বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

হারের বৃত্ত ভাঙার দিন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হারের বৃত্ত ভাঙার দিন

অনুশীলনে তামিম

প্রথম দুই ম্যাচে হেরেই সিরিজ হাত ছাড়া হয়ে গেছে। এখন হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাঁচার উপায় খুঁজছে বাংলাদেশ। আজ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজের শেষ ম্যাচে জয়ের জন্য মরিয়া টাইগাররা। দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের হাতে আরও একটি ম্যাচ আছে। দলে যে ১৫ জন আছে তাদের প্রতি আমি এখনো আস্থাশীল, তাদের পাশেই আছি। আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। সেরা খেলোয়াড়দের নিয়েও ভালো খেলতে না পারলেও কিন্তু হারতে হয়। তাই যে ১৫ জন আছে তাদের নিয়েই ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে, তাদের প্রতি আস্থা রাখতে হবে।’

বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টানা দুই ম্যাচে হার। তামিম ইকবালের নেতৃত্বে দ্বীপরাষ্ট্রে যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজচ্ছেন ক্রিকেটাররা! ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং -তিন বিভাগেই টাইগারদের যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্স। এই হারের বৃত্ত থেকে বের হতে হলে তিন বিভাগেই ভালো করতে হবে। তা না হলে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা নিয়েই দেশে ফিরতে হবে। তামিম বলেন, ‘প্রথম দুই ম্যাচে যেরকম ডিসিপ্লিন আশা করেছিলাম, সে রকম পাইনি। ফিল্ডিংয়ে আমাদের যে স্ট্যান্ডার্ড ধরে রাখার দরকার ছিল, তা আমরা পারিনি। আমরা প্রথম দুই ম্যাচে তিন বিভাগেই কোনো না-কোনো জায়গায় ভুল করেছি। ব্যাটিংয়ে যে রকম শুরু আশা করেছিলাম, সে রকম শুরু আমরা পাইনি। আবার বোলিংও এর জন্য দায়ী। শেষ ম্যাচে কিছু পেতে হলে তিন বিভাগকেই এগিয়ে আসতে হবে।’

মাশরাফির ইনজুরির কারণে শ্রীলঙ্কা সফরে দায়িত্ব পেয়ে মোটেও সুবিধা করতে পারছেন না তামিম। ব্যাটিংয়ে তিনি নিজেও জ্বলে উঠতে পারছেন না। অন্যদের কাছ থেকেও পাচ্ছেন না সহযোগিতা। তবে সাকিব, সাইফুদ্দিন, লিটনদের অভাব অনুভূত হচ্ছে বেশ ভালোভাবেই। শেষ ম্যাচে হারলে আত্মবিশ্বাসেও চোট লাগতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে দলীয় সামর্থ্য নিয়েও। তাই নিজেদের আত্মতৃপ্তির জন্যই জিততে চায় বাংলাদেশ। তামিম বলেন, ‘আমরা এই সিরিজ হেরে গেছি। ৩-০ আর ২-১ এর মধ্যে পার্থক্য হবে যে, আমরা অন্তত নিজেদেরকে প্রমাণ করতে পারব আমরা প্রথম দুই ম্যাচে যেভাবে চিন্তা করেছি সেভাবে খেলতে পারিনি। কিন্তু শেষ ম্যাচটি নিজেদের আত্মতৃপ্তির জন্য জেতা উচিত।  দেশে সবাই প্রত্যাশা করছে অন্তত একটা জয় নিয়ে  ফেরার।’

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালো করতে না পারলেও ব্যাটিং নিয়ে কোনো প্রশ্ন ছিল না। কিন্তু শ্রীলঙ্কায় সেখানেও হতাশা। আগের ম্যাচে একপ্রান্ত আগলে রেখে মুশফিকুর রহিম একাই খেললেন অপরাজিত ৯৮ রানের ইনিংস। কিন্তু অন্যপ্রান্ত থেকে সেভাবে সমর্থনই পেলেন না। দলীয় বড় সংগ্রহ পেতে হলে একক পারফরম্যান্স দিয়ে হয় না! তামিম বলেন, ‘প্রথম ম্যাচে ভালো উইকেট ছিল। একটা দল তিনশর উপরে রান করেছিল। সত্যি কথা হচ্ছে, আমরা যতই ছোট মাঠে খেলি না কেন, যত ভালো উইকেটেই  খেলি না কেন ব্যাটিং ভালো করতে না পারলে ভালো করা যাবে না। আমরা টিম হিসেবে খেলতে পারছি না।’

২০১৮ সালে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন তামিম নিজে। তার গড় ছিল ৮৫-র উপরে। সেখানে এই বছর রান খরায় ভুগছেন ড্যাসিং ওপেনার। উইকেটে সেট হয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারছেন না। যেন নিজের উপরই বেশ বিরক্ত তামিম, ‘প্রতিদিনই মনে হয় আমি ভালো করছি করব। তারপরও কোনো কারণে আউট হয়ে যাচ্ছি।’

প্রথম দুই ম্যাচেই ব্যাটিং বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যর্থ। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডাররাই বড় ইনিংস খেলে টাইগারদের বিপাকে ফেলে দিচ্ছে। মুস্তাফিজ-মিরাজরাও প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে পারছেন না। তবে আগের ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এ ম্যাচে মাঠে নামছেন তামিমরা। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক বলেন, ‘প্রথম দুই ম্যাচেই আমাদের সুযোগ এসেছিল এবং আমরা চাইলেই ওইসব মুহূর্তগুলোকে কাজে লাগিয়ে ভালো কিছু করতে পারতাম। কিন্তু আমরা নিজেদের ভুলেই পারিনি। সেসব ভুলে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে’।

সিরিজ হারের পর অনেকে তামিমের অধিনায়কত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু তামিম মনে করেন, ‘একটা দুইটা বা তিনটা ম্যাচ দিয়ে কারও অধিনায়কত্ব বিচার করা ঠিক না।’

সব ব্যর্থতা ভুলে আজ নতুন করে শুরু করতে চাচ্ছে বাংলাদেশ। ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। আজ কি তবে ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার দিন?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর