মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
আজ ভারত-নিউজিল্যান্ড মুখোমুখি

ব্যাটিংয়ে এগিয়ে কোহলিরা বোলিংয়ে সমানে সমান

প্রথম সেমিফাইনাল

আসিফ ইকবাল

ব্যাটিংয়ে এগিয়ে কোহলিরা বোলিংয়ে সমানে সমান

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি। বিস্ময়কর রেকর্ড। তার ওপর বিশ্বকাপে গড়লেন নতুন বিশ্বরেকর্ড। টানা তিনটিসহ পাঁচ সেঞ্চুরি করে পেছনে ফেলেছেন ক্রিকেট কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা, রিকি পন্টিংকে। স্পর্শ করেছেন ভারতীয় ক্রিকেটে জীবন্ত কিংবদন্তি শচিন টেন্ডুলকারকে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে আজ ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন অংকের একটি জাদুকরী ইনিংস খেললেই নিজেকে কিংবদন্তির কাতারে চিরস্থায়ী করবেন রোহিত। মুম্বাইয়ের ৩২ বছর বয়সী রোহিতকে ঘিরে বিরাট কোহলিসহ ১২৫ কোটির ভারত স্বপ্ন দেখছে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের। দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা যেমন স্বপ্ন দেখছে তৃতীয় বিশ্বজয়ের। তেমনি কেন উইলিয়ামসনের সুচারু নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ডও স্বপ্ন দেখছে প্রথমবারের মতো বিশ্বজয়ের। ভারত ও নিউজিল্যান্ডের শক্তিমত্তার বিচার বিশ্লেষণ করে পরিষ্কার ফেবারিট নয় কেউ। তবে ব্যাটিং পারফরম্যান্সে এগিয়ে কোহলি, রোহিতের ভারত। বিপরীতে বোলিংয়ে সমানে সমান দুই দল। জশপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ সামি, ভুবেন্বেশরদের গতি ও বাউন্সের জবাব দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত ট্রেন্ট বুল্ট ও লকি ফারগুসন।

১৪ জুলাই লর্ডসের আকাশে বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে প্রস্তুত ভারত, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। প্রথম দল হিসেবে ফাইনাল নিশ্চিত করতে আজ মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। ১৯৮৩ ও ২০১১ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত এবার নিয়ে সপ্তমবার সেমিফাইনাল খেলছে। ব্ল্যাক ক্যাপস একবার ফাইনাল খেললেও সেমিতে খেলছে অষ্টমবার। দুদলের ১০৬ মুখোমুখিতে ভারতের জয় ৫৫ এবং নিউজিল্যান্ডের ৪৫। তবে বিশ্বকাপে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড। ৮ লড়াইয়ে উইলিয়ামসনদের জয় ৪ এবং কোহলিদের ৩। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে সৌরভ গাঙ্গুলির ভারত জিতেছিল ৭ উইকেট। ১৯৮৭ সালে ঘরের মাঠে দুবার জিতেছিল ভারত ১৬ রানে ও ৯ উইকেটে। নাগপুরের ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন সুনীল গাভাস্কার এবং হ্যাটট্রিক করেছিলেন চেতন শর্মা। নিউজিল্যান্ড ১৯৭৫ সালে ৪ উইকেটে, ১৯৭৯ সালে ৮ উইকেট, ১৯৯২ সালে ৪ উইকেটে ও ১৯৯৯ সালে ৫ উইকেট জয় পায়।

চলতি বিশ্বকাপে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা রান উৎসবে মেতেছেন। ভারত ৮ ম্যাচে তিনশোর্ধ্ব স্কোর গড়েছে চারবার। সর্বোচ্চ ৫ উইকেটে ৩৫২, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ ৮ উইকেটে ২৯১, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টুর্নামেন্টের লিগ পর্বে সেঞ্চুরি ২৯টি। ভারতের রোহিত (৫), লোকেশ রাহুল (১) ও শেখর ধাওয়ান(১) সেঞ্চুরি করেছেন ৭টি। নিউজিল্যান্ডের উইলিয়ামসন ২টি। আসরে রোহিতের রান ৬৪৭, কোহলি ৪৪২, রাহুল ৩৬০, ধোনী ২২৩ রান। ব্ল্যাক ক্যাপসদের উইলিয়ামসন ৪৮১, রস টেলর ২৬১, মার্টিন গাপটিল ১৬৬, নিশান ২০১ রান করেন। পরিসংখ্যানের কাটাছেঁড়ায় ব্যাটিং গভীরতায় এগিয়ে ভারত। গতি, বাউন্স ও সুইংয়ে ব্যাটসম্যানদের নাকাল করছেন দুই দলের পেসাররা। ভারতকে সেমিতে তুলতে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন জশপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ সামী ও হার্দিক পান্ডিয়া। বুমরাহর উইকেট ১৭, আফগানিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকসহ ৪ ম্যাচে সামির উইকেট ১৪, পান্ডিয়ার উইকেট ১১। বাঁ হাতি কিউই সুইং বোলার ট্রেন্ট বুল্টের উইকেট অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হ্যাটট্রিকসহ ১৫। কুইক বোলার ফারগুসনের উইকেট ১৭। মিডিয়াম পেসার নিশানের উইকেট ১১টি। পেসারদের পারফরম্যান্স সমানে সমান।

তবে স্পিনে দুই দলের সামর্থ্যে কিঞ্চিত এগিয়ে ভারত। লেগ স্পিনার চাহালের উইকেট ১১। বিপরীতে কিউই স্পিনার সান্তানারের উইকেট ৫টি।

দুই দলের জমজমাট লড়াইয়ের আড়ালে তারকাদের লড়াই উপভোগ করবেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কোহলি, রোহিত, উইলিয়ামসন, টেলরদের জমাটি লড়াইয়ে উপভোগ্য ক্রিকেট ম্যাচ হবে ফুটবল নগরী ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে।              

সর্বশেষ খবর