শিরোনাম
রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
বিশ্বকাপ ১৯৮৭

উপমহাদেশে অস্ট্রেলিয়ার বাজিমাত

মেজবাহ্-উল-হক

উপমহাদেশে অস্ট্রেলিয়ার বাজিমাত

চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া দল
১. অ্যালান বোর্ডার, ২. ডেভিড বুন, ৩. গ্রেগ ডায়ার (উইকেটরক্ষক), ৪ ডিন জোনস, ৫. জিওফ মার্শ, ৬. টিম মে ৭. ক্রেইগ ম্যাকডারমট ৮. টম মুডি, ৯. সাইমন ও’ডোনেল, ১০. ব্রুস রেইড, ১১. পিটার টেলর, ১২. মাইক ভেলেটা ১৩. স্টিভ ওয়াহ, ১৪. অ্যান্ড্রু জিসার্স।

পরাক্রমশালী দল নিয়ে আগের তিন আসরেই ইংল্যান্ডে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু প্রতিবারই ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। তবে হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো দল অস্ট্রেলিয়া নয়। ভারতবর্ষে অ্যালান বোর্ডারের নেতৃত্বে আবার শক্তিশালী দল নিয়ে আসে অস্ট্রেলিয়া। উপমহাদেশে এসেই বাজিমাত করে দেয় অ্যালান বোর্ডারের দল। ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে অস্ট্রেলিয়া। কলকাতার ইডেন গার্ডেনে অনুষ্ঠিত ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭ রানের নাটকীয় জয় পায় অসিরা।

►             ইংল্যান্ডের বাইরে প্রথম

বিশ্বকাপের প্রথম তিন আসরই অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইংল্যান্ডে। ৭৫, ৭৯ ও ৮৩-র প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ হয় উপমহাদেশে। প্রথমবারের মতো যুগ্ম আয়োজন ভারত ও পাকিস্তান। এক সেমিফাইনাল লাহোরে, আরেকটি মুম্বাইয়ে (তৎকালীন বোম্বে) অনুষ্ঠিত হয়। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফাইনালও হয় ভারতের মাটিতে।

►             সেমিতেই শেষ দুই স্বাগতিক

ভারত ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন, আর পাকিস্তান ছিল সেমিফাইনালিস্ট। সবার ধারণা ছিল, উপমহাদেশের বিশ্বকাপে এই দুই দলই ফাইনাল খেলবে। দুই দলই পরাক্রম দেখিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন সেমিতে যায়। কিন্তু লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১৮ রানে হেরে পাকিস্তানের বিদায়ঘণ্টা বেজে যায়। এদিকে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে ইংল্যান্ডের কাছে ৩৫ রানে হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয় আরেক স্বাগতিক দল ভারতের।

►             গ্রুপ পর্বেই বিদায় উইন্ডিজের

ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখনো ছিল ভয়ঙ্কর এক দল। প্রথম তিন আসরে তারা ফাইনাল খেলেছে। দুইবার তো শিরোপাই জিতেছে। ভারতেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দলই নিয়েই এসেছিল। কিন্তু ইংল্যান্ডের কাছে দুইবার এবং পাকিস্তানের কাছে একবার হেরে তাদের গ্রুপ থেকেই বিদায়ঘণ্টা বেজে যায়।

►             ৫০ ওভারের প্রথম আসর

আগের তিন আসরে বিশ্বকাপ ছিল ৬০ ওভারের। কিন্তু উপমহাদেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে বদলে যায় নিয়ম। ১০ ওভার কমিয়ে দেওয়া হয়। চালু হয় ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। আগে একজন বোলার সর্বোচ্চ ১২ ওভার বোলিং করার সুযোগ পেতেন। কিন্তু এই আসরে ১০ ওভারের বেশি করতে পারবেন না কোনো বোলার।

►             ভিভ রিচার্ডসের ১৮১

আগের আসরগুলোতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক ছিলেন ক্লাইভ লয়েড। উপমহাদেশে ক্যারিবীয়রা খেলতে আসেন ভিভ রিচার্ডসের নেতৃত্বে। প্রথম ম্যাচে ইংলিশদের বিরুদ্ধে হেরে যাওয়ার পর যেন ক্ষিপ্ত হয়ে যায় উইন্ডিজ। দ্বিতীয় ম্যাচে করাচিতে শ্রীলঙ্কাকে ১৯১ রানে হারায় ক্যারিবীয়রা। আর ওই ম্যাচে ১৮১ রানের ক্যারিশমেটিক এক ইনিংস খেলেছেন দলপতি ভিভ রিচার্ডস। মাত্র ১২৫ বলে ৭টি ছক্কার সঙ্গে ১৬টি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি।

 

রেকর্ড

প্রথম হ্যাটট্রিক

বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো হ্যাটট্রিক করেন ভারতের বোলার চেতন শর্মা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ৪২তম ওভারে টানা তিন বলে তিনি নিউজিল্যান্ডের তিন ব্যাটসম্যান কেন রাদারফোর্ড, ইয়ান স্মিথ ও ইয়েন চ্যাটফিল্ডকে আউট করেন।

সর্বাধিক ছক্কা

ভারতের নভোজিত সিং সিধু টুর্নামেন্টে মোট ৯টি ছক্কা হাঁকান এবং টানা চারটি হাফ সেঞ্চুরি করেন। দুটিই ছিল তখন রেকর্ড।

 

ফরম্যাট

রাউন্ড রবিন লিগ ও নকআউট

আটটি দল দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়। গ্রুপ পর্বে প্রতিটি দল অন্য তিন দলের সঙ্গে দুইবার করে খেলেছে। তারপর প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুটি করে দল সেমিফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। সেমিফাইনালে বিজয়ী দুই দল ফাইনাল খেলে। ৫০ ওভারের ওয়ানডে। খেলোয়াড়দের পোশাক ছিল সাদা এবং বল লাল।

 

এক নজরে

             চ্যাম্পিয়ন : অস্ট্রেলিয়া

             রানার্সআপ : ইংল্যান্ড

             অংশগ্রহণকারী দল : ৮

            মোট ম্যাচ : ২৭

             দলীয় সর্বোচ্চ : ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩৬০/৪, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে, করাচিতে।

             সর্বোচ্চ রান : ৪৭১           গ্রাহাম গুচ, ইংল্যান্ড

             সর্বোচ্চ স্কোর : ১৮১            ভিভ রিচার্ডস, ওয়েস্ট ইন্ডিজ

             সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ : ১৩৬ ক্রিস শ্রীকান্ত ও সুনীল গাভাস্কার, ভারত

             সর্বাধিক উইকেট : ১৮

                ক্রেইগ ম্যাকডারমট, অস্ট্রেলিয়া

             সেরা বোলিং : ৫/৪৪               ক্রেইগ ম্যাকডারমট, অস্ট্রেলিয়া

             সর্বাধিক ডিসমিশাল : ১১টি কিরন মোরে, ভারত

             সর্বাধিক ক্যাচ : ৫টি              কপিল দেব, ভারত

সর্বশেষ খবর