শনিবার, ৯ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত জামালরা

রাশেদুর রহমান

চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত জামালরা

রাজধানী নমপেনে কম্বোডিয়ার বিপক্ষে আজ প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। গতকাল অনুশীলনে খোশমেজাজে ফুটবলাররা -সংগৃহীত

ক্রিকেটে প্রায়ই হাসিমুখে বিজয়োল্লাস করার সুযোগ পান ক্রীড়ামোদীরা। কিন্তু ফুটবলে দিনের পর দিন মাসের পর মাস কেটে যায়, জয়ের উৎসবে মেতে ওঠার সুযোগ পান না ভক্তরা। আজ আবারও ফুটবল নিয়ে লড়াইয়ে নামছে বাংলাদেশের ছেলেরা। দিনশেষে কী জুটবে! জয়ের দেখা পাবে কি লাল-সবুজের জার্সিধারীরা! মার্চ মাস এলেই বাংলাদেশের মানুষের মনে জেগে ওঠে বিদ্রোহের আগুন। চিরায়ত অন্যায়ের ধারাটাকে বদলে দিতে চায় তারা। মার্চের এই দিনেই তো শুরু হয়েছিল রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। ফুটবলে চলমান ধারাটাকে কী এবার বদলে দিতে পারবেন লাল-সবুজের জার্সিধারীরা!

কম্বোডিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের অতীত খুবই ভালো। তিনবারের সাক্ষাতে দুইবারই জিতেছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। ২০০৬ সালে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে ২-১ গোলে এবং ২০০৯ সালে এক প্রীতি ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া নেহরু কাপে ২০০৭ সালে ১-১ গোলে ড্র করেছে দুই দল। কিন্তু সময় বদলেছে। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ২০ ধাপ এগিয়ে আছে কম্বোডিয়া। বাংলাদেশ ১৯২ এবং কম্বোডিয়া ১৭২ নম্বরে অবস্থান করছে। অবশ্য এই ব্যবধান যে খুব একটা বেশি কিছু নয়, তার প্রমাণ আছে অনেক। কত বড় বড় দলকে হারিয়ে এশিয়ান কাপ জিতে নিল কাতার। যে দলটা এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের কাছে পরাজয় স্বীকার করেছিল! বাংলাদেশের পুনরুত্থানের গল্পটা এবার শুরু হয় কিনা দেখা যাক! অ্যান্ড্রো উর্ডের বিদায়ের পর গত বছরের মে মাস থেকে দায়িত্ব পালন করছেন কোচ জেমি ডে। ইংলিশ এই কোচের অধীনে দল এরই মধ্যে কিছুটা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেছে। বাংলাদেশ গত আগস্টের পর প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামছে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে  আগস্টেও সেই ম্যাচে নেপালের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। নিজেদের শেষ ম্যাচে হেরেছে কম্বোডিয়াও। গত নভেম্বরে তারা ভিয়েতনামের কাছে ৩-০ গোলে হেরেছে তারা। অবশ্য ঠিক এর আগের ম্যাচেই লাওসকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে তারা। বাংলাদেশেরও জয়ের ঘটনা রয়েছে এর মধ্যে। গত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে সিলেটের মাটিতে বাংলাদেশ হারিয়েছে লাওসকে (১-০)। এসব পরিসংখ্যান মাথায় রেখেই আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ। গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে লাল-সবুজদের অধিনায়ক জামাল ভুইয়া বলেছেন, ‘আমরা জানি কম্বোডিয়া বেশ শক্তিশালী দল। তবে আমরাও চ্যালেঞ্জটা নিতে প্রস্তুত।’ জয়ের জন্যই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। জাতীয় দলের ফিজিওথেরাপিস্ট সাইমন জেমস দলটাকে দারুণভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। এমনটা জানিয়েছেন জাতীয় দলের ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু। আর কোচ জেমি ডে বলেছেন, ‘এখানে এসে অনুশীলন করেছি আমরা। এতে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কিছুটা সুযোগ পাওয়া গেছে। আশা করি, ম্যাচটা আমরা ভালোভাবেই  খেলতে পারব।’ কম্বোডিয়ার মাটিতে নেমেই অনুশীলন করেছেন লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। গত দুই দিনের অনুশীলনে নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছেন তারা। তাছাড়া লিগ খেলার মাঝপথেই আন্তর্জাতিক লড়াইয়ে নামায় কিছুটা সুবিধা পেতে পারেন জামাল ভুইয়ারা।

অনেক ঘষে-মেজে একটা দল গঠনের চেষ্টা করছেন কোচ জেমি ডে। গত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে মোটামুটি একটা পরীক্ষা হয়েছে দলটার। এবার কম্বোডিয়া এবং এর পরবর্তী এএফসি বাছাইপর্বেই চূড়ান্ত পরীক্ষাটা হবে। দেখা যাক, এবার কতটা কী করতে পারে জেমি ডে’র শিষ্যরা!

কম্বোডিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ খেলার পর বাংলাদেশ দল চলতি মাসেই কাতারে দশ দিনের অনুশীলন ক্যাম্প করবে। এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বের জন্যও প্রস্তুতি নিবে দলটা। মার্চেই বাহরাইনে খেলবে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। বি গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক বাহরাইন, ফিলিস্তিন ও শ্রীলঙ্কা। কঠিন সেই লড়াইয়ের আগে কম্বোডিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

সর্বশেষ খবর