সোমবার, ১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

একজন পাওয়ার হিটারের অভাব!

আপাতত মোসাদ্দেকের উপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে। এই লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান পারেনও। বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধেই ২৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে দেখিয়েছিলেন ঝলক!

বিশ্বকাপে এবার বেশ আলোচনা হচ্ছে বাংলাদেশকে নিয়ে। সাকিব আল হাসান দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করছেন বলেই নয়! টিম বাংলাদেশকে নিয়েও কথা হচ্ছে। অনেকে তো উদীয়মান ক্রিকেট দলগুলোর ‘রোল মডেল’ হিসেবেও বিবেচনা করছে টাইগারদের!  যেখানে সুপার পাওয়ার এক দল নিয়েও  সেমিফাইনালের দৌড়ে ঘাম ঝরাতে হচ্ছে ইংল্যান্ডের মতো দলকে,  সেখানে অনেকটাই নির্ভার বাংলাদেশ।

সামনে দুটি ম্যাচ। একটি ভারতের বিরুদ্ধে, আরেকটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তবে এখানে আরও অনেক হিসাব-নিকাশ আছে। ইংল্যান্ড শনিবার ভারতকে টার্গেট দিয়েছে ৩৩৮ রানের। এই বার্মিংহামে যদি ভারত জিতে যায় নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের শেষ চার। অন্যদিকে সেমিতে খেলার সম্ভাবনা অনেকটা ম্লান হয়ে যাবে ইংল্যান্ডের। শেষ চার নিশ্চিত হয়ে গেলে ইনজুরির কথা চিন্তা করে হয়তো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত তাদের সেরা ব্যাটসম্যান ও বোলারদের বিশ্রামও দিতে পারে। আর এটাই হতে পারে টাইগারদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ।

বাংলাদেশের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বিশ্বকাপের পয়েন্ট  টেবিল যেন জমে উঠেছে। তিন সেমিফাইনালিস্ট প্রায় নিশ্চিত হয়েই গেছে। চতুর্থ স্থান নিয়ে চলছে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা! ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান একাধিকবার ফাইনাল খেলেছে। তাদেরকে নিয়ে ততটা আগ্রহ  নেই। কিন্তু বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্ব মিডিয়া বেশ উচ্ছ্বসিত।

শনিবার বার্মিংহামের এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে  প্রেস কনফারেন্স শেষে যেমন এক ভারতীয় সাংবাদিক জানতে চাইলেন, সাব্বির রহমানকে একাদশে নিয়মিত  দেখা যাচ্ছে না কেন?  উত্তর তো জানাই, টিম কম্বিনেশন! মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ইনজুরির কারণে  বোলিং করতে পারছেন না। সে কারণেই এমন একজন নিতে হচ্ছে, যিনি ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি  বোলিং ভালো করেন। এ কারণেই মোসাদ্দেক হোসেন অটোমেটিক চয়েস! ঠিক এজন্যই একাদশে সুযোগ পাচ্ছেন না দলের ‘একমাত্র’ পাওয়ার হিটার সাব্বির রহমান!

অবশ্য মোসাদ্দেকের ইনজুরি কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু প্রথম বলেই আউট হয়ে গেছেন। হঠাৎ পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই আবারও রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই সময় পার করতে হচ্ছে সাব্বিরকে!

আপাতত মোসাদ্দেকের উপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে। এই লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান পারেনও। বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধেই ২৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে দেখিয়েছিলেন ঝলক! কিন্তু বিশ্বকাপে সেভাবে মারকাটারি ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে চেষ্টা  করছেন মোসাদ্দেক, ‘এটা শুধু আমার জন্য না, সবার জন্য চ্যালেঞ্জিং।  সবাই চেষ্টা করে এখানে এসে সবাই  যেন দ্রুত রানটা তুলতে পারে।  প্রিমিয়ার লিগ থেকেই এ চেষ্টা করে আসছি। এখনো সেই চেষ্টায় আছি।  স্ট্রাইক রেট নিয়েই চিন্তা করছি। চিন্তায় থাকে যখনই ব্যাটিংয়ে যাব তখন ১০০র বেশি স্ট্রাইক রেট নিয়ে ব্যাটিং করব।’

এবারের বিশ্বকাপে প্রতিটি বড় দলেই এমন দুই একজন ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছে যারা কম বলে একটা ঝড়ো ইনিংস খেলবেন! স্ট্রাইকরেট ১৫০  থেকে ২০০তে থাকবে! বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এমন সক্ষমতা কেবল সাব্বিরের মধ্যে আছে বলে অনেকে মনে করেন।

তাই বড় দলগুলোর বিরুদ্ধে সাব্বিরের অভাবটাও বেশি অনুভূত হয়! ঠিক সাব্বিরের অভাব নয়, একজন পাওয়ার হিটারের অভাব! অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ভারতের হার্দিক পান্ডিয়া, ইংল্যান্ডের বেন স্টোকসের মতো বাংলাদেশ দলে চাই হার্ডহিটার! যার কাজই হবে বিদ্যুৎ গতিতে রান তুলে প্রতিপক্ষকে বিপদে ফেলা!

সর্বশেষ খবর