বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

আড়াই দিনেই ইনিংস হার

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আড়াই দিনেই ইনিংস হার

মাহমুদুল্লাহর হাফ সেঞ্চুরির পরও লজ্জার হার - এএফপি

ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম দুই দিনে মাঠে গড়ায়নি কোনো বল। বৃষ্টির কারণে দুই দিন নষ্ট হওয়ায় পাঁচ দিনের টেস্ট হয়ে যায় তিনদিনের। এই তিনদিনেও ম্যাচ ড্র করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টাইগাররা আড়াই দিনেই লজ্জাজনকভাবে হেরে গেছে ইনিংস ব্যবধানে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২১১ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৯ রানে অলআউট। যে বাইশগজে টাইগাররা আড়াইদিনের মধ্যে ২০ উইকেট হারিয়েছে সেখানেই নিউজিল্যান্ড রান-বন্যা বইয়ে দিয়ে ৬ উইকেটে ৪৩২ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছিল।

যেখানে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ধুঁকেছেন সেখানেই রানের ফোয়ারা ফুটিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। কিউইদের দুই ইনিংস ব্যাট করার প্রয়োজন হয়নি, কিন্তু যতক্ষণ তারা ব্যাটিং করেছেন নাভিশ্বাস বের করে ছেড়েছেন টাইগার বোলারদের। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি বোলাররাও ব্যর্থ। তবে লজ্জার এই হারের জন্য ব্যাটসম্যানদেরই দায়ী করেছেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ‘নতুন বলে  যেভাবে শুরু করেছিলাম, তামিম ভালো ব্যাটিং করছিল। প্রথম ইনিংসে সাদমান-তামিমের ভালো শুরু হয়েছিল। প্রথম টেস্টেও তাই হয়েছিল। ইনিংসের মাঝে ওয়াগনার যখন তার ওই বাউন্সার-থিওরি কাজে লাগাতে শুরু করল কিছুক্ষণ ভালো খেলার পর আর পারিনি। আরেকটু সাহস নিয়ে খেলতে হবে। দ্বিধায় থেকে আমরা অনেক ব্যাটসম্যান এই ভুল করেছি। নিবেদিত থাকছি না বা দোমনায় ভুগছি, মারব কি মারব না। এই উইকেটে এটা করা ঠিক না। যদি শট খেলতে চান খেলতে হবে অথবা বাউন্সারের সামনে টিকে থাকতে হবে। পরের টেস্টে এমন উইকেট থাকতে পারে নাও পারে, ক্রাইস্টচার্চের উইকেট একটু গতিময় আছে। একই কন্ডিশন হয়তো পাব। আমাদের ব্যাটসম্যানদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। অনভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণ, তিন জন নতুন পেসার, ওদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। ব্যাটসম্যানদের দোষই বেশি। আড়াই দিনে আমরা দুবার অলআউট হয়েছি, যেটি খুবই হতাশার।’

বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ও ১২ রানে। এই টেস্টে বাংলাদেশের প্রাপ্তি প্রথম ইনিংসে তামিমের ৭৪ রানের ইনিংস এবং দ্বিতীয় ইনিংসে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের লড়াকু ৬৭ রান। চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে টাইগারদের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৮০ রান। গতকাল শেষ দিনে বাকি ৭ উইকেট হারিয়ে আর মাত্র ১২৯ রান করতে পেয়েছে সফরকারীরা। মাহমুদুল্লাহ ছাড়াও ৪৭ রানের ইনিংস খেলেছেন মোহাম্মদ মিথুন। সৌম্য সরকার আউট হয়েছেন ২৮ রানে। ৪৫ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন কিউই বোলার নেইল  ওয়াগনার। ৪ উইকেট নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট। দুই ইনিংস মিলে বাংলাদেশের ২০ উইকেটের মধ্যে ৯টি-ই নিয়েছেন ওয়াগনার। এই কিউই বোলারের বাউন্সারেই নাকাল হয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ম্যাচ শেষে মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘এখন আমরা ওয়াগনার-ফ্যাক্টর নিয়ে কথা বলছি। বাংলাদেশে খেলতে গেলে প্রতিপক্ষ আমাদের স্পিনারদের নিয়ে চিন্তা করে। হয়তো উইকেটে আমাদের স্পিনারদের জন্য বাড়তি সুবিধা থাকে। এখানে সুবিধা ছিল, ওদের বোলাররা সেটা কাজে লাগাতে পেরেছে, আমরা ভালোভাবে পারিনি। তবে বিশ্বাস করি যে আমাদের ব্যাটসম্যানদেরও স্কিল আছে ওদের কৌশল সামলানোর। যেটা বললাম, দ্বিধার মধ্যে অনেক সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। প্রথম ইনিংসের কথা যদি বলি, আমি দ্বিধায় ছিলাম, মারব কি মারব না। এরপর আউট হয়ে গেছি। এগুলো নিয়ে পরিষ্কার থাকলে আরও ভালো ফল পাওয়া সম্ভব হবে।’

সিরিজের শেষ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে ক্রাইস্টচার্চে, ১৬ মার্চ থেকে। সাকিব আল হাসান তো নিউজিল্যান্ডে যাচ্ছেনই না তাই খেলার প্রশ্নই ওঠে না, মুশফিকুর রহিমও খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে। টানা দুই ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর দলের অন্য ক্রিকেটাররাও হয়তো মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন! এমন পরিস্থিতিতে পরের টেস্টে টাইগাররা কেমন করবে সেটা অনুমেয়ই! হয়তো ম্যাচের চেয়েও টাইগারদের কাছে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাকি দিনগুলো পার করাই কঠিন হয়ে গেছে!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর