বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফাইনালের পথে আবাহনী

আসিফ ইকবাল

ফাইনালের পথে আবাহনী

মিডিয়া বক্সের ঠিক নিচে উত্তর কোরিয়ার পাঁচজন দর্শক পতাকা হাতে দাঁড়িয়েছিলেন খেলা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। রেফারির বিরতির বাঁশি বাজার পরও বসেননি এক মুহূর্তের জন্য। সমর্থন জুগিয়েছেন অহর্নিশ। কিন্তু তাদের সমর্থন এপ্রিল টোয়েন্টিফাইভ ক্লাবটিকে উদ্দীপ্ত করতে পারেনি। অথচ ম্যাচ দেখতে আসা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হাজারো দর্শকের কারও হাতে ছিল না আবাহনীর পতাকা। শুধু ফুটবলের পরিচিত মুখ আতা ভাই কোরিয়ান দর্শকদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গোটা ম্যাচে লাল-সবুজ পতাকা নাড়িয়ে উৎসাহ জুগিয়েছেন জীবন, সোহেল রানা, বেলফোর্ট, সানডেদের। ঘরের মাঠ, পরিচিত পরিবেশ এবং সর্বোপরি দর্শক সমর্থন মিলিয়ে সেরা ফুটবলটাই খেলেছে মারিও লোমেসের দল আবাহনী। এএফসি ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে উত্তর কোরিয়ার  ১৭ বারের লিগ চ্যাম্পিয়ন এপ্রিল টোয়েন্টিফাইভ দলের বিপক্ষে অলআউট ফুটবল খেলে ৪-৩ গোলের দুরন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আকাশী-হলুদ শিবির। নান্দনিক এই জয়ে আবাহনী এক পা প্রায় দিয়েই ফেলেছে এএফসি ইন্টার জোনালের ফাইনালে। আবাহনীর অসাধারণ জয়ের ম্যাচে চার গোলের দুটি করেছেন সানডে চিজোবা এবং একটি করে সোহেল রানা ও নাবিব নেওয়াজ জীবন। তবে নিয়ম মেনে ফিরতি ম্যাচ খেলতে ২৮ আগষ্ট পিয়ংইয়ং যাবে আবাহনী এবং সেখানে ড্র করলেই সেপ্টেম্বরে এএফসি কাপের ফাইনাল খেলবে ওয়েস্ট জোনের ফাইনাল দলের বিপক্ষে। 

এপ্রিল টোয়েন্টিফাইভের বিপক্ষে ১৯৮৮ সালে কুয়লালামপুরে অষ্টম এএফসি কাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে এমেকার ১-০ গোলে জিতেছিল মোহামেডান। ১৯৯১ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এপ্রিল টোয়েন্টিফাইভ ক্লাবের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল মোহামেডান। সাদাকালো শিবিরের পারফরম্যান্সে উজ্জীবিত হয়ে আবাহনী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গতিশীল ফুটবল খেলে কোরিয়ান ক্লাবটির রক্ষণভাগ ভেঙেচুড়ে ফেলে। আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ধানমন্ডির দলটি প্রথম গোলের দেখা পায় ৩৩ মিনিটে।  জীবনের ব্যাকহিলে প্রায় ২০ মিটার দূর থেকে বাঁ পায়ের ভলিতে ব্যবধান ১-০ করেন সোহেল রানা। ৩৫ মিনিটে দুর্দান্ত গোলে সমতা আনে এপ্রিল টোয়েন্টিফাইভ। ডি বক্সের মাথা থেকে চো জয় হিউক ডান পায়ের তীব্র ভলিতে ব্যবধান ১-১ করেন। সমতা আসার দুই মিনিট পর এগিয়ে যায় দেশের ফুটবলের সবচেয়ে সফল দল আবাহনী। ৩৭ মিনিটে এপ্রিল টোয়েন্টিফাইভের রক্ষণভাগের ভুলের সুযোগ কাজে লাগান জীবন ঠা-া মাথায় গোল করে। ২-১ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় আবাহনী।

দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই গোলের জন্য গতিশীল ফুটবল খেলতে থাকে। ৪৮ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে ব্যবধান ২-২ করে কোরিয়ান ক্লাবটি। ৫৬ মিনিটে ফের আবাহনীকে এগিয়ে নেন নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার সানডে চিজোবা। মধ্যমাঠ থেকে বল ধরে ইনসাইড-আউট সাইড ডজে ছোট বক্সে ঠা-া মাথায় কোরিয়ান গোলরক্ষক অন তায়ে সংকে পরাস্ত করেন (৩-২)। ৬৬ মিনিটে দারুণ এক গোল করেন সানডে। এবারও নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার ঠা-া মাথায় দারুণ প্লেসিং শটে ব্যবধান ৪-২ করেন। ৮১ মিনিটে আবাহনীর গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলের ভুলে ব্যবধান ৩-৪ করেন এপ্রিল টোয়েন্টিফাইভ ক্লাবের চো সং হিউক। দারুণ ফুটবল খেলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় আবাহনী। গতকাল প্রথম লেগে দুর্দান্ত ফুটবল খেলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আবাহনী।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর