মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

মোহামেডানই সাহস জোগাচ্ছে আবাহনীকে!

এএফসি ইন্টার জোনাল ফাইনাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মোহামেডানই সাহস জোগাচ্ছে আবাহনীকে!

ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে ঢাকা আবাহনী প্রথমবারের মতো এএফসি কাপের পরবর্তী রাউন্ডে উঠেছে। আগামীকালই ইন্টার জোনাল ফাইনাল ম্যাচ খেলবে তারা। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আবাহনীর প্রতিপক্ষ উত্তর কোরিয়ার এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভ। ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপে এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে উত্তর কোরিয়া কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। তবে ফুটবলে দেশটির আগের সেই শক্তি নেই। এশিয়ার অন্যান্য দেশ এগুলেও উত্তর কোরিয়া বেশ পিছিয়ে পড়েছে। তবু এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভকে হালকা করে দেখার উপায় নেই। স্থানীয় লিগে তারা ১৮ বার চ্যাম্পিয়ন। এএফসি বা পূর্ব এশিয়ান ক্লাব কাপ ফুটবলে বেশ কবার চূড়ান্ত পর্বে খেলেছে টোয়েন্টি ফাইভ। এবার এএফসি কাপেও তাদের পারফরম্যান্স চোখে পড়ার মতো। সিঙ্গাপুরের হোম ইউনাইটেডকে ৯-১ গোলে হারানোর রেকর্ড রয়েছে তাদের। স্ট্রাইকার কিম ইউ সং দুর্দান্ত খেলেন। ঢাকা আসার পর দলটির শক্তি বা পারফরম্যান্স সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। কেননা ইংরেজি ভালোভাবে কেউ বলতে পারেননি। তবে পূর্ণ শক্তি নিয়েই ঢাকা উড়ে এসেছে। আবহাওয়া ও পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে আগে-ভাগে ঢাকা এসে অনুশীলনও করছে। বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে উত্তর কোরিয়ার ফুটবল ততটা পরিচিত নয়।

অথচ এই এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের সঙ্গেই মধুর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। উত্তর কোরিয়া যখন এশিয়া ফুটবলে পরাশক্তি তখনই এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভকে হারায় ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান। ১৯৮৮ সালে মালয়েশিয়ার পাহাংয়ে অনুষ্ঠিত এশিয়ান ক্লাব কাপ চূড়ান্তপর্বে এই দলকে ১-০ গোলে পরাজিত করে মোহামেডান। গোলটি করেন দলের নাইজেরিয়ান ফুটবলার এমেকা। কাতার চ্যাম্পিয়ন আল সাদের সঙ্গে ড্রও করেছিল সাদা-কালোরা। চূড়ান্তপর্বে ওঠার পথে মোহামেডান ২-১ গোলে হারায় ইরান চ্যাম্পিয়ন পিরুজিকে। ১৯৮৮ সালে এশিয়ান ক্লাব ফুটবলে মোহামেডানের অবস্থান ছিল সাতে। তিনবার চূড়ান্তপর্বে খেলার রেকর্ড রয়েছে সাদা-কালোদের। ১৯৯১ সালে ঢাকায় গ্রুপপর্বে মোহামেডান পুনরায় মুখোমুখি হয় এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের সঙ্গে। ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র ছিল। কোচ হেজাজি মোহামেডানকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। যা ফুটবলপ্রেমীদের কাছে সুখের স্মৃতি হয়ে আছে। আবাহনী এই প্রথম উত্তর কোরিয়ার কোনো দলের সঙ্গে মোকাবিলা করছে। এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের সম্পর্কে কিছুই জানা নেই। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ যে এ ব্যাপারে তারা নিশ্চিত। ঘরের মাঠ হলেও স্বাভাবিকভাবে আবাহনীর ভিতর একটা ভয় কাজ করছে। তবে এক্ষেত্রে তাদের অনুপ্রেরণা চির প্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানই। তারা এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভকে হারিয়েছে তারাও পারবে এই আত্মবিশ্বাসটাই হতে পারে বড় হাতিয়ার। আবাহনী যখন মাঠে নামবে তখন দুশ্চিন্তাও কাজ করবে। কারণ মেইন ডিফেন্ডার তপু বর্মন ইনজুরি হয়ে মাঠের বাইরে। আতিকুর রহমানও পুরোপুরি ফিট নয়। মাসি সাইঘানিও চলে গেছে। শক্তি বাড়াতে মিসরের ঈসা আলেনদিনের নাম রেজিস্ট্রেশন করলেও এএফসি সাফ জানিয়ে দিয়েছে ঢাকার প্রথম লেগে ঈসা মাঠে নামতে পারবেন না। গত বছর এএফসি বাছাইপর্বের প্লে অফ ম্যাচে তিনি খেলেন মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসের হয়ে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে ঈসা লাল কার্ড দেখেন। ব্যাপারটি আবাহনী জানত না। ঈসাও ব্যাপারটা গোপন রেখেছিলেন। বড় একটা বিপদে পড়ে গেছে আবাহনী। তবু আবাহনীর জেতা সম্ভব। যদি মাঠে তারা আসল রূপটা প্রদর্শন করতে পারে।

সর্বশেষ খবর