সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

স্বপ্নের বিশ্বকাপ মিশনে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

স্বপ্নের বিশ্বকাপ মিশনে বাংলাদেশ

১০ সেপ্টেম্বর ‘ই’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতি হলেও নিরাপত্তার কারণে হোম ভেন্যু হিসেবে আফগানরা তাজিকিস্তানকেই বেছে নিয়েছে।

এক সময় ক্রিকেটে বিশ্বকাপ খেলাটা ছিল স্বপ্ন। ১৯৭৯ সাল থেকেই আইসিসি ট্রফি (যাকে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব বলা হয়) খেলছে বাংলাদেশ। বার বার ব্যর্থতায় স্বপ্নের বিশ্বকাপে খেলা সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েই বিশ্বকাপে সুযোগ পায় বাংলাদেশ। ১৯৯৯ সালে স্বপ্নের আসরে অভিষেক হয় লাল-সবুজের। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন নিয়মিত খেলছে। শুধু তাই নয়, ব্যাট-বলে বিশ্বের নজরও কাড়ছে।

ক্রিকেটে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কিন্তু ফুটবলে এখনো স্বপ্ন দেখাটাই স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। যে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দুর্বল টুর্নামেন্ট সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিতেই খেলতে পারে না। সেখানে দুনিয়া কাঁপানো বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার আশাটা পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়। তবু বিশ্বকাপের বাইরে নয় বাংলাদেশ। স্বপ্নের মিশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিত্ব করছে হয় প্রাক বা বাছাইপর্বে। ফিফার সদস্য পদ পাওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ বাছাইপর্বে অংশ নিচ্ছে। এই মিশনে বাংলাদেশ কেন ফিফার সদস্যভুক্ত প্রতিটি দেশই বাছাইপর্ব খেলছে। এক সময় নিয়ম ছিল স্বাগতিক দেশ ও চ্যাম্পিয়ন দল পরবর্তী বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে। এখন শুধু স্বাগতিকরাই শুধু সরাসরি চ‚ড়ান্তপর্বে খেলে।

ফুটবলে এক সময়ে যারা বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে ছিল তারাও বিশ্বকাপে খেলছে। অথচ পরিকল্পনাহীন ও ফুটবলে নানা পলিটিক্সের কারণে বাংলাদেশের কাছে এখন সাফ জেতাটাই স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। তারপরও বিশ্বকাপ মিশনে বাংলাদেশ থাকছে ও থাকবে। ২০২২ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের চূড়ান্তপর্ব। কোন ৩১টি দেশ এই স্বপ্নের পর্ব খেলবে তা নির্ধারণ হবে বাছাইপর্বের মিশন থেকেই। কত খেলোয়াড় খেলেছেন। কত কোচ বদল হয়েছে তবু বাছাইপর্বের গন্ডিটা পার হতে পারেনি।

এশিয়ান পর্বে বাছাইয়ে অংশ নিতে গতকাল ঢাকা ছেড়েছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। ১০ সেপ্টেম্বর ‘ই’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতি হলেও নিরাপত্তার কারণে হোম ভেন্যু হিসেবে আফগানরা তাজিকিস্তানকেই বেছে নিয়েছে। ৯ দিন আগে ঢাকার ছাড়ার কারণ হচ্ছে তাজিকিস্তানের দুশানভের পরিবেশ ও আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। মূল লড়াইয়ের আগে তাজিক স্থানীয় দুটি দলের বিপক্ষে ৩ ও ৫ সেপ্টেম্বর প্রীতিম্যাচ খেলার কথা।

ঢাকা ছাড়ার আগে কোচ জেমি ডে ও অধিনায়ক জামাল ভ‚ঁইয়া প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। নিশ্চয় তারা জেনেশুনেই এ কথা বলেছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষটা যখন আফগানিস্তান তখনতো ভয়ের অনেক কিছুই আছে।

এক সময় আফগানিস্তান পাত্তা পেত না বাংলাদেশের কাছে। এখন ঠিক তার উল্টোটা। শেষ মোকাবিলায় আফগানরা ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে মামুনুলদের। সুতরাং শুরুতে লজ্জার হার হলে পরবর্তীতে আত্মবিশ্বাসেও চিড় ধরবে। আর যদি জয়ে মিশন শুরু হয় পুরো মিশনেই চেহারা বদলে যাবে জামালদের।

স্বপ্নের মিশনে বাংলাদেশ। তবু ক্রীড়ামোদীরা বড় স্বপ্ন দেখছেন না। বাছাইপর্ব পেরিয়ে জামালদের পরবর্তী রাউন্ডে খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ। দুই পর্বে বাংলাদেশ অন্তত দুটো জয় পেলেই স্বস্তি। গ্রুপে আরও আছে কাতার, ভারত ও ওমান। চোখ মূলত আফগানিস্তান ও ভারতের ম্যাচকে ঘিরেই। ফুটবলের দুর্দিনে তাদেরই বিরুদ্ধে যদি জয় আসে তাহলে কম কীসের।

সর্বশেষ খবর