শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাংলাদেশের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল

রাশেদুর রহমান

বাংলাদেশের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল

বাংলাদেশ বিশ্বকাপে খেলা শুরু করেছিল ১৯৯৯ সালে। সেবার পাকিস্তান ও স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল টাইগাররা। ২০০৭ সালেও ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু এসব জয়ের পরও বিশ্বকাপে অর্জনের খাতায় তেমন কিছুই ছিল না বলতে গেলে। ২০০৭ সালে সুপার এইটে ঠাঁই পেলেও সেখানে সাত ম্যাচের ৬টাতে হেরে বিদায়। ২০১৫ বিশ্বকাপটা বাংলাদেশের সামনে এক দারুণ সুযোগ নিয়ে আসে। দারুণ কিছু করে দেখানোর তাড়না ছিল টাইগারদের মধ্যে। এর কারণও ছিল। হঠাৎ বৃষ্টির মতো জয়ের জন্য আর অপেক্ষায় থাকতে হতো না সমর্থকদের। অঝোর ধারায় না হলেও প্রায়ই জয় ধরা দিচ্ছিল। মাশরাফির নেতৃত্বে দলটা বিশ্বকাপে যায় উচ্চাশা নিয়ে। আর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার গৌরবও অর্জন করে।

পুল এ’তে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দুই স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ছাড়াও ২০১১’র রানার্সআপ শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ড। কঠিন গ্রুপ। কিন্তু লক্ষ্য অটুট থাকলে বুঝি ভাগ্যও সহায়তা করে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১০৫ রানে প্রথম ম্যাচ জয়ের পর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচটা খেলতে হয়নি বাংলাদেশকে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা পরিত্যক্ত হওয়ায় একটা পয়েন্ট পেয়ে যান মাশরাফিরা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঝখানে হারলেও পরের দুটি ম্যাচ টানা জিতে টাইগাররা। স্কটল্যান্ডকে হারায় ৬ উইকেটে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জেতে ১৫ রানে। বাংলাদেশের ২৭৫ রানের সংগ্রহ টপকাতে পারেনি ক্রিকেটের সবচেয়ে পুরনো সদস্য ইংল্যান্ড। মাহমুদুল্লাহর সেঞ্চুরি (১০৩) ছাড়াও এ ম্যাচে বড় ভূমিকা ছিল রুবেল হোসেনের। তিনি ৪টা উইকেট শিকার করেছিলেন। অথচ বিশ্বকাপের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে তাকে জেলে যেতে হয়েছিল। জেল থেকে বিশ্বকাপে গিয়ে বাংলাদেশের নায়ক হয়ে ওঠেছিলেন রুবেল হোসেন। তিনটা ম্যাচ জয়ের পর আর পেছন ফিরে তাকানোর প্রয়োজন ছিল না টাইগারদের।

কোয়ার্টার ফাইনালে অবশ্য কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হয় টাইগাররা। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারতের কাছে ১০৯ রানে হেরে যায় মাশরাফিবাহিনী। তবে বিশ্বকাপে নিজেদের সেরা অর্জন নিয়েই বাড়ি ছিলেন টাইগাররা। এখন থেকে বাংলাদেশের লক্ষ্য আর কোয়ার্টার ফাইনাল হবে না। সেমিফাইনালের নিচে আর চিন্তা করার সুযোগ কোথায়!

 

 

বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড স্কোর

বাংলাদেশ

২৭৫/৭ (৫০ ওভার)

মাহমুদুল্লাহ ১০৩, মুশফিক ৮৯, সৌম্য ৪০, অ্যান্ডারসন ২/৪৫, জর্ডান ২/৫৯।

ইংল্যান্ড

২৬০/১০ (৪৮.৩ ওভার)

বাটলার ৬৫, বেল ৬৩, ওকস ৪২*, রুবেল ৪/৫৩, মাশরাফি ২/৪৮, তাসকিন ২/৫৯।

ফল : বাংলাদেশ ১৫ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা : মাহমুদুল্লাহ

 

অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম শিরোপা

হঠাৎ করেই তারকাশূন্য হয়ে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। রিকি পন্টিংদের শূন্যতা পূরণ হয়নি। ২০১১ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার এটা একটা বড় কারণ ছিল। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ায় অস্ট্রেলিয়া। মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বে নিজেদের আরও একবার বিশ্বসেরা হিসেবে গড়ে তোলে তারা। নিজ দেশে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে পঞ্চম বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলে অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ১৯৮৭ সালে অ্যালান বোর্ডার, ১৯৯৯ সালে স্টিভ ওয়াহ এবং ২০০৩ ও ২০০৭ সালে রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

 

নিউজিল্যান্ডের ফাইনাল

নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট ইতিহাসের পুরনো দলগুলোর একটা। বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকে দলটার পারফরম্যান্স অসাধারণ। ২০১১ পর্যন্ত ছয়বার সেমিফাইনাল খেলে দলটা। কিন্তু ফাইনাল খেলার স্বাদ কখনো পায়নি কিউইরা। অবশেষে নিজ দেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সব বাধা অতিক্রম করে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করে নিউজিল্যান্ড। মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়ার। তবে অসিদের দুরন্তপনার কাছে হার মানেন ম্যাককালামরা। রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদেরকে।

 

মাহমুদুল্লাহর দুই সেঞ্চুরি

একই বিশ্বকাপে দু দুটো সেঞ্চুরি! বাংলাদেশের কেউ কখনো করেনি। বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি পাওয়াটাই তো সোনার হরিণ ছিল টাইগারদের জন্য। সেখানে একই বিশ্বকাপে দুটি! মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দারুণ এই রেকর্ডের মালিক। ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর ম্যাচে ১০৩ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ১২৮ রানের আরও একটি দারুণ ইনিংস। অবশ্য এবার আর দল জিততে পারেনি। দল না জিতলেও মাহমুদুল্লার ইনিংসটা প্রশংসিত হয়।

 

মঞ্চে নেই আইসিসি সভাপতি

আইসিসির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ‘বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় শিরোপা তুলে দেবে সভাপতি’ থাকলেও ২০১৫ সালে ক্রিকেট বিশ্ব এক লজ্জাকর দৃশ্য দেখেছিল। তৎকালীন সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামালকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান শ্রীনিবাসন চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন। এমনকি মঞ্চেই ছিলেন না আইসিসি সভাপতি। ১৯৯৯ সালে জগমোহন ডালমিয়া চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে ট্রফি তুলে দিয়েছিলেন আইসিসি সভাপতি হিসেবে। এরপর থেকেই এটাই নিয়মে পরিণত হয়েছিল।

সর্বশেষ খবর