মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

কোচিংয়ে সেরাদের সেরা

কোচিংয়ে সেরাদের সেরা

খেলোয়াড়দের স্কিল, ফিটনেস, অভিজ্ঞতা, পারফর্ম করার সক্ষমতা থাকলেই যে কোনো দল সাফল্য পাবে এমন কথা বলা কঠিন! একজন ক্রিকেটার কিংবা একটি দল কতটা ভালো করবে তা নির্ভর করে কোচের পরিকল্পনা প্রণয়নের ওপর! সে জন্যেই দেখা যায়, অনেক তারকাসমৃদ্ধ দলও সাফল্যের জন্য  হা-হুতাশ করে আবার মাঝারি মানের দল নিয়েও কিছু কিছু দল দেখায় ক্যারিশমা। দলের সাফল্য কিংবা ব্যর্থতার পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে কোচ! অন্য যেকোনো ক্রীড়া ইভেন্টের চেয়ে ক্রিকেটে কোচের ভূমিকা অনেক বেশি। ক্রিকেটের সেরা ১০  কোচ নিয়েই এই আলোচনা। আজ ছাপা হলো জন বুকানন, গ্যারি কারস্টেন, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, জন রাইট ও ডেভ হোয়াটমোরকে নিয়ে। লিখেছেন মেজবাহ্-উল-হক

জন বুকানন

সাফল্যের বিচারে সফল কোচের তালিকা করলে সবার ওপরে থাকবে অস্ট্রেলিয়ার জন বুকাননের নাম। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া দল কুইন্সল্যান্ড বুলসের কোচের দায়িত্বে ৫ বছর সাফল্য দেখানোর পর ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দলের দায়িত্ব নেন। তার তত্ত্বাবধানেই টিম অস্ট্রেলিয়া ২০০৩ ও ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ জেতে। ২০০৪ সালে ভারত সফর এবং ২০০৬ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাজিমাত করে দেন তিনি। এরপর বুকানন আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সেও বেশ কিছুদিন সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০-১১ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজের জন্য বুকাননকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয় ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড। এরপর মে ২০১১ থেকে জুলাই ২০১৩ পর্যন্ত বুকাননকে বোর্ডের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেয় নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। এই অসি তারকা কোচ যখন যেখানে দায়িত্ব পেয়েছেন সেখানেই দেখিয়েছেন তার ক্যারিশমা। 

ডেভ হোয়াটমোর

ক্রিকেটার হিসেবে ক্যারিয়ারটা খুবই সংক্ষিপ্ত ছিল অস্ট্রেলিয়ার ডেভ হোয়াটমোরের। মাত্র ১টি ওয়ানডে ও ৭টি টেস্ট খেলেছেন। তবে কোচ হিসেবে দারুণ সফল। ১৯৯৬ সালে তার কোচিংয়েই প্রথমবারের বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তোলে শ্রীলঙ্কা। ২০০৩ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো টেস্টে জয় পায়। তার কোচিংয়েই ২০১২ সালে এশিয়া কাপের শিরোপা জেতে পাকিস্তান।

এরপর আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সেরও কোচ ছিলেন তিনি।

গ্যারি কারস্টেন

দক্ষিণ আফ্রিকা দলের তারকা ক্রিকেটার হিসেবেই গ্যারি কারস্টেন গোটা বিশ্বে পরিচিত। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ওয়ানডেতে ১৮৮ রানের ইনিংসটি এখনো সেরা (প্রোটিয়াদের মধ্যে)। কোচ হিসেবেও সেরা এই কারস্টেন। তার হাত ধরেই ২০১১ সালে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা জেতে ভারত। ২০০৮ সালে দায়িত্ব নিয়েই অগোছালো ভারত দুর্দান্ত এক দলে পরিণত করেন। ভারতীয় ক্রিকেটের যেন নবজন্ম হয় কারস্টেনের হাতেই! এই প্রোটিয়া কোচের ছায়াতেই তো ‘অধিনায়ক’ মহেন্দ্র সিং ধোনির উত্থান! ২০১১ সালে ভারতের দায়িত্ব ছাড়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কোচের দায়িত্ব ২০১৩ সাল পর্যন্ত। 

জন রাইট

ক্রিকেটার হিসেবে জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়ার পর পরই কোচিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেন নিউজিল্যান্ডের তারকা জন রাইট। কেন্ট কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাফল্যের সঙ্গে।

এরপর ২০০০ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের দায়িত্ব নেন। তার অধীনে ২০০৩ সালে বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে ভারত। তার কোচিংয়ের ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক এক টেস্ট সিরিজে জেতে ভারত। বিশেষ করে, কলকাতা টেস্টের জন্য সিরিজ অন্য মাত্রা পেয়েছিল। ফলোঅনে পড়েও ভিভিএস লক্ষণের ২৮১ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসে ভর করে জয় তুলে নিয়েছিল ভারত।

এরপর রাইট সাফল্যের সঙ্গে নিউজিল্যান্ড জাতীয় দল ও আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের দায়িত্ব পালন করেন।

অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার

ক্রিকেটাতিহাসে সেরা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একজন ছিলেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যান অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। অনেক দিন তিনি আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর অবস্থানে ছিলেন। কোচ হিসেবেও দারুণ সফল এই জিম্বাবুইয়ান। ২০০৭ সালের মে মাসে ইংল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর ২০০৯ সালে ইংলিশ দলের হেড কোচের দায়িত্ব পেয়ে যান তিনি। তার নেতৃত্বেই ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জেতে ইংল্যান্ড। অ্যান্ডির আমলেই তিন তিনবার মর্যাদার লড়াই অ্যাশেজ সিরিজের শিরোপা জেতে ইংল্যান্ড। ২০০৯, ২০১১ এবং ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডকে অ্যাশেজের শিরোপা এনে দেওয়ায় বিরল সম্মানে ভূষিত হন। তাকে দেওয়া হয় ‘অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ অ্যাম্পায়ার’!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর