শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

’৬৬-র পর ইংলিশদের বিশ্বজয়ের স্বপ্ন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

’৬৬-র পর ইংলিশদের বিশ্বজয়ের স্বপ্ন

১৯৬৬ সালে ফিফা বিশ্বকাপ জয়ী ইংলিশ দল -ফাইলফটো

ম্যান সিটি, ম্যান ইউ, লিভারপুল কিংবা চেলসির মতো বড় কোনো ক্লাব নয় ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেড। তবে শতবর্ষীয় ক্লাবটি একটি ক্ষেত্রে পেছনে ফেলেছে হেভিওয়েট ক্লাবগুলোকে। ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিক স্টেডিয়ামটির স্বত্বাধিকারী এখন ওয়েস্ট হাম। যদিও ক্লাবটির আরও একটি নিজস্ব স্টেডিয়াম আছে; যা ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ভরপুর। পূর্ব লন্ডনের আপটন পার্ক লাগোয়া পুরনো স্টেডিয়ামটি বেশ পরিচিত একটি বিশেষ ভাস্কর্যের জন্য। স্টেডিয়ামের পূর্ব কোনায় ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপজয়ী পাঁচ ফুটবল তারকার ভাস্কর্যটি আপটন পার্কের আবেদন বাড়িয়েছে শতগুণ। ৫৩ বছর আগে যাদের জন্ম হয়নি, তারা স্মৃতি ধরে রাখতে ববি মুর, জিওফ হার্স্ট. ববি চার্লটন, গর্ডন ব্যাংকসদের নিয়ে গড়া ভাস্কর্যটির সঙ্গে ছবি তুলে নিজেদের ধন্য করেন। ইংল্যান্ডের বিশ্বজয়ের রেকর্ড ওই একটিই। সময়ে পথ চলায় বিশ্বসেরা হওয়ার সুযোগ আরও এসেছে ইংলিশদের। কিন্তু মেতে ওঠা হয়নি উৎসব, উচ্ছ্বাসে। মাখামাখি করা হয়নি আবীরের রঙে। প্রায় সাড়ে পাঁচ দশক পর ফের বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছেন ইংলিশরা। ফুটবলে নয়, ক্রিকেটে। ক্রিকেট প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নের সুখকর মুহূর্তগুলো তুলে ও ধরে রাখতে গোটা ইংল্যান্ড তাকিয়ে আছে জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, এউয়ান মরগান, জোফরা আর্চার, মার্ক ওডদের পারফরম্যান্সের দিকে।

১৯৭৯, ১৯৮৭ ও ১৯৯২ সালে ফাইনাল খেলেছে। কিন্তু হতাশায় নিমজ্জিত হওয়া ছাড়া কিছুই পায়নি ক্রিকেটের জনকেরা। অথচ দেশটির হাত ধরেই ক্রিকেট আজ বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। ইতিহাস, ঐতিহ্য ছাড়াও শক্তিমত্তায় দেশটি এক ক্রিকেট পরাশক্তি। আশ্চর্য হলেও সত্যি, ২০১১ ও ২০১৫ সালে গ্রুপ পর্ব ডিঙ্গাতে পারেনি ইংল্যান্ড। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দর্শক হয়ে উপভোগ করেছে ফাইনাল। এবার ২৭ বছর পর মরগানের নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছে। ১৪ জুলাই লর্ডসে বিশ্বজয় করতে হারাতে হবে তাসমান সাগরের ওপারের দেশ নিউজিল্যান্ডকে।

২০১৫ সালে বাংলাদেশের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েছিল ইংল্যান্ড। এরপর ট্রেভর বেইলিসের কোচিংয়ে গত চার বছরে ওয়ানডে ক্রিকেটটাকে পুরোপুরি বদলে ফেলেছে ইংল্যান্ড। তিনশ, সাড়ে তিনশ করছে অনায়াসে। প্রথম দল হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৫০০ রান করার টার্গেটও করেছে। অবশ্য গত চার বছরে একবার নয়, চারশ রানের ওপর চারবার স্কোর করেছে ইংলিশ ক্রিকেটাররা। ওয়ানডে ক্রিকেটকে আমূল বদলে দেওয়া মরগানের ইংল্যান্ড চলতি বিশ্বকাপে তিনশোর্ধ্ব স্কোর করেছে চারবার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩৯৬/৬, বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৮৬/৬, ভারত ৩৩৭/৭ ও পাকিস্তান ম্যাচে ৩৩৪/৯ স্কোর করে। আসরে সেঞ্চুরি ৩১টি। ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বেয়ারস্টো ও রুট ২টি করে এবং রয়, মরগান ও বাটলার ১টি করে সেঞ্চুরি করেন। রুটের রান ৫৪৯, বেয়ারস্টো ৪৯৬, রয় ৪২৬,  স্টোকস ৩৮১ ও মরগান ৩৬২ রান করেন। বোলিংয়ে আর্চার ১৯ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ড স্বপ্ন দেখাচ্ছেন প্রথম বিশ্বজয়ের। মার্ক ওড ১৭, ক্রিস ওয়ক্স ১৩ ও আদিল রশীদ ১১ উইকেট নিয়েছেন।

দলীয় ও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ইংল্যান্ড এখন ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পর ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট জয়ের স্বপ্ন দেখছে। যদিও ২০১০ সালে টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড।

 

সর্বশেষ খবর