মান যদি এমনই হয় তাহলে মাঠে খেলে আর লাভ কি? টেবিলে সিদ্ধান্ত নিয়েই বিশেষ কোনো দলকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হোক। গতকাল রাতে এনিয়ে কথা হয় বাফুফে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদী এমপির সঙ্গে। তিনি বলেন, ম্যাচে আমি ছিলাম না। তবে রেফারিং পক্ষপাতিত্ব হয়ে থাকলে অবশ্যই তদন্ত হবে।

সর্বশেষ খবর