শনিবার, ২০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

জিতলেই চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জিতলেই চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস

ইতিহাস গড়ার ম্যাচের আগে অনুশীলন সেরে নিচ্ছেন কলিনড্রেস, মার্কোস ও বখতিয়ার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঘরোয়া ফুটবল লিগে মোহামেডান ও আবাহনী তিন বা চার ম্যাচ হাতে রেখে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বেশ কবার। ১৯৮২ সালে সুপার লিগে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে শিরোপা নিশ্চিত করেছিল মোহামেডান। আজ সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা কিংস যদি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে হারাতে পারে তাহলে তারাও তিন ম্যাচ আগে পেশাদার লিগে শিরোপা নিশ্চিত করবে। মোহামেডান, আবাহনী বা দেশের অন্য ক্লাব যা পারেনি বসুন্ধরা কিংসই তা করে দেখিয়ে দেবে। সন্ধ্যায় ম্যাচ জিতলেই শুধু শিরোপা নয়, লিখে ফেলবে নতুন এক ইতিহাস। বসুন্ধরা কিংসই হবে ফুটবলে বাংলাদেশের প্রথম দল যারা অভিষেক আসরেই লিগ জয়ের গৌরব অর্জন করবে। ২১ ম্যাচে কিংসের পয়েন্ট দাঁড়াবে তখন ৬১। এ পয়েন্ট আর কারও পক্ষে ছোঁয়া সম্ভব নয় বলেই পরবর্তী তিন ম্যাচে কলিন ড্রেসরা যদি হেরেও যায় বসুন্ধরা কিংসের শিরোপা অটুট থাকবে।

বাংলাদেশের ফুটবল ঢাকাকেন্দ্রিক। শুরুটা হয় প্রথম বিভাগ লিগ দিয়ে। এরপর নাম বদল করে প্রিমিয়ার লিগ। সর্বশেষ ফিফা ও এএফসির নির্দেশনায় মাঠে গড়িয়েছে পেশাদার লিগ; যা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ নামেই পরিচিত। দেখতে দেখতে তিনবার নাম পরিবর্তন করা লিগের বয়স ৭১ হয়ে গেল। এই এত বছরে অন্যরা যা পারেনি তা দেখানোর অপেক্ষায় রয়েছে বসুন্ধরা কিংস। প্রথম বিভাগ, প্রিমিয়ার ও এখন পেশাদার লিগে অনেক ক্লাবই খেলেছে বা খেলছে। কিন্তু শিরোপার খাতায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ১২টি দল। সংখ্যাটা আন লাকি থারটিনে রূপান্তর করতে যাচ্ছে বসুন্ধরা কিংস। আর এই আন নাকি আবার লাকি হয়ে দেখা দেবে দলটির। কেননা বসুন্ধরার সৌভাগ্য, তারাই প্রথম দল হিসেবে অভিষেক আসরে চ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছে।

আজ যদি শেখ রাসেলকে হারাতে নাও পারে তাহলে বসুন্ধরার বড় কোনো ক্ষতি হবে না। কেননা হাতে বাকি থাকবে আরও তিন ম্যাচ। অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটছে কিংস। যারা ২০ ম্যাচে ১টি ড্র করে ১৯টি জয় পেয়েছে, তারা আর মাত্র ৩ পয়েন্ট পাবে নাÑ তা ভাবাটা অযৌক্তিকই বলা যায়। তা ছাড়া আজ আবার দ্বিতীয় স্থানে থাকা ঢাকা আবাহনী লড়বে সাইফের বিপক্ষে। যদি এই ম্যাচ সাইফ জিতে যায় তাহলে শেখ রাসেলের কাছে হারলেও কিংস চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। তবে বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান দৃঢ়কণ্ঠে বলেছেন, ‘অন্যদের দিকে তাকাতে চাই না। আজ জিতেই ইতিহাস গড়তে চাই।’

প্রতিপক্ষ হিসেবে শেখ রাসেলকে দুর্বল ভাবতে চান না দলের স্প্যানিশ কোচ অস্কার। তার কথা, ‘ওরাও মরিয়া হয়ে লড়বে। তবে আমরা সেরা খেলাটা খেলতে পারলেই জেতা সম্ভব।’ একটা ব্যাপার লক্ষণীয়, শুরুতে সমানতালে খেললেও দ্বিতীয় পর্বে শেখ রাসেলের কেন জানি ছন্দপতন ঘটেছে। এ সুযোগটা কাজে লাগাতে চাইবে কিংস। মৌসুমের শুরুতেই কিংসের রক্ষণভাগ কিছুটা এলোমেলো হয়ে গেলেও ধীরে ধীরে গুছিয়ে নিয়েছে। ড্যানিয়েল কলিন ড্রেস, মার্কোস, বখতিয়ার, মতিন মিয়া ও ইব্রাহিমরা জ্বলে উঠলে কিংসের জয় পাওয়া মুশকিল হবে বলে মনে হয় না। তা ছাড়া জিতলেই শিরোপা। কলিন ড্রেসরা নিশ্চয় সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামবেন।

২০ ম্যাচে ১৯ জয়! ঘরোয়া ফুটবলে এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে কীভাবে বসুন্ধরা কিংস? যেখানে লিগের অভিষেক ম্যাচে আবাহনী বা অন্য দলের যাত্রা হয়েছিল হার দিয়ে। সেখানে নতুন দল হয়ে ক্রীড়াঙ্গনে এক মৌসুমে সাড়া ফেলে দিল কিংস? ইমরুল হাসানের কথা, ‘আমাদের প্রধান শক্তি দলীয় সমন্বয়। খেলোয়াড়রা মাঠে নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন। সত্যি বলতে কি, এতটা ভালো খেলব আমরা তা ভাবতেই পারিনি। আসলে আমরা এত দূর এসেছি বসুন্ধরা গ্রুপের ম্যানেজমেন্টের সহযোগিতায়। নতুন দল হিসেবে কিংস চমক দেখাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায়। পেশাদারিত্ব, ডিসিপ্লিন ও কমিটমেন্ট সবই আমরা মেনে চলছি। কোনো কিছুরই ঘাটতি রাখেনি বসুন্ধরা গ্রুপ। তাই তো অল্প দিনেই দর্শকদের ভালোবাসা পেতে সক্ষম কিংস। আমরা শুধু চ্যাম্পিয়ন নয়, লিগটা শেষ করতে চাই অপরাজিতভাবে। যা দেশের ফুটবলে বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে। এতে শুধু অন্য ক্লাব নয়, দেশের ফুটবল উপকৃত হবে বলে মনে করি।’

সর্বশেষ খবর