শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইতিহাস গড়ার পথে কিংস

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ইতিহাস গড়ার পথে কিংস

শুধু বাংলাদেশের ফুটবল নয়। পাকিস্তান আমলে যা ঘটেনি তা ঘটানোর অপেক্ষায় দেশের আলোচিত ক্লাব বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা কিংস। আগামীকাল তারা সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে পেশাদার লিগে মুখোমুখি হবে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে। দিনটি শুধু বসুন্ধরার নয় বাংলাদেশের ফুটবলে স্মরণীয় দিন হয়ে থাকতে পারে। কেননা ম্যাচ জিতলেই নতুন এক ইতিহাস লিখে ফেলবে বসুন্ধরা কিংস। ঘরোয়া ফুটবলে অনেক দল চ্যাম্পিয়ন হলেও কেউ অভিষেক আসরে লিগতো দূরের কথা কোনো টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি।

সেই ইতিহাস লিখতে যাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা কিংস। শেখ রাসেলকে হারাতে পারলে তারাই হবে প্রথম দল যারা অভিষেক আসরে ঐতিহাসিক লিগ জয়ের উৎসব করবে। ইতিহাস অবশ্য আগেই সৃষ্টি করেছে কিংস। গতবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলতে এসেই চ্যাম্পিয়ন। চলতি মৌসুমে প্রথম আসরে ফেডারেশন কাপ রানার্স আপ হলেও ঠিকই স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়। টুর্নামেন্ট ও লিগ অভিষেক আসরে দুটোতে চ্যাম্পিয়ন। যা শুধু বাংলাদেশ নয় উপমহাদেশের ফুটবলে নতুন রেকর্ড গড়বে বসুন্ধরা কিংস। ঢাকা ফুটবল ইতিহাসে আজাদ, ইপিজিপ্রেস (বর্তমানে বিজিপ্রেস), ভিক্টোরিয়া, ওয়ান্ডারার্স, ঢাকা মোহামেডান, ইপিআইডিসি (বর্তমানে টিম বিজেএমসি), ঢাকা আবাহনী, মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংঘ, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হলেও কারও অভিষেক আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড নেই। হ্যাঁ, পেশাদার লিগে খেলতে এসেই শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হয়। কিন্তু প্রথম বিভাগ লিগে তাদের অভিষেক ১৯৭৯ সালে। সুতরাং এই বিরল ইতিহাসটা লিখতে যাচ্ছে শুধুই বসুন্ধরা কিংস।

বসুন্ধরার আরও চার ম্যাচ বাকি আছে। কিংস ছুটছে কিংসের মতো। ২০ ম্যাচে ১৯ জয়ের রেকর্ড যাদের, তারা এক ম্যাচ জিতবেই তা ধরেই নেওয়া যায়। পেশাদার লিগে নতুন এসেই তারা দেশের ফুটবলের ইতিহাস বদলে দিচ্ছে। নতুনত্ব ও চমকের কোনো কিছুই ঘাটতি রাখছে না তারা। মোহামেডান ও আবাহনীতে বিশ্বকাপের ফুটবলার খেলে গেছেন। কিন্তু অভিষেকেই কোস্টারিকার বিশ্বকাপের তারকা কলিনড্রেসকে এনে চমক দেখিয়েছে কিংস। শুরুতে আবার বিদেশি কোচ। আলাদা ভেন্যু এবং বিদেশি ক্লাবকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ঢাকার বাইরে প্রীতিম্যাচে আয়োজন। সব কিছুতেই নতুনত্বের ছোঁয়া। স্প্যানিশ, ইংলিশ, ইউরোপিয়ান লিগের ক্লাবগুলো যে পেশাদারিত্ব মেনে চলে তাই অনুসরণ করছে কিংস। ক্লাব ম্যানেজমেন্টে দেশি ও বিদেশি ফুটবলাররা মুগ্ধ। একটা ব্যাপার লক্ষণীয় যে গত কয়েক বছর ধরে লিগে মানসম্পন্ন বিদেশির দেখা না মিললেও ব্যতিক্রম এনেছে বসুন্ধরা কিংসই। যে কারণে চলতি মৌসুমে দর্শক খরা অনেকটা কেটে গেছে।

কোচিং স্টাফ ও যে মানের ফুটবলার নিয়ে দল গড়েছিল তাতে লিগে হট ফেবারিট ছিল বসুন্ধরা কিংসই। কিন্তু এতটা ছন্দময় ও চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্য প্রদর্শন করবে তা ছিল ধারণার বাইরে। দলের প্রতি ভালোবাসা ও কমিটমেন্ট থাকলে সব ভয়কে জয় করা যায় তার বড় প্রমাণ বসুন্ধরা। তা না হলে ২০ ম্যাচে মাত্র ১ ড্র করে ১৯টি ম্যাচ জিতে কীভাবে? এই রেকর্ড মোহামেডান-আবাহনীর কেনÑভারতে দুই জায়ান্ট ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানেরও নেই। ২০ ম্যাচে ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে। আগামীকাল জিতলেই ভা ারে জমা পড়বে ৬১। যা কেউ সংগ্রহ করতে পারবে না বলেই তিন ম্যাচ আগেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে বসুন্ধরা। তা না হলে অপেক্ষাটা একটু বাড়বে এ যা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর