শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

কিংস ঘিরেই যত আশা

বসুন্ধরা কিংস যেখানে খেলেছে সেখানে তাদের হাজার হাজার সমর্থকের দেখা মিলেছে। হাতে পতাকা ও ব্যানার। ফিরিয়ে এনেছে ফুটবলে জৌলুসের দিন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কিংস ঘিরেই যত আশা

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ঢাকা আবাহনী ও মোহামেডানের নাম স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশেষ করে ফুটবলে আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তার পেছনে দুই দলের অবদান কখনো ভোলবার নয়। কত তারকা দুই দল থেকে সৃষ্টি হয়েছে তা হিসাব মেলানো যাবে না। দুই দলের ম্যাচ মানেই ছিল উৎসব আর উত্তেজনা। গ্যালারি জুড়েই থাকত সমথর্ক। দলীয় পতাকা ও ব্যানার নিয়ে খেলোয়াড়দের উৎসাহ জোগাত সমর্থকরা। ফুটবলে আবাহনী ও মোহামেডান অনেক রেকর্ড তৈরি করে রেখেছে। ফুটবল লিগে ১৯৭৭ সালে প্রথম অপরাজিত চ্যাম্পিয়নের রেকর্ড আবাহনীরই। ১৯৭৮ সালে অবশ্য মোহামেডানও অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। লিগে প্রথম হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের রেকর্ড আবাহনীরই। মোহামেডান আবার তা ভেঙে ফেলে অপরাজিত হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়ে। ফেডারেশন কাপে টানা ৪ বার চ্যাম্পিয়নের রেকর্ড তাদেরই। বিদেশের মাটিতেও শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব রয়েছে দুই দলের। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে মোহামেডানের সাফল্য চোখে পড়ার মতো। তিনবার এশিয়ান ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে চূড়ান্তপর্বে খেলেছে। একবার এশিয়ার সাত নম্বর স্থান দখল করে। আবাহনীর সেই দিক দিয়ে ম্লান হলেও এবার এএফসি কাপে পরবর্তী রাউন্ডে খেলার সুযোগে পেয়েছে। ফুটবলে অনেক নতুন দল এসেছে। কিন্তু আবাহনী ও মোহামেডানের জনপ্রিয়তা ম্লান করতে পারেনি। ব্রাদার্স ইউনিয়ন শুরুতে জ্বলে উঠলেও বেশি দূর যেতে পারেনি। শেখ জামাল ধানমন্ডি ও শেখ রাসেল পেশাদার লিগে শিরোপা ও অন্য টুর্নামেন্ট জিতলেও গ্যালারির চেহারা পাল্টাতে পারেনি। সেদিক দিয়ে বসুন্ধরা কিংস সত্যিই ব্যতিক্রম। বলা যায় আবাহনী ও মোহামেডানকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠতে পারে কীভাবে? উত্তরটা সহজ বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে যা কেউ পারেনি। তা করে দেখিয়ে দিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। অভিষেক আসরে তারা লিগ ও স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ফেডারেশন কাপে রানার্স আপ। এই ইতিহাস বাংলাদেশ নয় উপ-মহাদেশে প্রথম বলা যায়। নতুন দল হিসেবে তাদের যে রাজকীয় অভিষেক হয়েছে। ক্রীড়ামোদীদের আশা আবাহনী-মোহামেডানের পর দেশের ফুটবলের হাল ধরবে কিংসই। শুরুতে তার প্রমাণও মিলেছে। পেশাদার লিগে গ্যালারিতে দর্শকই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বসুন্ধরা কিংসই এনেছে তার পরিবর্তন। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, নিজ ভেন্যু নীলফামারী, গোপালগঞ্জ, সিলেট, ময়মনসিংহ কিংবা নোয়াখালী যেখানে বসুন্ধরা কিংস খেলেছে সেখানে তাদের হাজার হাজার সমর্থকের দেখা মিলেছে। হাতে পতাকা ও ব্যানার। ফিরিয়ে এনেছে ফুটবলে জৌলুসের দিন। দেশের ফুটবল উন্নয়নেও কর্মসূচি তারা হাতে নিয়েছে। আবাহনীর শক্তি অটুট থাকলেও মোহামেডান যেন হারিয়ে যাচ্ছে। দেশের নতুন দল হিসেবে কিংস যে চমক দেখিয়েছে তা ধরে রাখতে পারলে তাদের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠবে। আবাহনী ও মোহামেডান ছিল ফুটবলে প্রাণ। এখন নতুন দল হিসেবে বসুন্ধরাও সেই পথে হাঁটছে। কিংসকে ঘিরেই এখন যত আশা। সামনে এএফসি কাপে খেলবে কিংস। ফুটবলপ্রেমীদের প্রত্যাশা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের সুনাম বয়ে আনবে তারা।

সর্বশেষ খবর