বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

জয়ের জন্য মরিয়া টাইগাররা

আসিফ ইকবাল, চট্টগ্রাম থেকে

জয়ের জন্য মরিয়া টাইগাররা

মুমিনুল হকের দিকে তাকিয়ে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আর মুমিনুল তাকিয়ে তার ব্যাটের দিকে। এই মাঠেই শেষ ২ টেস্টে ৩ সেঞ্চুরি রয়েছে তার। আফগানদের বিরুদ্ধেও কি থাকবে মুমিনুলের ব্যাটের রানের ফল্গুধারা?

রশিদ খান, কাইস আহমেদ, মোহাম্মদ নবি ও জহির খান -আফগানিস্তানের চার স্পিনার। রশিদ এই মুহূর্তে বিশ্বসেরা লেগ স্পিনার। নবি পরিচিত মুখ আন্তর্জাতিক ঘরানায়। কাইস ও জহির একেবারেই অপরিচিত। দল হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে কাইস-জহিরের মতোই নবীন আফগানিস্তানও। মাত্র ২ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আফগানদের বিপক্ষে জয় পেতে মরিয়া টাইগাররা।

নতুন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো আফগানদের বিপক্ষে জয় পেতে আঁটোসাঁটো পরিকল্পনা এঁকেছেন। বাংলাদেশের সামনে প্রধান বাঁধা প্রতিপক্ষের চার আফগান স্পিনার। তারপরও ঘূর্ণিতেই আফগান-বধের ছক কষেছেন সাকিবরা। কাগজে-কলমের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করতে হলে বিধ্বংসী বোলিং করতে হবে স্পিনারদের। জোরদার ব্যাটিং করতে হবে ব্যাটসম্যানদের। জয়ের জন্য মুখিয়ে থাকা টাইগার অধিনায়ক মনে করেন, আফগানিস্তানের দুই ইনিংসে ২০ উইকেট তুলে নেওয়াই প্রধান কাজ।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এর আগে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। আফ্রিকার দেশটির বিপক্ষে ১৮৬ রানের জয়টি ২০১৪ সালে। ওই টেষ্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস ও মুুমিনুল হক। বিশ্রামে থাকায় ‘লোকাল হিরো’ তামিম এ ম্যাচে খেলছেন না। সুযোগ পাননি ইমরুল। তবে মুমিনুল এই ম্যাচেও অন্যতম ভরসা। তিন সেঞ্চুরিকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশকে জয় উপহার দিয়েছিলেন লেগ স্পিনার জুবায়ের লিখন, সাকিব ও তাইজুল। হারিয়ে যাওয়া লেগ স্পিনার জুবায়ের প্রথম ইনিংসে ৯৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ভিত গড়ে দিয়েছিলেন জয়ের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬৪ রানের জয়ের ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন মুমিনুল। কিন্তু জয়ের নায়ক দুই অফ স্পিনার নাঈম হাসান ও তাইজুল। প্রথম ইনিংসে নাইম ৬১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে গুঁড়িয়ে দেন ক্যারিবীয়দের। দ্বিতীয় ইনিংসে বিধ্বংসী বোলিং করেন তাইজুল ৩৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে। এই মাঠে প্রতিটি ম্যাচেই মূল ভূমিকায় ছিলেন স্পিনাররা। আফগানদের ধসিয়ে দিতে স্পিন উইকেটই বানানো হয়েছে এবারও। উইকেট নিয়ে যদিও টাইগার অধিনায়ক তেমন কিছুই বলেননি। সাকিবের লক্ষ্য, প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট শিকার। টাইগার দলপতি বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায়, চট্টগ্রামের উইকেট থেকে আমরা যেমন প্রত্যাশা করি, তেমনটা পাই না। এজন্য উইকেট নিয়ে ভাবছি না। উইকেট যেমনই হোক, চেষ্টা করব মানিয়ে নিতে। আমাদের চেষ্টা থাকবে ২০ উইকেট নেওয়ার। ব্যাটসম্যানদের টার্গেট থাকবে যত বেশি রান করা।’

টাইগারদের গতবছর শেষ হয়েছিল কারিবীয়দের হারিয়ে। চলতি বছর শুরু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারে। এ বছর এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলেছে মাত্র তিনটি। চার নম্বর টেস্ট খেলবে কাল।  সাদা বলে খেলেছে তিন জাতির ওয়ানডে টুর্নামেন্ট, বিশ্বকাপ ক্রিকেট ও শ্রীলঙ্কা সিরিজ। তিন জাতির টুর্নামেন্টে শিরোপা জেতা ছাড়া সাফল্য নেই বললেই চলে। অথচ বিশ^কাপে দারুণ কিছুর স্বপ্ন ছিল। শুরুটাও ছিল স্বপ্নের মতো। কিন্তু পারফরমারের অভাবে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূরণ করে দেশে ফিরে। স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনায় প্রলেপ দিতে উড়ে যায় দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায়। সেখানে আরও বেশি ব্যর্থতা।

ব্যর্থতার খোলস ছেড়ে সাফল্যেও পথে হাঁটতে মরিয়া সাকিব, ‘আমাদের চেষ্টা থাকবে জয়ের। গত কয়েকদিন আমরা ভালো সময় পার করিনি। এই ম্যাচটি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যদি ভালোভাবে জিততে পারি, তাহলে অনেক কিছুই আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।’ টাইগার অধিনায়ক জয়ের জন্য এতটাই মরিয়া, সেখানে ব্যবধানটা মুখ্য নয়, ‘আমার কাছে জয়ই গুরুত্বপূর্ণ। ১ রানে কিংবা ১০০ রানে, অথবা ১ উইকেট, কিংবা ১০ উইকেটে। জয়, জয়ই।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর