শনিবার, ২৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

‘এখনো রোমাঞ্চিত হই’

‘এখনো রোমাঞ্চিত হই’

১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি হাতে অধিনায়ক আকরাম খান

বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখছে। বিশ্বমঞ্চে টাইগাররা ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে। লাল-সবুজের ক্রিকেট ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছে বিশ্ব মিডিয়া। বাংলাদেশের বিশ্বকাপে খেলার পেছনে বড় অবদান আকরাম খানের ৬৭ রানের অবিস্মরণীয় এক ইনিংস। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফিতে আকরামের খানের সেই জাদুকরী ইনিংসেই নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। তখন আকরাম ছিলেন অধিনায়ক, এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান। দলের সঙ্গে ইংল্যান্ডেই আছেন তিনি। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাফল্যের এই রূপকার ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছেন ক্রিকেটের অতীত, ভবিষ্যৎ ও বর্তমানকে!

 

১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফিতে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে আপনার ৬৭ রানের সেই ঐতিহাসিক ইনিংসে জিতেই বাংলাদেশ প্রথমবারের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়। ওই ইনিংসটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

ওই ম্যাচটা জয় আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। হারলে আমরা সেবার বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পারতাম না। আর সেই ম্যাচে বড় ইনিংস খেলতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। এটা সবসময় আমার মনে পড়ে। এখনো রোমাঞ্চিত হই। তবে এটা ঠিক, একেকজনের সময় আসে একেক সময়। ওই ম্যাচটা আমার জীবনেরই একটা সেরা ঘটনা। তবে ক্রিকেট দলীয় খেলা। এটা ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নয়। দলীয় সমন্বয় ছিল বলেই আমরা জিতেছিলাম। আমাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। আমরা সারা দুনিয়াকে বুঝিয়ে দিতে পেরেছিলাম, আমরা ক্রিকেট খেলছি। সবাই অনেক কষ্ট করেছেন বলেই আজ আমরা এই অবস্থানে। তবে আমাদের ক্রিকেট এগিয়ে যাওয়ার পেছনে সবারই অনেক অবদান। সমর্থকরা আমাদের সমর্থন না করলে তো এখানে আসা সম্ভব হতো না। আপনারা (সাংবাদিকরা) যদি ঠিকমতো কাভার না করতেন আমরা ফোকাস পেতাম না। সবার অনেক অবদান। 

এখন বাংলাদেশকে বিশ্বকাপে খেলতে দেখে সেদিনের সেই ইনিংসটি আলাদা করে মনে পড়ে কিনা?

ওই অনুভূতি আসলে বলে বোঝানো যাবে না। সত্যি সেটা অন্যরকম এক মুহূর্ত। এখন খুবই ভালো লাগে আমার। এটা নিয়ে সবসময় গর্ব বোধ করি। খুবই আনন্দ হয়। খুব মনে পড়ে। তখন আমরা একটা জয়ের জন্য মুখিয়ে থাকতাম, আর এখন একের পর এক জয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখছি। এটা তো অনেক বড় বিষয়। অনেক ভালো লাগার বিষয়।

আকরাম খানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রথম বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে। বিষয়টা কতটা গর্বের?

দেখেন, এটা আলাদা অনুভূতি। খুবই ভালো লাগার বিষয়।

বাংলাদেশ এখন সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখছে, বিষয়টি ভাবতে কেমন লাগছে?

এখানে অনেক ভালো ভালো দল আছে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ অনেক ভালো করছে। সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখছে। এটা তো অনেক বড় বিষয়। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা সেমিফাইনালে পৌঁছাতে পারব কিনা সেটা সময়ই বলে দেবে। এটা আসলে ভাগ্যের বিষয়। ভাগ্যে থাকলে অবশ্যই সেমিফাইনাল খেলব।

এক সময় ক্রিকেটার হিসেবে বাংলাদেশের জন্য অবদান রেখেছেন, আর এখন সংগঠক হিসেবে রাখছেন! দুই প্রেক্ষাপট থেকে নিজেকে মূল্যায়ন করবেন কীভাবে?

দুটি বিষয়কে আমি কখনই আলাদা করে ভাবী না। কেননা তখনো আমি দেশের জন্য কাজ করেছি, এখনো করি। কাজ আলাদা হলেও আমি দুই সময়ই দলের অংশ ছিলাম। সময় পার্থক্যের কারণে দায়িত্ব বদলে গেছে এই আরকি। যখন ক্রিকেটার ছিলাম, তখন এক রকম দায়িত্ব ছিল। তারপর যখন নির্বাচক হলাম তখন আলাদা দায়িত্ব। বোর্ড পরিচালক হওয়ার পর আমার দায়িত্ব বদলে গেছে। এখন তো ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান হওয়ায় দায়িত্বের পরিধি আরও বেড়ে গেছে। সবাইকে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি। নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারলে অনেক বেশি ভালো লাগে। বাংলাদেশ দলে যে এখন সিনিয়র ক্রিকেটাররা খেলছেন তাদের জায়গায় তো আমাদের আরও ভালো ক্রিকেটার নিয়ে আসতে হবে।  কেননা যারা আছেন তাদের থেকে ভালো ক্রিকেটার বের করে নিয়ে আসাই তো কাজ। এজন্য এখন অঞ্চলভিত্তিক ক্রিকেটকে আরও জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।

সামনে ভারত ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। প্রত্যাশা কী?

আমি মনে করি দুই ম্যাচ আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত সবকিছু ভালোই হয়েছে। এখন শেষটা ভালো হলেই সব ভালো হয়ে যাবে।

অনেকে তো সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে তুলনা করছেন সাকিবকে, আপনি কি মনে করেন?

সর্বকালের সেরা কিনা সেটা এখনই বলব না। তবে সাকিব যে একজন গ্রেট ক্রিকেটার এটা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। এ নিয়ে কারও সন্দেহ থাকাও ঠিক নয়। সে অনেক উঁচু মানের ক্রিকেটার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর