সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সবার ওপরে বসুন্ধরা কিংস

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সবার ওপরে বসুন্ধরা কিংস

ঘরের মাঠে শুরুতেই পিছিয়ে ছিল বসুন্ধরা কিংস। পরে ম্যাচে সমতা ফেরার পাশাপাশি মতিন মিয়ার গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে জিতেই মাঠ ছাড়ে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

এক জয়ে তিনে থেকে শীর্ষে উঠে এলো নবাগত বসুন্ধরা কিংস। গতকাল নিজ ভেন্যু নীলফামারির শেখ কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ৩-২ গোলে আরামবাগকে হারায় তারা। এই জয়ে সাত ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে অপরাজিতভাবে সবার ওপরে আলোচিত বসুন্ধরা কিংস। এক ম্যাচ বেশি খেলে ঢাকা আবাহনী ১৮ পয়েন্টে দ্বিতীয় স্থানে। অন্য দিকে এক ম্যাচ কম খেলে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে। তারাও এখনো কোনো ম্যাচে হারেনি।

আগের ম্যাচে নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে অনুপযুক্ত মাঠে টিম বিজেএমসির বিপক্ষে গোল শূন্য ড্র করে মূল্যবান পয়েন্ট হারায় বসুন্ধরা কিংস। অবশ্য এই ড্রর পেছনে রেফারি জালালের ভূমিকাও কম ছিল না। যাক শীর্ষে ফিরতে গতকাল জয় ছাড়া বিকল্প কোনো পথ ছিল না কিংসের। আরামবাগ এমন একটা দল যারা প্রতি মৌসুমেই বড় দলকে রুখে দেয়। তাই জায়ান্ট কিলারের খ্যাতিও পেয়েছে তারা।

ফেবারিট বসুন্ধরা কিংসের পয়েন্ট কেড়ে নিয়ে চমক সৃষ্টি করতে পারেনি আরামবাগ। কিন্তু শুরুতে বড় একটা ধাক্কা দেয়। গ্যালারির দর্শকরা যখন আশায় ছিল যে কোনো সময়ে তাদের প্রিয় দল বসুন্ধরা গোল করে এগিয়ে যাবে। সেখানে কি না উল্টো গোল হজম করে বসল তারা। ২৩ মিনিটে কিংসের রক্ষণভাগের ভুলে আরিফুর রহমানের গোলে এগিয়ে যায় আরামবাগ।

খেলার ধারার বিপরীতে গোল খেয়ে হতবাক হয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। তবে দেরি আর করেনি। গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন কলিনড্রেস, মতিন মিয়া, মার্কোসরা। ২৫ মিনিটেই কিংসের শিবিরে স্বস্তি ফিরে আসে। আরামবাগের জাহিদুল বাবু প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে নিজেদের জালে বল পাঠিয়ে দেন। ম্যাচে ফিরেই গর্জে উঠে শিরোপা প্রত্যাশী দলটি। একের পর এক আক্রমণ করে আরামবাগকে দিশাহারা করে ফেলে।

এ সময়ে ড্যানিয়েল কলিনড্রেসের পরিশ্রমী খেলা ছিল চোখে পড়ার মতো। ৩৪ মিনিটে তাই নিখুঁত পাস থেকে মতিন মিয়া দুর্দান্ত গোল করে কিংসকে এগিয়ে রাখেন। লিগে এটি তার চতুর্থ গোল। বিরতির আগে আরও একটি গোল। ৪২ মিনিটে আলমগীর কবির রানার পাস থেকে মার্কোস ডি সিলভা গোল করেন।

৩-১ গোলে এগিয়ে বসুন্ধরা কিংস। পুরো ম্যাচই তাদের নিয়ন্ত্রণে। মনে হচ্ছিল দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধানটা আরও বড় হবে। গোল উৎসব করে মাঠ ছাড়বে তারা। কিন্তু দেখা মিলে ভিন্ন দৃশ্যের। আরামবাগ বরং ম্যাচে ফিরতে সমান তালে লড়তে থাকে। ৫৩ মিনিটে অভিজ্ঞ জাহিদ হোসেনের দারুণ এক ফ্রি কিকে ব্যবধান কমায় আরামবাগ। বল পেয়ে ভলিতে জালে বল পাঠালেন কিংসলে।

ম্যাচে তখন অনেক সময় বাকি। পাল্টা-পাল্টি আক্রমণ চলছিল। কে যে গোল করবে বলা যাচ্ছিল না। সাধারণত এ সময়ে জয় ধরে রাখতে দল ডিফেন্সশিপে মনোযোগী হয়ে পড়ে। কিন্তু কিংসের কোচ অস্কার শিষ্যদের অল আউট ফুটবল খেলায়। ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগও পেয়েছিল। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি দলের খেলোয়াড়রা। একটা কথা না বললেই নয়, স্বাধীনতা কাপ বিজয়ীরা লিগের শুরুটা দারুণ করলেও গেল তিন ম্যাচে কিংসকে চেনা রূপে দেখা যায়নি। রহমতগঞ্জের বিপক্ষে ঘাম ঝরানো জয় পেয়েছে। বিজেএমসির সঙ্গে ড্র। গতকাল আবার সমান তালে লড়ে জিতল।

বসুন্ধরা কিংসের টার্গেট শিরোপা। সবার ওপরে আছে। তবে অবস্থান ধরে রাখতে হলে খেলোয়াড়দের সেভাবে জ্বলে উঠতে হবে। কারণ দুই রাউন্ডের লিগে শেষ পর্যন্ত কি যে হয় বলা মুশকিল।

নতুন দল হিসেবে মৌসুমের প্রথম ট্রফি ফেডারেশন কাপে রানার্স আপ। এরপর স্বাধীনতা কাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঘরোয়া ফুটবলে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বসুন্ধরা কিংস।

চোখ এখন লিগে, শেখ জামালকে উদ্বোধনী ম্যাচে হার উপহার দিয়ে যাত্রা তাদের। এরপর ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেয়। সেই থেকে ফুটবলপ্রেমীরা কিংসকেই সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ধরে নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত শীর্ষে থাকলেও সামনে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে কিংসকে।

এদিকে গতকাল মুক্তিযোদ্ধা ২-০ গোলে হারিয়েছে টিম বিজেএমসিকে। বিজয়ী দলের মেহেদি ও সুজন গোল করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর