রবিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

রেফারি নিয়েই যত কথা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

রেফারি নিয়েই যত কথা

বিতর্কটা আগেও হয়েছে, এখনো হচ্ছে। বিতর্ক বা প্রশ্ন যায় বলি না কেন, তা ঘরোয়া ফুটবলে রেফারিং নিয়ে। এক সময়ে ঢাকার মাঠে বিদেশি ফুটবলারের সঙ্গে দেখা যেত বিদেশি রেফারিদের। অথচ ওই সময়ে বাংলাদেশে এক্সপার্ট রেফারির অভাব ছিল না। তবুও ক্লাবগুলো পুরোপুরি সন্তুষ্ট না থাকায় বাফুফে বিদেশি রেফারি উড়িয়ে আনতো। থাইল্যান্ডের বিখ্যাত রেফারি ওয়াতনা ঢাকা লিগে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলো পরিচালনা করেছেন। মালয়েশিয়ার রেফারিও বাঁশি বাজিয়েছেন। এসেছেন ভারতের রেফারিরাও।

ঘরোয়া ফুটবলে বিদেশি রেফারি আনাটা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু দেশি রেফারির বাঁশি বাজানো নিয়ে যদি অভিযোগ উঠে তখন বিকল্প পথ হিসেবে বিদেশি রেফারি আনা হলে ক্ষতিতো নেই। বাংলাদেশে পেশাদার লিগ মাঠে গড়ানোর পর বিদেশি রেফারির দেখা মেলেনি। এক্ষেত্রে বাফুফের বক্তব্য হচ্ছে বিদেশির প্রয়োজন দেখছি না। বাংলাদেশের রেফারিরা আন্তর্জাতিক ম্যাচে সুনাম কুড়াচ্ছেন। সেক্ষেত্রে বিদেশি রেফারি এনে লাভ কি? বাফুফে বলছে প্রয়োজন নেই। অথচ হকির প্রিমিয়ার লিগে এখনো বিদেশি আম্পায়ারদের আনা হচ্ছে। গেল লিগেও চীনের আম্পায়াররা হকির গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ পরিচালনা করেছেন।

লিগ কমিটির চেয়ারম্যান বাফুফে সিনিয়র সভাপতি সালাম মুর্শেদি এমপি বলেছেন, কোনো ক্লাবই লিখিতভাবে বিদেশি রেফারির জন্য দাবি জানায়নি। তার মানে দেশি রেফারি নিয়ে সবাই সন্তুষ্ট। বাস্তবে কি ক্লাবগুলো সন্তুষ্ট? তাহলে প্রতি মৌসুমে রেফারির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলছে কেন? গত বছর শীর্ষস্থানীয় একটি ক্লাব সংবাদ সম্মেলন করে রেফারির বিরুদ্ধে শুধু পক্ষপাতিত্বের অভিযোগই তোলেনি টিভির রিপ্লেতে ধারণকৃত ভিডিও প্রদর্শন করেছে। সেখানে স্পষ্ট দেখা গেছে গোল লাইন ক্রস করার পরও রেফারি তাদের ন্যায্য গোল দেয়নি। এমন কি প্রতিপক্ষ দলটি যে গোলটি করে তাতেও ভিডিওতে অফসাইডের প্রমাণ মিলে।

বাফুফের কাছেও নিশ্চয় সেই ম্যাচের ভিডিও ফুটেজ ছিল। এরপরও কি সেই রেফারির বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে? বিদেশি রেফারিরাও ভুল করেন। ৯০ মিনিটের লড়াইয়ে ছোট-খাটো ভুল হতেই পারে। রেফারিরাই বলেন, মানুষ মাত্রই ভুল হতে পারে। কিন্তু গত কয়েক বছর পেশাদার লিগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে যা ঘটেছে তা কি শুধুই ভুল? রেফারি যদি মাঠে নামার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তার পছন্দের দলকে জেতাতে হবে তাহলে সেই ম্যাচের কি গুরুত্ব থাকে।

একটা কথা স্বীকার করতে হবে ঘরোয়া ফুটবলে আগের সেই জনপ্রিয়তা বা জৌলুস নেই। তারপরও ধন্যবাদ দিতে হয় ক্লাবগুলোকে। ফুটবলে এমন সংকটাপন্ন অবস্থায় তারা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে দল গড়ছে। বিশেষ করে যারা শিরোপা জেতার জন্য দল গড়ে তাদের বাজেট আকাশ ছোঁয়ার মতো।

এমন কোনো দল যদি রেফারির পক্ষপাতিত্বে শিরোপা দৌড় থেকে ছিটকে যায় এর চেয়ে বড় ট্র্যাজেডি আর কি হতে পারে। একাদশ পেশাদার লিগ মাঠে গড়িয়েছে অনেক আগেই। অষ্টম রাউন্ডের খেলা চলছে। রেফারিং নিয়ে এখনই বিতর্ক উঠেছে। এমন কি ম্যাচ কমিশনারের দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সামান্য ফাউলেও দেখানো হচ্ছে লাল কার্ড। আক্রমণ থামাতে বাজানো হচ্ছে অযথা  অফসাইডের বাঁশি। মনে হচ্ছে কারও নির্দেশনায় মাঠে এসব ঘটছে। বাফুফে সিনিয়র সহসভাপতি ও লিগ কমিটি চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদী এমপি বলছেন রেফারিং নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো দল লিখিত অভিযোগ করেনি। তাই পক্ষপাত্বিতের প্রশ্ন উঠছে কেন। কথাটা যৌক্তিক কিন্তু লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কখনো কি কোনো ক্লাব প্রতিকার পেয়েছে। শাস্তি দেওয়া হয়েছে কোনো রেফারিকে?

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর